ভারতের প্রতিটি রাজ্যের প্রতিটি জেলাতেই অগনিত মন্দির আছে । তাদের মধ্যে কিছু কিছু মন্দিরে রীতিনীতির মধ্যে বিশেষত্ত্ব আছে । কিন্তু আপনারা কি কখনও শুনেছেন যে ভারতের এমন একটা মন্দির আছে যেখান থেকে দেবীমূর্তি চুরি করার প্রথা আছে ?হ্যাঁ, রাজস্থানের হিন্দৌলি জেলায় এমন একটি মন্দির আছে যেখানে মূর্তি চুরি করার রীতি আছে । আর চোররা হল অবিবাহিত যুবক । কিন্তু তারা কেন মূর্তি চুরি করে তা শুনলে আপনারা তাজ্জব হয়ে যাবেন । গ্রামবাসীদের বিশ্বাস যে অবিবাহিত যুবকরা যদি মন্দির থেকে দেবী পার্বতীর মূর্তি চুরি করতে পারে তাহলে তাদের দ্রুত বিয়ে হয়ে যায় । আর মহাশিবরাত্রির ঠিক আগের রাতে এই কাজ করে বিবাহে ইচ্ছুক যুবকরা ।
মহাশিবরাত্রির দিন মন্দিরে বহু ভক্ত শিব পূজা করতে মন্দিরে আসে । কিন্তু ভক্তরা এসে দেখে যে ভগবান শিবের মূর্তি থাকলেও উধাও হয়ে গেছে দেবী পার্বতীর মূর্তি । গ্রামের প্রাচীন রীতি অনুযায়ী,রাজস্থানের হিন্দৌলি জেলার রঘুনাথঘাটের শিব মন্দিরে মহাশিবরাত্রিতে মহাদেবকে একা ফেলে রাখা হয় । কারন বিবাহন্মুখ যুবক তার আগের রাতেই দেবী পার্বতীর মূর্তি চুরি করে নিয়ে যায় । এরপর বিয়ে হলে স্ত্রীকে নিয়ে মন্দিরে আসে ওই যুবক এবং মূর্তিটি ফিরিয়ে দিয়ে যায় । এরপর যার বিয়ে হচ্ছে না সে আবার প্রতিমা চুরি করে নিয়ে যায় ।
গত ফেব্রুয়ারী মাসের ১৮ তারিখে দেবী পার্বতীর মূর্তিটি মন্দিরে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল এবং মহাশিবরাত্রির আগে, ২৩ ফেব্রুয়ারি দেবী পার্বতীর মূর্তি ফের চুরি হয়েছিল। এই মন্দিরে ভগবান শঙ্কর আবার একা হয়ে পড়েছিলেন। মন্দিরের পুরোহিত পরশুরাম পরাশর জানান, এক বছর পর পার্বতীজির মূর্তি ফিরে এসেছে। তবে মন্দির থেকে কে বা কারা প্রতিমা চুরি করে তা জানতে পারলেও থানায় কোনো অভিযোগ করা হয় না। এ পর্যন্ত ১২ জনের বেশি বিয়ে করেছেন এইভাবে । পার্বতীজির মূর্তি চুরি করতে শুধু হিন্দৌলি নয়, আশেপাশের জেলা থেকেও মানুষ আসে। এক ভক্ত জানান, প্রতিমার বয়স ৬০ বছরের বেশি। প্রতিমার আকার প্রায় এক ফুট, যা সহজেই ব্যাগে রাখা যায়। মন্দিরে মূর্তি চুরি হওয়ার পর খালি জায়গায় দেবীর আসন রাখা হয় । কে মূর্তি চুরি করেছে তা জানলেও গ্রামবাসীরা তা কখনো প্রকাশ করে না ।।