প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২১ জুন : রাস্তা থেকে এক বিজেপি নেতাকে তুলে নিয়ে গিয়ে লাঠি-বাঁশ দিয়ে মারধর করে ’জরিমানা’ চাওয়ার অভিযোগ উঠলো তৃণমূলের বিরুদ্ধে । সোমবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে শহর বর্ধমানের গুডস-শেড রোড এলাকায় ।আক্রান্ত বিজেপির বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভার আহ্বায়ক কল্লোল নন্দনকে উদ্ধার করে তাঁর দলের কর্মীরা বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়েগিয়ে চিকিৎসা করান । পরে এই ঘটনা নিয়ে কল্লোল নন্দন বর্ধমান থানার পুলিশের দ্বারস্থ হন। পুলিশ ঘটনা বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়া শুরু করেছে ।পাশাপাশি পুলিশ এলাকায় টহলও দেওয়া শুরু করে। যদিও বর্ধমানের তৃণমূল নেতৃত্ব কল্লোল নন্দনের আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,শহর বর্ধমানেরই বাসিন্দা বিজেপি নেতা কল্লোল নন্দন । তাঁর উপরে হামলা হয় বলে অভিযোগ । বিজেপি নেতা কল্লোল নন্দন জানিয়েছেন,এদিন সাড়ে ১২টা নাগাদ তিনি তাঁর মোটর বাইকের চাকায় হাওয়া দিতে গুডস-শেড রোডে গিয়েছিল।কয়েকজন ছেলে সেই সময়ে সেখানকার একটি ক্লাবঘরে ছিল। তারাই তাঁকে জোরপুর্বক ওই ক্লাবের ভিতর নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। বাধা পেয়ে তারা তাঁকে ক্লাবঘর লাগোয়া নির্মীয়মান বহুতলের নীচে নিয়ে গিয়ে মারধর শুরু করে । কল্লোল বাবুর অভিযোগ , ’মোটা বাঁশ ও লাঠি দিয়ে তাঁকে মারধর করা হয়।এমনকি ’জরিমানা’ বাবদ তাঁর কাছে “পাঁচ“ লক্ষ টাকাও চাওয়া হয় । কিছুক্ষণ পর তৃণমূলের এক নেতা এসে বলেন ,‘অনেক মেরেছিস।এ বার ছেড়ে দে’।একই সময়ে আপর আর এক তৃণমূল নেতা এসে ওই ছেলেদের তাঁকে ছাড়তে ‘নিষেধ’ করেন।পরে আবার তারা আলোচনা করে তাঁকে ছেড়ে দেয় । কল্লোল বাবু দাবি করেন ,“যাঁরা তাঁকে মেরেছে তাঁর তৃণমূল নেতাদের উস্কানিতে তাঁকে মারা হয়েছে।
এদিন মারধোরের কারণ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা কল্লোল বাবু দাবি করেন ,“বিজেপি করার অপরাধে তাঁদের এলাকার কয়েকজনকে তৃণমূলের নেতারা কানধরে ‘ওঠবোস’ করায় । সেই ভিডিয়ো ভাইরাল হয়। তা নিয়ে থানায় অভিযোগ করা হয়েছিল।কল্লোলবাবুর দাবি সেই সময়েই তাঁকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিল তৃণমূলের ওই নেতারাই।হুমকি মতোই এদিন তাঁরা তাকে দেখে নিলো বলেই তিনি মনে করছেন“। ঘটনা বিষয় নিয়ে বিজেপির ’রাঢ়বঙ্গের পর্যবেক্ষক’ রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সারা রাজ্যের পাশাপাশি বর্ধমান শহরেও এখন তৃণমূলের গুণ্ডারাজ চলছে। অত্যাচারের হাতথেকে বিজেপি কর্মীরা কোথাও নিস্কৃতি পাচ্ছে না “।
যদিও এলাকার তৃণমূলের নেতা অশোক মণ্ডলের দাবি করেছেন, “এদিন বিজেপি কর্মীরাই অশান্তি করছে।তিনি সবাইকে সরিয়ে দিয়ে জানিয়েদেন অশান্তি করা যাবে না । টাকা নিয়ে ওদের ঝামেলা ওদের পার্টি অফিসে গিয়ে মেটাতে বলে দিয়েছেন“ ।
অন্যদিকে বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস বলেন, “তৃণমূলের কেউ এদিনের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয় । ভোটের আগে টাকার প্রলোভন দেখিয়ে অনেককে বিজেপি করাতে নিয়ে গিয়েছিল ওদের নেতারা । যাঁরা টাকা পায়নি তাঁরাই এদিন গণ্ডগোল করেছে বলে জেনেছি । পুলিশকে বলেছি, এলাকায় কেউ গোলমাল করলে তাঁকে গ্রেফতার করতে ।’।