এইদিন ওয়েবডেস্ক,ময়মনসিংহ,০৬ জুলাই : ফের বাংলাদেশের একটা আবাসিক মাদ্রাসায় যৌন নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশ্যে এল । জিভ কেটে ফেলার ভয় দেখিয়ে এক নাবালক ছাত্রকে দিনের পর দিন বলাৎকারের অভিযোগ উঠল ওই মাদ্রাসার মওলানার বিরুদ্ধে । এবারে ঘটনাস্থল বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের বেলালাবাদ দত্তপুর গ্রামের “মাদরাসাতুল মাদীনা ক্যাডেট মাদ্রাসা”৷ বৃহস্পতিবার (৪ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টা নাগাদ ক্ষিপ্ত জনতা জড়ো হয়ে মাদ্রাসার সমকামী মুহতামিম মাওলানা খলিলুল্লাহকে (২৬) গনধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে ।
জানা গেছে,মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা কেফায়েত উল্লাহ্ । তার ছোট ভাই মুহতামিম মাওলানা খলিলুল্লাহ । বছর দুয়েক আগে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠার পর থেকেই মাদ্রাসার নায়েবে মুহতামিম হিসাবে দায়িত্ব পালন করছে খলিলুল্লাহ।
নির্যাতিত ছাত্রের বাবা মানিক মিয়া পেশায় মাইক্রোচালক । তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন,’আমি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ছেলেকে খাবার দিতে গেলে দেখি সে চরম আতঙ্কিত । আমি কিছু বলার আগেই ছেলে আমার হাত ধরে টানতে টানতে আড়ালে নিয়ে যায় । তারপর সে বলে,’মাদ্রাসার হুজুর আমার সঙ্গে প্রতিদিন নোংরা কাজ করে’ । প্রতিবাদ করলে আমার জিভ কেটে ফেলার হুমকি দেয় ।’ তিনি বলেন,’বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমি অনান্য ছাত্রদের জিজ্ঞাসা করি । তারাও ঘটনার সত্যতার কথা স্বীকার করে । একথা শোনার পর আমি পাড়ায় ফিরে এসে ঘটনার কথা সকলকে জানাই । তারপর সবাই মিলে আমরা ফের মাদ্রাসায় যাই ।’
জানা গেছে,ক্ষিপ্ত জনতা মুহতামিম মওলানা খলিলুল্লাহকে মাদ্রাসা থেকে টেনে বের করে বেদম মারধর শুরু করে । সেই সময় ভিড়ের মধ্য থেকে কেউ স্থানীয় নান্দাইল মডেল থানায় ফোন করে দেয় । এরপর পুলিশ এসে গুনধর মওলানাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় । থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহম্মদ আব্দুল মজিদ জানান, মাদ্রাসার এক ছাত্রকে বলাৎকারের ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাতেই ভুক্তভোগীর বাবার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে ।
প্রসঙ্গত,বাংলাদেশের আবাসিক মাদ্রাসাগুলিতে এই ধরনের কুকীর্তির ঘটনা নতুন নয় । প্রায় দিনই কোনো না কোনো আবাসিক মাদ্রাসার পড়ুয়াদের লালসার শিকার বানানোর অভিযোগ ওঠে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে । ফলে মাদ্রাসা নিয়ে চরম ক্ষোভ আছে দেশ জুড়ে । কিন্তু বাংলাদেশে স্কুলের সংখ্যা খুবই কম হওয়ায় হতদরিদ্র পরিবারের অবিভাবকরা তাদের ছেলেমেয়েদের মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতে পাঠাতে বাধ্য হন ।।