এইদিন ওয়েবডেস্ক,রামপুরহাট(বীরভূম),০৪ জুলাই : স্ত্রীর পরকীয়া আটকাতে নিজের নাবালিকা কন্যা সহ স্ত্রীকে বিগত এক মাসের অধিক সময় ধরে গৃহবন্দী করে রেখে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে বীরভূম জেলার রামপুরহাটে । স্ত্রী যাতে বাড়ির বাইরে বের হতে না পারে সেজন্য বাড়ির চারপাশে লোহার জিআই তার ছড়িয়ে দিয়ে তাতে বিদ্যুৎ সংযোগ করে রীতিমতো সুরক্ষা বলয় তৈরি করে রেখেছিল স্বামী নাজির হোসেন । শেষ পর্যন্ত গৃহবন্দি স্ত্রী মাজমা বিবি ও তার কন্যা সন্তানকে উদ্ধার করল রামপুরহাট থানার পুলিশ । ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জেলাজুড়ে ।
জানা গেছে, মাজমা বিবির সঙ্গে ২০১৩ সালে বিয়ে হয়েছিল রামপুরহাট পৌরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের চাকলাহাট এলাকার বাসিন্দা নাজির হোসেনের । তাদের এক নাবালিকা কন্যা সন্তান রয়েছে । নাজির হোসেন বেকার । বাবা ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন, তারই জমানো টাকা ভেঙে সংসার চালান তিনি । স্ত্রী মাজমা বিবি যাতে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়তে না পারে তার জন্য তার বাড়ির বাইরে বের হওয়া আটকাতে বিগত এক মাসের অধিক সময় আগে একটা পরিকল্পনা করেন নাজির৷ লোহার জিআই তার কিনে নিয়ে এসে গোটা বাড়ির চারপাশ একটা বলয় তৈরি করেন তিনি । বাড়ির সামনে বিদ্যুতের খুঁটির তারের সঙ্গে সংযোগ করে দিয়ে রীতিমতো একটা সুরক্ষা বলয় তৈরি করে রেখে দিয়েছিলেন । ফলে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর আশঙ্কায় মাজমা বিবি ও তার মেয়ে মাসাধিক কাল ধরে বাড়িতে আটকে থাকেন । প্রতিবেশীরাও তাদের বাড়ি যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল৷ এদিকে ওই বিদ্যুৎবাহী তারের সংস্পর্শে এসে বেশ কয়েকটি বিষধর সাপ ও ব্যাঙের মৃত্যু হয় ।
মাজমা বিবি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের এই পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করতে প্রতিবেশীদের কাছে অনুরোধ করেছিলাম যে তারা যেন বিষয়টি স্থানীয় কাউন্সিলরকে বলেন । কিন্তু কাউন্সিলরকে জানানো হলেও কোন কারনে তিনি আমাদের উদ্ধার করতে আগ্রহী হননি । অবশেষে বুধবার দুপুরে পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে ।’
জানা গেছে, বুধবার ঘটনাস্থলে যায় রামপুরহাট থানার পুলিশ । মাজমা বিবিদের বাড়ির চারপাশে বিদ্যুৎবাহী খোলা তার দেখে বিদ্যুৎ দপ্তরকে খবর দেওয়া হয় । পরে বিদ্যুৎ দপ্তরের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন করে জি আই তার সরিয়ে দেয় । এরপর মাজমা বিবি ও তার মেয়েকে উদ্ধার করে পুলিশ ।
তবে কেন এই কান্ড ঘটালেন ? এই প্রসঙ্গে নাজির হোসেনের সাফাই,’আমার অনুপস্থিতিতে বাড়িতে লোকজন ঢুকতো বলে আমি জানতে পারি । স্ত্রীর স্বভাব চরিত্র নিয়ে থানায় অভিযোগও জানিয়েছিলাম । কিন্তু পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয়নি । এছাড়া বাড়িতে কয়েকবার কাগজপত্র এবং দামি দামি জিনিসপত্র চুরি হয়ে গিয়েছিল । তাই ঘর বাঁচাতে আমি এই ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়েছিলাম ।’।