এইদিন ওয়েবডেস্ক,কোচবিহার,০৬ জুন : বিজেপি করার অপরাধে কোচবিহারের ঘোকসাডাঙ্গা থানার রাঙ্গামাটি পঞ্চায়েতের রুইডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা একজন মুসলিম মহিলার সঙ্গে মধ্যযুগীয় বর্বরতা চালানো হয়েছিল । পেশায় খেতমজুর ওই মহিলাকে মারধরের পর নগ্ন করে চুল ধরে প্রায় এক কিলোমিটার পর টেনেহেঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমুলের মহিলা ও পুরুষ গুন্ডাবাহিনীর বিরুদ্ধে । ওই ঘটনা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয় । পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলে বিজেপি । ফের একবার ঘোকসাডাঙ্গা থানার একটা বিজ্ঞপ্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷ আজ শনিবার(৬ জুলাই) নিজের এক্স হ্যান্ডেলে বিজ্ঞপ্তিটি শেয়ার করে কোচবিহারের ঘোকসাডাঙ্গা থানার পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি । শুভেন্দু অধিকারীর শেয়ার করা ওই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আক্রান্ত মহিলাকে ঘটনার সময় ছেঁড়া শাড়ি-শায়া- ব্লাউজ আজ থানায় জমা করতে বলেছে পুলিশ । পুলিশের এই তদন্ত প্রক্রিয়ার তীব্র সমালোচনা করে শুভেন্দু অধিকারী মন্তব্য করেছেন,’আক্রান্তের উপর আক্রমণের ক্লাসিক ঘটনা’ ।
ঘোকসাডাঙ্গা থানার এসআই অভিজিৎ সরকারের স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা লেখা হয়েছে, ‘রাঙ্গামাটি, রুইডাঙ্গা, পিএস-ঘোকসাডাঙ্গা/সিবিআর। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৯১ ধারার অধীনে বিজ্ঞপ্তি । যেখানে আমার কাছে নথি/নিবন্ধ তৈরি করা হয়েছে,এফআইআর-এর ক্ষেত্রে তদন্তের উদ্দেশ্যে নীচে উল্লিখিত প্রয়োজনীয় বা কাম্য । ঘোকসাডাঙ্গা থানার মামলা নম্বর ৩০৯/২০২৪, তারিখ ২৫/০৬/২০২৪, ইউ/এস-ভারতীয় দদণ্ডবিধির ৩৪১/৩২৫/ ৩৫৪(বি)/ ৩৫৪ । অতএব,আপনি নিম্নস্বাক্ষরিত পূর্বে নথি/নিবন্ধ প্রয়োজনীয় সামগ্রী ০৬/০৭/২০২৪ তারিখের ১০ এএম/পিএম টার মধ্যে ঘোকসাডাঙ্গা থানায় সরবরাহ করুন । নথির বিবরণ:-
(১) গত ২৫/০৬/২০২৪ তারিখের ঘটনার সময় আপনার পরিহিত ছেঁড়া শাড়ী। (২) গত ২৫/০৬/২০২৪ তারিখের ঘটনার সময় আপনার পরিহিত ছেঁড়া সায়া।
(৩) ২৫/০৬/২০১৪ তারিখের ঘটনার সময় আপনার পরিহিত ছেঁড়া ব্লাউজ।’
প্রতিক্রিয়ায় শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন, ‘আক্রান্তের উপর আক্রমণের ক্লাসিক ঘটনা । মমতা পুলিশের সাহসিকতা কল্পনা করুন। তারা ভদ্রমহিলাকে জিজ্ঞাসা করছেন; বিজেপি সংখ্যালঘু মোর্চা নেত্রী, যিনি কোচবিহার জেলায় টিএমসি গুন্ডাদের দ্বারা সম্পূর্ণভাবে বিপর্যস্ত,তাকে শ্লীলতাহানি ও নির্মমভাবে মারধর করেছিল, জঘন্য অপরাধটি সম্পাদন করার সময় ছেঁড়া জামাকাপড় জমা দিতে বলছে যা দুষ্কৃতীরা জোর করে তার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল। যখন মহিলাকে তার পরিবারের সদস্যরা খুঁজে পান, তখন তিনি প্রায় সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় মাটিতে অজ্ঞান হয়ে পড়ে ছিলেন । এফআইআর-এ এটি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আমার আগের পোস্টগুলোতেও এই ঘটনা নিয়ে আমি বিষয়টি তুলে ধরেছি। আমি আরও দাবি করেছিলাম যে মামলাটি সিবিআই-এর কাছে স্থানান্তর করা উচিত যাতে একটি সুষ্ঠু তদন্ত হয়, কারণ পুলিশের অভিপ্রায় কখনই অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা ছিল না, বরং তাদের রক্ষা করা উদ্দেশ্য ছিল । ভুক্তভোগীর একমাত্র দোষ হল তিনি বিজেপির সাথে যুক্ত এবং সম্প্রতি সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনের সময় ব্যাপকভাবে কাজ করেছেন।’
তিনি আরও লিখেছেন,’তদন্তকারী কর্মকর্তার (আইও) এই লজ্জাজনক এবং ঘৃণ্য কাজটি কেবল এটি স্পষ্ট করেছে যে পুলিশ কেবল আক্রান্তকে ধরার চেষ্টা করছে । ভুক্তভোগীকে অপমানের চেষ্টা করার জন্য ঘোকসাডাঙ্গা থানার ইনভেস্টিগেশন অফিসার এবং অফিসার-ইন-চার্জকে অবিলম্বে তাদের তির্যক এবং পক্ষপাতদুষ্ট মনোভাবের জন্য বরখাস্ত করা উচিত ।’।