প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২০ জুলাই : পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন সম্বৃদ্ধ ঐতিহ্যশালী জায়গায় ঢুকে ঐতিহ্যহানি !আর তার জেরেই এখন ঘোর বিপাকে পূর্ব বর্ধমানের কালনা পৌরসভার চেয়ারম্যান আনন্দ দত্ত।তাঁর পাশে না দাঁড়িয়ে তৃণমূল কংগ্রেস দল তাঁকে শো-কজ করেছে।আবার শুক্রবারই তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের কালনা সাব সার্কেলের সিনিয়র কনসারভেশন অ্যাসিন্ট্যান্ট অমিত মালো।তার পরিপ্রেক্ষিতে “প্রয়োজনীয় আইনী পদক্ষপ নেওয়া হচ্ছে বলে এসডিপিও (কালনা) রাকেশ কুমার চৌধুরি জানিয়ে দিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে ২১ শে জুলাইয়ের সভার আগে ’উভয় সংকটে’ পড়ে যেতে হওয়ায় কার্যতই যেন আনন্দশূন্য আনন্দ দত্ত।
বিতর্ক আনন্দ দত্তকে সবসময় যেন পিছু তাড়া করে বেড়ায়। একের পর এক বিতর্কে জড়িয়ে পড়া কালনার পুরপ্রধান আনন্দ দত্ত গত ১৬ জুলাই কার্যত সব সীমা লঙ্ঘন করে ফেলেন। ওই দিন কালনা রাজবাড়িতে থাকা পুরাতত্ত্ব বিভাগের নিরাপত্তারক্ষীর নিষেধ উপেক্ষা জলের জারভর্তি টোটো নিয়ে ভিতরে ঢুকে পড়েন আনন্দ দত্ত।এক নিরাপত্তারক্ষী তাঁর পথ আটকালে আনন্দ দত্ত তাকে ধাক্কা করে ঠেলে ফেলে দেয়।অপর আর এক নিরাপত্তা রক্ষীকে তিনিড় মারতে যান। এমনকি রাজবাড়িতে কর্তব্যরত পুরাতত্ত্ব বিভাগের আধিকারিক,কর্মী ও নিরাপত্তারক্ষীদের তিনি অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করার পাশাপাশি মেরে ফেলার হুমকিও দেন বলে অভিযোগ উঠেছে ।চেয়ারম্যান আনন্দ দত্তর এই গোটা কীর্তি কলাপের একের পর এক ভিডিও ভাইরাল হতেই নিন্দার ঝড় ওঠে। ভাইরাল সেই ভিডিও উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেয় পুরাতত্ত্ব বিভাগের কর্মীরা। তার পরেই চেয়ারম্যান আনন্দ দত্ত মুখে কুলুপ আঁটেন।
রাজবাড়িতে থাকা পুরাতত্ত্ব বিভাগের আধিকারিক অমিত মালো বলেন,’পুরপ্রধানেরর সামনেই ওনার লোকেরা আমাকে হুমকি দেয়। অফিসের বাইরে বেরোলে আমাকে মেরে ফেলা হবে, আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমাকে জেলে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে।এমনকি আমাকে সাসপেন্ড করে দেওয়া হবে,আমার চাকরিও চলে যাবে,এইসব হুমকিও আমাকে দেওয়া হয় ।’ এহেন ঘটনা বিষয়ে তদন্তের জন্যে শুক্রবার পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের কলকাতা শাখার ডেপুটি সুপারিনটেন্ডিং আর্কিওলজিস্টের তদন্তে আসার কথা থাকলোও তিনি আসেননি।তবে তার এক প্রতিনিধি হয়ে এক আধিকারিক এদিন আসেন ।তার পরেই উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পুরপ্রধান আনন্দ দত্তর বিরুদ্ধে কালনা থানায় এফআইআর দায়ের করেন পুরাতত্ত্ব আধিকারিক অমিত মালো।
এদিকে চেয়ারম্যানের এমন দাদাগিরির ঘটনা সামনে চলে আসার পর তৃণমূল নেতৃত্বও যথেষ্ট ক্ষুব্ধ ।এমন ঘটনা কেন ঘটলো তার কারণ জানতে চেয়ে পুরপ্রধানকে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন। এসব নিয়ে আনন্দ দত্ত অবশ্য মূখে কুলুপ এঁটেছেন। সাংবাদিকরা ফোন করলেও তিনি ফোন ধরছেন না। তবে পুলিশ,প্রশাসন ও তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব পুরপ্রধান আনন্দ দত্তকে উচিৎ শিক্ষা দিক,এমনটাই চাইছেন কালনার আপামোর মানুষজন।।