এইদিন ওয়েবডেস্ক,মুম্বাই,২০ জুলাই : ইদানিং খাবারে থুতু ছেটানো,ফলমূলে প্রস্রাব করে বিক্রি করা,এমনকি একটি হিন্দু নামের সাইনবোর্ড লাগিয়ে খাবারে গোমাংসের ব্যবহারের ঘটনা একের পর এক সামনে আসছে । শ্রাবণ মাসে মহাদেবের জলাভিষেক যাত্রার জন্য ভক্তদের শুচিতা বজায় রাখতে রাজ্যের প্রতিটি খাবার ও ফলের দোকানের ব্যবসায়ীদের নাম বোর্ডে লিখে দোকানের সামনে টাঙানোর নির্দেশ দিয়েছে উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকার । সরকারের এই সিদ্ধান্ত হিন্দুদের সিংহভাগ সমর্থন করলেও কতিপয় তথাকথিত সেকুলার হিন্দু, কংগ্রেস,বামপন্থী ও সমাজবাদী পার্টির মত কিছু দল এর বিরোধিতা করছে । এদিকে বলিউডের এক সেকুলার অভিনেতা সোনু সুদ খাবারে থুতু ছেটানো বা ফলমূলে প্রস্রাব করে বিক্রি করার সমর্থনে এক অদ্ভুত যুক্তি দিয়েছেন । তিনি টুইট করেছেন,’আমাদের রামজি শবরীর উচ্ছিষ্ট কুল খেয়েছিলেন তাহলে আমি কেন খেতে পারব না ? হিংসাকে অহিংসা দিয়ে পরাজিত করা সম্ভব, আমার ভাইরা । শুধু মানবিকতা বজায় রাখতে হবে । জয় শ্রীরাম ।’
এদিকে এই পোস্টের পর ট্রোলড হচ্ছেন অভিনেতা সোনু সুদ । সুধীর মিশ্র কমেন্ট সেকশনে লিখেছেন, ‘থুতু লাগানো রুটি সোনু সুদকে পার্সেল করে পাঠিয়ে দেওয়া হোক,যাতে ভ্রাতৃত্ব বজায় থাকে ।’ কেদার নামে এক ব্যবহারকারী দিল্লির একটি রেস্তোরাঁয় রুটি করার সময় থুতু ছেটানোর ভিডিও পোস্ট করে অভিনেতাকে কটাক্ষ করেছেন,’সোনু সুদ বলছেন যে তিনি হিন্দু মুসলিম ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখতে আবদুলের থুথু এবং প্রস্রাব খেতে প্রস্তুত। স্বচ্ছন্দে খাও ভাই! আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু তিনি জানেন না যে শবরী তার পরিচয় গোপন করে সেই নোংরা বেরিগুলি ভগবান শ্রী রামকে দেননি। তিনি ঘৃণা থেকে বেরিগুলিকে উচ্ছিষ্ট করেননি, তবে প্রভু যাতে খারাপ এবং টক বেরিগুলি না খান সেজন্য তার সামনেই ইচ্ছা করে তিনি এটা করেছিলেন।’
উত্তরপ্রদেশের কানওয়ার যাত্রার রুটে পড়া খাবারের দোকান এবং খাবারের গাড়িতে দোকান মালিকদের নামে পোস্টার লাগানোর জন্য যোগী সরকারের আদেশের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে অভিনেতা সোনু সুদ এক্স এ আরও লিখেছেন,’প্রতিটি দোকানে একটি মাত্র নাম ফলক থাকা উচিত এবং তা হল মানবতা’। তার এই পোস্টে বিজেপি সাংসদ তথা অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউতও এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন । কঙ্গনা লিখেছেন,’পরের বার আপনি জানেন যে সোনু জি ঈশ্বর এবং ধর্ম সম্পর্কে তাঁর ব্যক্তিগত অনুসন্ধানের উপর ভিত্তি করে নিজের রামায়ণ পরিচালনা করবেন। বাহ, বলিউডের আরেকটি রামায়ণ।’
বর্ষীয়ান সাংবাদিক প্রদীপ ভান্ডারি উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ড সরকারের কানওয়ার যাত্রা সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করার জন্য ছদ্ম সেক্যুলারদের নিন্দা করেছেন। তিনি বলেছেন এটি অবৈধ এবং প্রতারণা। স্থানীয়ভাবে হিন্দু-মুসলমান উভয়েই একমত। লোকেরা প্রকাশ্যে নাম জাল করছিল এবং নন-ভেজ ও ভেজ খাবার একসাথে বিক্রি করছিল। তিনি বলেন, মক্কাতেও মুসলিম ও অমুসলিমদের জন্য অনেক নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হয়। তাহলে শুধু হিন্দুদের জন্য কেন হৈ চৈ হচ্ছে ?
বিতর্কটি কয়েকদিন আগে শুরু হয়েছিল যখন মুজাফফরনগর ইউপি পুলিশ জেলার কানওয়ার যাত্রা রুটে অবস্থিত হোটেল, ধাবা এবং অন্যান্য খাবার বিক্রির দোকানগুলিকে তাদের মালিক এবং কর্মচারীদের জানিয়েছিল যে ভক্তদের মধ্যে বিভ্রান্তি এড়াতে নাম লিখতে হবে প্রতিটি দোকানের সামনে একটা বোর্ডে । ইউপি পুলিশের এই নির্দেশের পর ইউপির মুজাফফরনগরে দুই দশক পর সেলিম ভোজনালয়ে পরিণত হল সঙ্গম ধাবায় । আনমোল ফ্রুট আইসক্রিম তার মালিকের নাম লিখেছেন মোহাম্মদ কমর আলম। শীতল ধাবার নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে আবদুল ধাবা। মুজাফফরনগরে চায় লাভার মুজফফরনগরের “ওয়াকিল আহমেদ টি স্টল” হিসাবে রাখা হয়েছে। নীলম ধাবা হয়ে গেছে আরশাদ ধাবা।।