এইদিন ওয়েবডেস্ক,মঙ্গলকোট(পূর্ব বর্ধমান),১৮ জুলাই : পূর্ব বর্ধমান জেলায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে অনিয়মের একের পর এক অভিযোগ উঠছে । পূর্ব বর্ধমানের গলসীর মনোহর সুজাপুরে সম্প্রতি একটি পিচ রাস্তা তৈরি করা হয় । কিন্তু এক মাথায় রাস্তাটির বেহাল অবস্থা হয়ে যায় । বুধবার পরিদর্শনে গিয়ে রাস্তার বেহাল দশা দেখে বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ কৃর্তি আজাদ দু’হাত ভরে পাথরকুচি তুলে কিছু ইঞ্জিনিয়ারের হাতে ধরিয়ে দেন এবং কিছু পাথর কুচি তার প্যান্টের দু’পকেটে ভরে দেন । তার জের মিটতে না মিটিতেই পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট ব্লকের কুলশুনা গ্রামে মাত্র এক মাস আগে নির্মিত হাইড্রেনের দুটি গার্ডওয়াল হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল । এমনকি হাউড্রেনের ঢালাইয়ে ফাটল পর্যন্ত দেখা । ড্রেন ও গার্ডওয়াল নির্মান করা হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস শাসিত পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে । গ্রামবাসীদের অভিযোগ নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে নির্মানের কাজ করা হয়েছিল । যেকারণে বৃহস্পতিবার দুপুরে মঙ্গলকোটের কুলশুনা গ্রামে ড্রেন পরিদর্শনে গিয়ে গ্রামবাসীদের ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পড়তে হল জেলা পরিষদের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে । এদিকে শাসকদলের বিরুদ্ধে নতুন করে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় তোলপাড় চলছে এলাকায় ।
মঙ্গলকোটের ভাল্যগ্রাম পঞ্চায়েতের কুলশুনা গ্রামের পশ্চিমপাড়ার দক্ষিন মাঠে একটা কাঁদর বয়ে গেছে । কাঁদরের পাশে একটি ঢাকনা দেওয়া চওড়া হাইড্রেন তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছিল পূর্ব বর্ধমানের জেলা পরিষদ । প্রায় ৫০০ মিটার দীর্ঘ হাইড্রেন নির্মানের জন্য ৪৬ লক্ষ ৫৩ হাজার ৯৬২ টাকা বরাদ্দ করা হয় ৷ কাঁদরের জল যাতে ঢুকতে না পারে সেজন্য ড্রেনের দুটি অংশের মাঝে দুটি গার্ডওয়াল তৈরি করা হয় । কিন্তু ড্রেন তৈরি হওয়ার একমাসের মধ্যেই জলের চাপে গার্ডওয়াল দুটি ভেঙে পড়েছে । স্থানীয় বাসিন্দা লাল্টু শেখ, কাজল শেখদের অভিযোগ,নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার জন্যই অল্প জলের চাপও সহ্য করতে পারেনি ড্রেনের দেওয়াল । পাশাপাশি তাদের অভিযোগ, ওই ড্রেনে কোনো রড ব্যবহার করা হয়নি এবং এতটাই নিম্নমানের সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে যে হাতে করে চাপ দিলেই ঢালাই ছেড়ে যাচ্ছে ।
জানা গেছে,কুলশুনা গ্রামের হাইড্রেনের দুটি গার্ডওয়াল ভেঙে পড়ার খবর পেয়ে আজ পরিদর্শনে গিয়েছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার রাহুল মুখোপাধ্যায় । ক্ষিপ্ত গ্রামবাসীরা তাকে ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে । শেষে তিনি ঠিকাদারকে দিয়ে দ্রুত ড্রেনের ভাঙা অংশ নতুন করে তৈরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে গ্রামবাসীরা শান্ত হয় । রাহুল মুখোপাধ্যায় স্বীকার করেন যে নির্মান কাজে ‘টেকনিক্যাল ত্রুটি’ হয়েছে ।।