এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৬ জুলাই : চলতি মাসের ৩ জুলাই, তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) সরকারের ক্যাবিনেট মন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম(Firhad Hakim) অমুসলিমদের সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করেছিলেন । তিনি অমুসলিমদের “দুর্ভাগা” হিসাবে চিহ্নিত করে এবং তাদের ইসলামে ধর্মান্তরিত করার জন্য খোলাখুলিভাবে ওকালতি করে ‘দাওয়াত-এ- ইসলাম‘ এর ডাক দিয়ে উল্লেখযোগ্য বিতর্কের জন্ম দেন । কলকাতার ধন ধান্য অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত ‘সর্বভারতীয় কোরান প্রতিযোগিতার’ সময় এই বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন ফিরহাদ হাকিম । তারই প্রতিক্রিয়ায় এবং ফিরহাদ হাকিমকে বরখাস্তের দাবি তুললো বিজেপি । আজ শুক্রবার বিধানসভার সামনে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপির বিধায়করা হাতে সংবিধানের একটা করে কপি নিয়ে তুমুল বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন । ‘ফিরহাদ হাকিম মুর্দাবাদ‘, ‘হিন্দু বিরোধী সরকার আর নেই দরকার‘,’মমতা ব্যানার্জির জিহাদি সরকার আর নেই দরকার‘, ‘হিন্দু বিরোধী ফিরহাদ হাকিম মুর্দাবাদ‘,’হিন্দু তুমি এক হও‘ প্রভৃতি শ্লোগান ওঠে । পাশাপাশি শুভেন্দু সহ বিজেপি বিধায়কদের জামায় লেখা ছিল, ‘গর্ব করে বল আমি হিন্দু‘ স্লোগান ।
শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’ওনারাই কেবল সৌভাগ্যবান, আর বাকিরা নাকি দুর্ভাগা, এই কারনেই আজ আমরা প্রতিবাদ করছি । উনি অল ইন্ডিয়া কোরান প্রতিযোগিতায় গিয়েছিলেন মন্ত্রী এবং মেয়র হিসাবে৷ উনি সংবিধানকে সামনে রেখে শপথ নিয়েছেন । তার কোন অধিকার নেই হিন্দু, শিখ, খ্রিস্টান, জৈন, বৌদ্ধদের অপমান করার ।’ তিনি বলেন,’আমাদের দাবি অবিলম্বে ফিরহাদ হাকিমকে বরখাস্ত করতে হবে । তা নাহলে আমরা বাংলা জুড়ে আন্দোলন করবো । ফিরহাদ হাকিম বরখাস্ত না হওয়া পর্যন্ত বিধানসভায় বয়কট চলবে । বাইরে আন্দোলন চলবে । ইসলাম ছাড়া বাকি ধর্ম সম্প্রদায়ের অপমান করা ফিরহাদ হাকিমের কোন অধিকার নেই ।’
প্রসঙ্গত, কলকাতার ধন ধান্য অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত ‘সর্বভারতীয় কোরান প্রতিযোগিতার‘ সময় ফিরহাদ হাতেম বলেছিলেন, ‘যারা দুর্ভাগ্য নিয়ে জন্মেছে, যারা ইসলাম নিয়ে জন্মায়নি, তাদেরও দাওয়াত-এ ইসলাম, অর্থাৎ ইসলামের দাওয়াত দিয়ে তাদের মধ্যে ঈমান নিয়ে আসলে এটা আল্লাহতালাকে খুশি করা হবে। ইসলামকে তাদের মধ্যে ছড়াতে হবে । শক্তিশালী মনে হয়, যখন সবাই এখানে টুপি পরে বসে আছে, হাজার হাজার মানুষ বসে আছে, তখন মনে হয় ইসলামের ঐক্য একটা জায়গায় আছে । যেখানে আমাদের কেউ কোনদিন দাবাতে(দমাতে) পারবেনা ।’ তার এই মন্তব্যের পর তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় বিজেপি এবং হিন্দুদের বিভিন্ন মহল থেকে । যদিও এই বিষয়ের ফিরহাদ হাকিমকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং নিজেকে ধর্মনিরপেক্ষ বলে প্রমাণিত করার চেষ্টা করেন ।।