এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,২৫ জুন : স্কুলের ফি বাকি থাকার অজুহাতে চতুর্থ শ্রেণীর এক ছাত্রীকে বাড়ি যেতে দেয়নি আবাসিক মহিলা মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা তথা আলিম( প্রধান শিক্ষক) । মাদ্রাসার বাকি মেয়েরা যে যার বাড়ি চলে যায় । ফলে একাই ছিল মেয়েটি৷ আর সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে তার উপর পাশবিক অত্যাচার চালায় ৬০ বছরের বৃদ্ধ আলিম । যদিও পরে ঘটনার কথা জানাজানি হলে নির্যাতিতা কিশোরীর বাবার দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে বৃদ্ধকে গ্রেফতার করে পুলিশ । এদিকে ধরা পড়তেই সে নাতনির বয়সী মেয়েটির সাথে বিয়ে করার ইচ্ছা প্রকাশ করে । এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের জয়পুরহাট পুর শহরের কাশিয়াবাড়ি এলাকার হজরত ফাতেমা (রা:) কওমি হাফেজিয়া মহিলা মাদ্রাসায় । গুনধর আলিমের নাম মহম্মদ আজিজুল হক (৬০) ।
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে,কাশিয়াবাড়ি এলাকার হজরত ফাতেমা (রা:) কওমি হাফেজিয়া মহিলা আবাসিক মাদরাসার চতুর্থ শ্রেণীতে পড়াশোনা করত নির্যাততা কিশোরী । মাদ্রাসাতেই থেকে পড়াশোনা করত সে । ঈদের ছুটি হলে মেয়েকে নিতে তার বাবা গত ১৬ জুন মাদ্রাসায় যায় । কিন্তু মাদরাসার মাসিক বেতন বাকি থাকার কারণে মেয়ের সঙ্গে তাকে দেখা করতে ও বাড়িতে যেতে দেয়নি আজিজুল । বাধ্য হয়ে ওই ব্যক্তি মেয়েকে না নিয়েই বাড়ি ফিরে যান । এদিকে মাদ্রাসা ফাঁকা থাকার সুযোগ নিয়ে ১৮ জুন বিকেলে ওই ছাত্রীকে বাগান বাড়িতে নিয়ে যায় আজিজুল। সেখানে জোরপূর্বক ওই ছাত্রীর উপর সে পাশবিক নির্যাতন চালায় । এ কথা কাউকে বললে হত্যার হুমকি পর্যন্ত দেয়। এমনকি বাবা ডেকেও ধর্ষণ থেকে রেহাই পায়নি ওই ছাত্রী। পরে মাদ্রাসার একটি ঘরে মেয়েটিকে আটকে রেখে দেওয়া হয় ।
এদিকে শনিবার (২২ জুন ২০২৪) ওই মেয়েটির দুই বান্ধবী মাদ্রাসায় এলে তাদের ঘটনার কথা খুলে বলে নির্যাতিতা কিশোরী । আজিজুলের ঘৃণ্য আচরণের কথা শোনার পর ভয়ে তারা পালানোর চেষ্টা করে । রবিবার বেলা ১১ টা নাগাদ তিন সহপাঠীর সাথে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় নির্যাতিতা । আশ্রয় নেয় এক সহপাঠীর বাড়িতে । মেয়েটি তার সহপাঠীর মাকে ঘটনার কথা খুলে বলে। এরপর সহপাঠীর মা তাকে নিয়ে স্থানীয় থানায় নিয়ে যায় । অভিযোগ পেয়ে পুলিশ এসে আজিজুলকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে মেয়ের বাবা মামলা করলে তাকে মাছুয়া বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জানা গেছে,গ্রেপ্তারের মুহূর্তে আজিজুল হক কখনও বলেন তার ভুল হয়েছে। আবারও কখনও বলছেন ষড়যন্ত্র করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।জয়পুরহাট সদর থানার উপপরিদর্শক রুবেল হোসেন জানান, গ্রেফতারের পর আজিজুল হককে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে ভুল স্বীকার করে এবং কিশোরীকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় । সোমবার ধৃতকে আদালতে তোলা হলে জেল হেফাজতে পাঠানো হয় । পাশাপাশি নির্যাতিতাকে ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়েছে বলে জানান তিনি ।।