এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঢাকা,২৪ জুলাই : কোটা বিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক হিংসায় উত্তপ্ত বাংলাদেশ । এযাবৎ মৃত্যু হয়েছে শতাধিক মানুষের । টানা কয়েক দিন ধরে বন্ধ স্কুল-কলেজ-অফিস কাছারি -মাদ্রাসাগুলি । দেশ জুড়ে ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় শেখ হাসিনা সরকার । মঙ্গলবার রাত্রি ৯ টার পর মাত্র কয়েক মিনিটের জন্য ইন্টারনেট চালু করা হয় । আজ বুধবার বিকেল ৫ টার পর ইন্টারনেট পরিষেবা ফের চালু করা হয়েছে । তবে ইন্টারনেটের গতি খুব ধীর এবং তাও মিলছে শুধু ব্রডব্রান্ডের ক্ষেত্রে । মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ রাখা হয়েছে বলে খবর ।
এদিকে একটু একটু করে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার চেষ্টা করছে ভারতের ওই প্রতিবেশী ইসলামি রাষ্ট্রটি । টানা তিনদিন সরকারি ছুটির পর সীমিত পরিসরে খুলেছে অফিস- আদালত। এই তিনদিনে ৩ ঘন্টা করে কারফিউ শিথিল থাকলেও আজ বুধবার (২৪ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত টানা ৭ ঘন্টা শিথিল করা হয়েছে কারফিউ। এতে সরকারি ও বেসরকারি অফিস খোলায় অফিসগামী ও অফিস ফেরত যাত্রীদের চলাচল বেড়েছে । সপ্তাহের শেষ কর্মদিসব আগামীকাল বৃহস্পতিবারও বেলা ১১ টা থেকে বিকেল ৩ টা পর্যন্ত চালু থাকবে সরকারি বেসরকারি অফিস। অন্যদিকে কারফিউ শিথিল থাকবে সকাল ১০টা থেকে ৫ টা পর্যন্ত।
বিগত কয়েকদিনের সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলনে বাংলাদেশে প্রাণ গিয়েছে শতাধিক মানুষের । সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী এযাবৎ মৃত্যু হয়েছে ১৯৭ জনের । যদিও মৃতের সংখ্যা আরও বেশি বলে মনে করছেন বাংলাদেশিরা । অসমর্থিত সূত্রে খবর, নিহতদের মধ্যে দু’জনের মত হিন্দু পড়ুয়া । বাকি মৃতদের সিংহভাগই কট্টর ইসলামি সংগঠন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক ছাত্রছাত্রী বলে দাবি ওই সূত্রের । আবু সাইদ নামে জামাতের এক নেতাও পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন । তার ফেসবুক পেজে নজর রাখলে দেখা যায় যে প্রতিটি পোস্টেই কট্টর ইসলামি প্রচার এবং ভারত ও হিন্দু বিরোধী মতামতে ছয়লাপ ।
এছাড়া জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে রাত্রের দিকে ‘আল্লা আকবর’ সহ বিভিন্ন ধরনের ইসলামিক স্লোগান শোনা গেছে । পাশাপাশি শোনা গেছে ‘ভারতের দালালেরা হুশিয়ার সাবধান’, মোদীর দালালরা হুশিয়ার সাবধান’ প্রভৃতি স্লোগানও ।
সূত্রটি জানায়,কোটা বিরোধী আন্দোলনে নামে গোটা বাংলাদেশ জুড়ে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি সৃষ্টির নেপথ্যে ছিল মূলত জামায়াতে ইসলামীর এবং আর এক কট্টর ইসলামি রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ ন্যাশানাল পার্টি (বিএনপি) । তারা নরসিংদিতে সবচেয়ে বেশি অরাজকতার সৃষ্টি করেছিল । নরসিংদির কারাগার ভেঙ্গে সন্ত্রাসবাদী ও কুখ্যাত আসামী মিলে আট শতাধিক আসামিকে অস্ত্রসহ পালাতে সাহায্য করে । তারপরেই দেশ জুড়ে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেয় অপারেশনে নামে বাংলাদেশের সেনা ও পুলিশ । পুলিশ মূলত সেই সমস্ত পলাতক আসামি ও জামাতের সদস্যদের বেছে বেছে হত্যা করে বলে জানিয়েছে সূত্রটি ।
এদিকে যাদের বিরুদ্ধে হিংসা ছড়ানোর সবচেয়ে বেশি অভিযোগ উঠছে, সেই বাংলাদেশ জামাত-ই-ইসলামির ফেসবুক পেজে আজ বড়সড় একটা পোস্ট করে “অবিলম্বে কার্ফু প্রত্যাহার এবং ছাত্রসমাজের দাবি মেনে নিয়ে শান্তি ও স্বস্তির পরিবেশ ফিরিয়ে আনার আহ্বান” জানানো হয় । দলটি ‘ প্রধানমন্ত্রী সহিংসতার দায় অন্যদের উপর চাপিয়ে চরম মিথ্যাচার করছেন’ বলেও অভিযোগ করেছে৷ পাশাপাশি জামাতের অভিযোগ যে শেখ হাসিনার দলের ছাত্র সংগঠন “ছাত্রলীগ” কে হিংসা ছড়ানোয় অভিযুক্ত করেছে ।।