এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০৫ : শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ডের প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা নদিয়া জেলার পলাশিপাড়ার তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য । রাতভর জিজ্ঞাসাবাদের পর মানিক ভট্টাচার্যকে ২০২২ সালের ১১ অক্টোবর গ্রেপ্তার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট(ইডি)। ইডি তার বিরুদ্ধে তদন্তে সহযোগিতা না করার অভিযোগ তুলেছিল । তারপর থেকে টানা প্রায় ২ বছর জেলবন্দি । এদিকে টানা প্রায় দু’বছর জেলে থাকতে থাকতে হাঁপিয়ে উঠেছেন তিনি । এরমধ্যেই জামিনের জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন মানিক । কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, যে জামিন মামলার ত্রুটি সংশোধন করে হাই কোর্টে আবেদন করতে হবে। সেই মতো কলকাতা হাইকোর্টে উচ্চ আদালতে জামিন চেয়ে আবেদন করেন মানিক । বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানি ছিল ।
বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের এজলাসে মামলার শুনানি চলার সময় বারবার ডুগরে কেঁদে উঠেন তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য । জামিনের কাতর আবেদন জানিয়ে তিনি দাবি করেন,’আমার আয়ূ ফুরিয়ে এসেছে । আর মাত্র ২ বছর বাঁচব । ২০১৬ সালে আমার অস্ত্রোপচার হয় । সেই সময় চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন যে আমি নাকি আর ১০ বছর বাঁচব। সেই চিকিৎসার নথি আমার কাছে আছে । চিকিৎসকদের মত অনুযায়ী আমি ২০২৬ সালে আমি মরে যাব। এর মধ্যে প্রায় দু’বছর আমি জেলেই কাটিয়ে দিলাম । এবার আমাকে জামিন দিন ।’ তবে মানিকের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিল না । তিনিই সওয়াল জবাবে অংশগ্রহণ করেন ।
বিচারক তৃণমূল বিধায়কের কাছে একথা শোনার পর পর ইডির কাছে জানতে চান, কিসের ভিত্তিতে তাঁকে বন্দি করে রাখা হয়েছে এবং কেন তাঁকে জামিন দেওয়া হবে না ? উত্তরে ইডির আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি জানান, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে আর্থিক তছরুপ ও বেআইনি লেনদেনের মামলায় তিনি অন্যতম অভিযুক্ত । তাকে বিস্তারিত সওয়াল করতে কমপক্ষে আরও দু’দিন সময় লাগবে । এরপর আদালত আগামী শুক্রবার মামলাটির পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করে ।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতারের ২ দিন পর পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ডের প্রাক্তন চেয়ারম্যান মানিক ভট্টাচার্যকে তলব করে ইডি । কিন্তু তার পর থেকেই তার কোনো খোঁজ মিলছিল না । তিনি যাতে দেশ ছেড়ে পালাতে না পারেন সেজন্য মানিকের বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিশ জারি করা হয়েছিল । অবশেষে ২০২২ সালের ১১ অক্টোবর তাকে গ্রেফতার করা হয় । নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মানিকের পাশাপাশি তাঁর স্ত্রী শতরূপা ভট্টাচার্য এবং পুত্র সৌভিক ভট্টাচার্যকেও হেফাজতে নিয়েছিল ইডি । পরে কলকাতা হাইকোর্ট থেকে শতরূপা ভট্টাচার্যকে জামিন দেওয়া হয় । মানিকের পুত্র শৌভিক জামিন পান সুপ্রিম কোর্ট থেকে। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি সম্পর্কিত অর্থ পাচারের মামলায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট শৌভিককে গ্রেপ্তার করেছিল ইডি ৷।