এইদিন ওয়েবডেস্ক,জলপাইগুড়ি,২৫ জুলাই : জলপাইগুড়িতে কংগ্রেস কর্মীকে গাছে বেঁধে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে । বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি থানার হঠাৎ কলোনি এলাকায় । পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম মানিক রায়(৪৫) । বাবাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে মারতে দেখে নদী পেড়িয়ে থানায় গিয়ে খবর দেয় মানিকবাবুর নাবালক ছেলে । পুলিশও আসে । পুলিশ তাকে উদ্ধার করে জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় । কিন্তু আজ বৃহস্পতিবার ভোর রাত তিনটে নাগাদ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তাঁর । এই ঘটনায় মোট ১১ জনের বিরুদ্ধে ময়নাগুড়ি থানায় এফ আই আর দায়ের করেন
নিহতের স্ত্রী । অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ৫ জনকে গ্রেফতার করে । ধৃতরা প্রত্যেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী বলে জানা গেছে ।
স্থানীয় সূত্রে খবর,বছর পাঁচেক আগে মানিক রায়ের বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে । তারপর তিনি পরিবারকে নিয়ে শিলিগুড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন । পাশাপাশি বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে তিনি মামলাও করেন । সেই মামলা তুলে নেওয়ার জন্য মানিক রায়ের উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ । এরপর তাঁর দলের উদ্যোগে সদ্য গত রবিবার পরিবারকে সাথে নিয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন মানিকবাবু । নিহতের স্ত্রীর অভিযোগ, বুধবার রাতে একই এলাকার বাসিন্দা বাপ্পা রায়, অমল দাস মিলে ৩০-৩২ জন তৃণমূল কংগ্রেসের একটা কর্মী লাঠিসোঁটা ও ধারাল অস্ত্র নিয়ে তাদের বাড়িতে চড়াও । তারা তাঁর স্বামীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে গাছে বেঁধে পিটিয়ে ও কুপিয়ে খুন করে ।
জানা গেছে,বাবাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় ওই দলের পিছু নেয় মানিক রায়ের স্কুল পড়ুয়া ছেলে । ওই দুষ্কৃতীদলটি তার বাবাকে একটা গাছে বেঁধে নির্মমভাবে পিটিয়ে ও কুপিয়ে মারছে দেখে স্থির থাকতে পারেনি ওই কিশোর । সেখান থেকে সে থানার উদ্দেশ্যে ছুটতে শুরু করে । নদী পেরিয়ে প্রায় ৩০ মিনিট দৌড়ে সে থানায় যায় ৷ খবর পেয়ে পুলিশ এসে মানিকবাবুকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায় । কিন্তু অবস্থার অবনতি হলে তাকে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় । কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি । স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, তৃণমূলের লোকজন দীর্ঘদিন ধরে মানিক রায়কে দলবদলের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল । কিন্তু তিনি দলবদল করতে রাজি হননি । যদিও তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি যে এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনো যোগ নেই । গ্রাম্য বিবাদের জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে ।।