এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,০৯ জুলাই : সম্প্রতি বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) পরীক্ষাসহ ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের ঘটনা ঘটেছিল । এই কেলেঙ্কারিতে পিএসসির চেয়ারম্যানের প্রাক্তন গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী জীবন ও তার ছেলে তথা উপজেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়ামকে গ্রেপ্তার করেছে বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গ্রেফতার হওয়ার পর সাংবাদিকরা আবেদ আলীকে প্রশ্ন করেছিলেন প্রশ্নফাঁস করে তিনি মোট কত টাকা কামিয়েছেন এবং সেই টাকা কিভাবে খরচ করেছেন ? যদিও মোট কত টাকা বাপ-ব্যাটার পকেটে ঢুকেছে তার পরিমান না জানালেও খরচের বিষয়ে সৈয়দ আবেদ আলী একটা অদ্ভুত যুক্তি দিয়েছেন । তার কথায়, ‘প্রশ্নফাঁসে যত টাকা কামাই করেছি, সব খরচ করেছি আল্লাহর নামে ।’ আসলে, বাংলাদেশে ইসলামি ধর্মোন্মাদের সংখ্যা দ্রুত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে ৷ সেই কারনে ধর্মোন্মাদদের সহানুভূতি কুড়িয়ে দুর্নীতির মামলা থেকে রেহাই পেতে সৈয়দ আবেদ আলী তাদের ‘আল্লাহ’কে পরিকল্পিতভাবে এই মামলায় টেনে আনছেন বলে মনে করছেন সেদেশের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ ।
প্রসঙ্গত,রবিবার রাতে বাংলাদেশের একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের প্রতিবেদন প্রকাশের পর অভিযানে নামে সিআইডি।অভিযুক্তরা হল পিএসসির কর্মকর্তা হলেন উপপরিচালক মোহম্মদ আবু জাফর, উপপরিচালক জাহাঙ্গির আলম, সহকারী পরিচালক এসএম আলমগীর কবির, সহকারী পরিচালক নিখিল চন্দ্র রায়, চেয়ারম্যানের প্রাক্তন গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী জীবন ও অফিস সহায়ক খলিলুর রহমান। এই চক্রটি বিপিএসসির কোনো নিয়োগ পরীক্ষা হলেই প্রশ্ন ফাঁস করে দেদার টাকা কামাতে শুরু করে বলে তদন্তে জানতে পেরেছে বাংলাদেশ পুলিশ । আর এভাবেই কোটি কোটি টাকার সম্পদ করেছে অভিযুক্তরা ।
মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার বাসিন্দা আবেদ আলী একজন গাড়ি চালক হলেও তার কোটি কোটি টাকার সম্পদের তথ্য পুলিশের সামনে এসেছে। প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্য সামনে আসার পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় তার বিপুল সম্পদের তথ্য তুলে ধরছেন নেটিজেনরা ।আবেদ আলীর ছেলে ছাত্রলীগ নেতা সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম পড়েছেন বিদেশে । দেশের একটি ব্যয়বহুল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে আবেদ আলীর । ঢাকার ভেতর তার দুটি বহুতল ভবন, মাদারীপুরে বিলাশবহুল বাড়ি রয়েছে বলে জানা গেছে । ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম দামি দামি গাড়িতে চলাফেরা করে ।
সর্বশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের জন্য প্রচার চালিয়েছিলেন আবেদ আলী। আবেদ আলী সমাজের বিত্তবান ও প্রভাবশালীদের সঙ্গে নিয়মিত চলাফেরা করতেন। প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের সঙ্গেও উঠবস ছিল তার । ডাসার উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম দুঃস্থ মানুষকে সাহায্য করে সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করেন নিজেকে একজন সমাজসেবী হিসাবে তুলে ধরার চেষ্টা চালাত । এছাড়া সৈয়দ আবেদ আলী তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে রাজনৈতিক, সামাজিক কর্মকাণ্ড, মসজিদ নির্মাণ সহ বিভিন্ন পোস্ট করতেন ৷।