এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়াদিল্লি,০৮ জুলাই : উত্তর ২৪ পরগণা জেলার সন্দেশখালি কান্ডে সিবিআই তদন্ত বন্ধ করতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্টে চরম ধাক্কা খেল মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস সরকার । কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে সন্দেশখালীতে নারীদের যৌন নিপীড়নের মামলার তদন্ত করছে সিবিআই। এই মামলায় ইতিমধ্যেই জেলবন্দি সন্দেশখালির প্রাক্তন তৃণমূল নেতা তথা মামলায় মূল অভিযুক্ত শেখ শাহজাহান । এদিকে সিবিআই তদন্তে ঘোর আপত্তি জানায় রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস সরকার । এই মামলায় তদন্ত প্রক্রিয়া থেকে সিবিআইকে সরাতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানানো হয় । আজ সোমবার সেই আবেদনের শুনানি করেন বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ । বেঞ্চ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আইনজীবী আইনজীবী জয়দীপ গুপ্তা এবং কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিংভিকে প্রশ্ন করে,’একজনকে বাঁচানোর জন্য এত চেষ্টা কেন? পাশাপাশি বেঞ্চ সাফ জানিয়ে দিয়েছে যে সন্দেশখালি কান্ডের তদন্ত সিবিআই করবে ।
প্রসঙ্গত,শেখ শাহজাহান ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে আদিবাসী সম্প্রদায়ের নারীদের পিঠে করে দেওয়ার নাম করে পার্টি অফিসে ডেকে নিয়ে গিয়ে যৌন নির্যাতন, জমিজায়গা জোর করে দখল করে নেওয়া, খুন প্রভৃতি মারাত্মক অভিযোগ উঠেছে । ২০১৯ সালের ৬ জুন সন্দেশখালির বাসিন্দা প্রদীপ মণ্ডল, দেবদাস মণ্ডল এবং সুকান্ত মণ্ডলকে হত্যার অভিযোগও রয়েছে শাহজাহানের বিরুদ্ধে ৷ বিষয়টি নিয়ে দেশ জুড়ে তোলপাড় শুরু হলে শাহজাহানের দুই সাগরেদ শিবু হাজরা ও উত্তম সর্দারকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠাতে বাধ্য হয় পুলিশ । বেশ কিছুদিন পর পুলিশ শাহজাহানকেও গ্রেফতার করতে বাধ্য হয় ।
আজ অভিষেক মনু সিংভি যুক্তি দিয়েছিলেন যে শাহজাহান শেখের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র যৌন শোষণ এবং জমি দখলের জন্য নয়, রেশন কেলেঙ্কারির জন্যও একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে যেখানে মাত্র ৪ বছর আগে ৪৩ টি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছিল।
তিনি বলেছিলেন যে এই মামলাটি ইডি অফিসারদের উপর হামলা সম্পর্কিত এবং ২ টি এফআইআর হওয়া উচিত ছিল।তবে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, সব মামলাই সন্দেশখালী সংক্রান্ত এবং কোনো এফআইআর পৃথক নয়। বিচারপতি গাভাই মনে করিয়ে দেন যে রাজ্য সরকার সন্দেশখালিতে বেশ বিছু সময় ধরে কোনো পদক্ষেপই নেয়নি । তাই প্রশ্ন উঠেছে রাজ্য সরকার কেন কাউকে বাঁচাতে চাইছে ?
জানুয়ারী মাসে উত্তর ২৪ পরগণা জেলার সন্দেশখালি থানার সরবেড়িয়া গ্রামে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা শাহজাহান শেখের বাড়িতে রেশন দুর্নীতি মামলায় তদন্তে গিয়ে ইডি আধিকারিকদের হামলা হয় । হামলার সময় শাহজাহান বাড়িতেই ছিলেন এবং তার রোহিঙ্গা বাহিনীকে উসকে দিয়ে ইডির আধিকারিকদের উপর হামলা চালিয়েছিল বলে অভিযোগ । তারপরেই দীর্ঘ কয়েক মাস আত্মগোপন করেন শাহজাহান । তাকে গ্রেফতারির বিষয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও বিস্তর প্রশ্ন ওঠে । শাহজাহান শেখের প্রতি রাজ্য পুলিশ ও গোয়েন্দা দপ্তরের ‘নরম’ মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন তোলে খোদ এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট ।।