এইদিন স্পোর্টস নিউজ,১৬ জুলাই : ইউরো -২০২৪ এর ফাইনালে জিতেছে স্পেন । আর স্প্যানিশদের পাশাপাশি এই জয় উদযাপন করতে দেখা গেল ফিলিস্তিনি ও আরব দেশগুলির নাগরিকদের । কারন ইসরায়েল-হামাস চলমান যুদ্ধে গাজার প্রতি সমর্থন করেছিল স্প্যানিশ সরকার । তারই প্রতিদান স্বরূপ রাতারাতি স্প্যানিশ ফুটবল দলের সমর্থক হয়ে উঠেছে ইসলামি রাষ্ট্রগুলি ও ফিলিস্তিনিরা ।
গত ১৪ জুলাই, রবিবার ইউরো ফাইনাল ম্যাচ দেখার জন্য পূর্ব জেরুজালেমের ক্যাফেতে ভিড় জমায় ফিলিস্তিনিরা। জার্মানির রাজধানী বার্লিনে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ২-১ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করেছে স্পেন। ফলে চতুর্থবারের মতো ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়ন হতে পেরেছে দেশটি। এদিকে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ফিলিস্তিনিদের প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানিয়েছে স্পেন। স্প্যানিশ প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ গাজাবাসীর প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন। গাজায় ইসরায়েলি অভিযানের নিন্দাও করেছেন ।
এদিকে রবিবার ইউরো-২০২৪ কাপ ফাইনাল ম্যাচে টানা ৯০ মিনিট টিভির স্ক্রীনে চোখ রেখে বসেছিল গাজাবাসী । ম্যাচে স্পেন জিততেই উল্লাস করে তারা । দীর্ঘ ৯ মাসের বেশি সময় ধরে ইসরায়েল-হামাসের চলমান এই যুদ্ধে গাজার প্রতি সংহতি প্রদর্শনের জন্য তারা স্পেনকে ধন্যবাদ জানিয়েছে।
ফিলিস্তিনের ফুটবল অনুরাগী দুই ভাই ওমর এবং মোহাম্মদ ঘাইয়াদ। তারা আল জাজিরাকে বলেছেন, স্পেনের ফিলিস্তিনপন্থী অবস্থানের কারণে স্প্যানিশ জাতীয় দলের প্রতি আমাদের সমর্থন রয়েছে। কাতারি এই টিভি চ্যানেলকে মোহাম্মদ বলেছেন, স্প্যানিশ ভক্তরা ফিলিস্তিনকে ভালোবাসে এবং গাজার ব্যাপারে তাদের সরকারের অবস্থান সম্মানজনক। সেজন্য আমি তাদের সমর্থন করেছি। পাশাপাশি গাজার প্রতি যুক্তরাজ্যের অবস্থানকে লজ্জাজনক বলে উল্লেখ করেছেন এই দুই ভাই।
তবে কেবল ফিলিস্তিনিরাই নয়, গোটা আরব বিশ্ব ইউরো ফাইনালে স্পেনের পক্ষেই ছিল। এছাড়া ফিলিস্তিনপন্থী অ্যাক্টিভিস্টরাও বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য স্প্যানিশ ফুটবল টিমকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এদিকে রবিবার রাতে স্পেনের বিভিন্ন শহরে জাতীয় দলের জয় উদযাপনের সময় স্প্যানিশ ফুটবল ভক্তদেরও ফিলিস্তিনি পতাকা হাতে উল্লাস করতে দেখা গেছে। সে সময় তারা ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ বলে স্লোগান দিচ্ছিল।
স্পেন চলতি বছরের মে মাসে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। একই সময়ে আয়ারল্যান্ড এবং নরওয়েও এই পদক্ষেপ নিয়েছে। স্প্যানিশ প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বলেছিলেন, এই সিদ্ধান্ত শান্তি প্রক্রিয়ার জন্য অপরিহার্য ছিল।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে নাশকতা চালায় ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হামাস । তারা নির্মমভাবে অন্তত ১২০০ মানুষকে হত্যা করে । সন্ত্রাসী হামাসের নৃশংসতা ও বর্বরতা ছাপিয়ে যায় কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ইসলামি স্টেটকেও । তারপর থেকে গাজা উপত্যকায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। চলমান এই যুদ্ধে কমপক্ষে ৩৮ হাজার ৬৬৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে দাবি করে হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য বিভাগ ।।