নির্ধারিত দুই নম্বর প্লাটফর্মের পরিবর্তে
ট্রেনটা গিয়ে ঢুকছিল তিন নম্বরে।
তাই প্রশ্নটা আসাই স্বাভাবিক,
আজ তি’নে কেন?
দুই নম্বরে একটা লাশ পড়ে আছে তাই
তিন নম্বর, জানেন না?
না সত্যিই জানা ছিলনা;
জানা ছিল না এক জীবন্ত মানুষ যে কর্মের কারণে, বা অন্য কোন প্রয়োজনে হয়তো ঘর থেকে বেরিয়ে ছিল
তার আর ঘরে ফেরা হলো না।
সে প্লাটফর্মের অনতি দূরে পড়ে রইলো কাটা লাশ হয়ে।
গলার কাছে একটা মাংসপিণ্ড হঠাৎ ব্যথা হয়ে চাপ দিতে লাগল,
কথা বলতে পারছিলাম না।
সাথী কে চিৎকার করে শুধু বলেছিলাম সাবধানে বাড়ি ফিরো, ফোন কোরো।
এবার আমার বাড়ি ফেরার পালা।
একটু এগোতেই দুজন বয়স্ক মানুষ হা হা করে উঠলেন।
ওদিকে যেও না, পথ ঘুরে যাও।
আমি বললাম
কেন ওদিকে আমার রিক্সা থাকে যে।
ওরা বলল, ও পথে গিয়ে কাজ নেই।
ওখানে যে পড়ে আছে।
নতুন কেনা রুমালে চোখের জল চেপে ক্ষীণ স্বরে বললাম, ছেলে না মেয়ে?
উত্তর এলো ট্রেনে কাটা লাশ,
ওটা ছেলে লাশ বা মেয়ে লাশ হয়না।
সারা পৃথিবীটা কেমন ঝাপসা হয়ে উঠলো হঠাৎ!
জীবন্ত মানুষ কাটা লাশ হয়ে লিংগ হারায় কেনো?
নাকি আমরা ভীতু সমাজের জীব,
তাই বলতে ভয় পাই।
ঝাপসা পৃথিবী একটু পরিষ্কার হলো,
কারন চোখের জল তখন গাল বেয়ে ঝরে গ্যাছে।
অন্য পথে বাড়ী ফিরলাম।
জানা হলোনা সে পুরুষ না নারী?
ট্রেনে কাটা মানুষ কাটা লাশ হয়ে যায় যে।।