এইদিন ওয়েবডেস্ক,রাঁচি,০৪ জুন : বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা হল বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির ভোটব্যাঙ্ক। তাই ভোটব্যাঙ্ক বাড়াতে ওই দলগুলি যে রাজ্যে ক্ষমতায় আছে সেখানে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের দেদার ভোটারকার্ড করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ । পশ্চিমবঙ্গের শাসকদলের পূর্ব বর্ধমান জেলার এক বিধায়ক ও হাওড়ার এক নেত্রীকে অনুপ্রবেশকারীদের ভোটারকার্ড করে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করতে শোনা গিয়েছিল । যা নিয়ে তোলপাড় হয় রাজ্য । বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী কংগ্রেস শাসিত ঝাড়খণ্ডেও বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা মূর্তিমান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷ শুধু পশ্চিমবঙ্গ,ঝাড়খণ্ডই নয়, বিহারসহ বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলির বহু অংশে অনুপ্রবেশের কারনে জনবিন্যাসের আমূল পরিবর্তন ঘটে গেছে । উপরন্ত কেন্দ্র সরকার এন আর সি লাগু করার কথা বললেই কংগ্রেস,বামপন্থী ও তৃণমূল কংগ্রেসের মত দলগুলি তীব্র বিরোধিতা শুরু করে দিচ্ছে ।
এনিয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিল ঝাড়খণ্ডের আদালত । আদালত রাজ্য সরকারকে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশকারী বাংলাদেশিদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করার এবং তাদের নির্বাসনের নির্দেশ দিয়েছে। বুধবার (৩ জুলাই, ২০২৪) ড্যানিয়েল ড্যানিশের আবেদনের শুনানির পর বিচারপতি সুজিত নারায়ণ প্রসাদ ও বিচারপতি এ কে রাইয়ের বেঞ্চ এই নির্দেশ দেন। আদালত সরকারকে এই মামলায় দুই সপ্তাহের মধ্যে একটি অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছে যাতে তাদের বলতে হবে কত বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীকে তারা চিহ্নিত করেছে, তাদের কতজনকে আটকানো হয়েছে এবং কতজনকে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।এছাড়াও এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে জবাব দিতে বলেছে আদালত।
ড্যানিয়েল ড্যানিশের পিটিশনে আদালতকে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশের সংলগ্ন সাঁওতাল পরগনার মতো জেলাগুলিতে বাংলাদেশের নিষিদ্ধ সংগঠনগুলি পরিকল্পিতভাবে ঝাড়খণ্ডের আদিবাসী মেয়েদের বিয়ে করছে এবং তাদের ধর্মান্তরিত করছে। এটা বন্ধ করা জরুরী। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী সাঁওতাল পরগনার জেলাগুলোতে হঠাৎ করে মাদ্রাসার সংখ্যা বেড়েছে এবং ৪৬টি নতুন মাদ্রাসা তৈরি হয়েছে। আবেদনে বলা হয়, এসব মাদ্রাসা দিয়ে দেশবিরোধী কর্মকাণ্ড হচ্ছে। শুধু উপজাতীয় নারীরাই শোষিত হচ্ছে না, অনুপ্রবেশকারীরাও জমি দখল করছে বলে অভিযোগ তার । শুনানির সময় আদালত বলেছেন, এটা খুবই গুরুতর বিষয়। রাজ্য সরকার একার পক্ষে এটি পরিচালনা করতে পারে না। কেন্দ্রেরও উচিত রাজ্যের সঙ্গে কাজ করা। তাই এ ব্যাপারে কেন্দ্র কী পদক্ষেপ নিতে পারে সে বিষয়েও তাদের জানানো উচিত।
জানা গেছে,বুধবার শুনানির সময় কেন্দ্রের তরফে আইনজীবী আদালতে তাদের বক্তব্য পেশ করেছিলেন । কেন্দ্র আদালতকে বলেছে যে অনুপ্রবেশের ক্ষেত্রে, কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারগুলিকে ক্ষমতা দিয়েছে, তারা এই ধরনের লোকদের সনাক্ত করতে এবং নিজেরাই ব্যবস্থা নিতে পারে। তবে, যিনি আবেদনকারীর অভিযোগ যে রাজ্য সরকার রাজ্যে অনুপ্রবেশ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করছে। এমনকি সাঁওতাল পরগণা এলাকায় কোনো ধর্মান্তরিত হওয়াও রাজ্য সরকার মেনে নেয়নি । এমন পরিস্থিতিতে অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন্দ্রকে নির্দেশ দেওয়া উচিত। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ১৮ জুলাই ।।