এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৭ জুন : রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার শিকার ঘরছাড়া বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে আজ সোমবার সকালে কোচবিহারের উদ্দেশ্যে রওনা হন বিজেপি ৪ সদস্যের কেন্দ্রীয় দল । কোচবিহারের জেলা কার্যালয়ে আশ্রয়ে থাকা দলের ঘরছাড়া মহিলা ও পুরুষদের সঙ্গে কথা বলার সময় শীতলকুচির ‘যৌন নির্যাতনের’ শিকার এক মহিলা কান্নায় ভেঙে পড়েন । তাকে সান্ত্বনা দেন বিজেপি নেত্রী অগ্নিমত্রা পাল । প্রতিক্রিয়ায় অগ্নিমত্রা পাল লিখেছেন,’নির্বাচন শেষ হতেই তৃণমূল কংগ্রেস নখ দাঁত বের করে বেরিয়ে পড়েছে। বিজেপি কর্মীদের উপর রাজ্য জুড়ে অত্যাচার চলছে। শীতলকুচির বিজেপি শক্তি স্বরূপা মায়ের উপরও নির্যাতন চলে । তৃণমূলের অঞ্চল প্রধান ওনাকে ধর্ষণ করেছে এই অভিযোগ থানা নেয়নি। আমরা কোন রাজ্যে বাস করছি ? আমাদের দুর্ভাগ্য এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একজন মহিলা। অথচ মহিলাদের কোন নিরাপত্তা নেই।’
কোচবিহারের বিজেপির এক নির্বাচিত মহিলা পঞ্চায়েত প্রধানও ঘরছাড়া রয়েছেন বলে অভিযোগ বিজেপির । আক্রান্ত মহিলা ও পুরুষের সাথে কথা বলার পরে কেন্দ্রীয় দলের অন্যতম সদস্য রবি শংকর প্রসাদ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করে বলেন,’মমতাদি ধিক্কার আপনাকে !’ তিনি বলেন,’ভারতের আইনে একজন মহিলার সাথে অভদ্র ভাবে কথা বলাও আইন বিরুদ্ধ । আর এখানে এক নির্বাচিত পঞ্চায়েতের মহিলা প্রধানের কাপড় ছেঁড়ার চেষ্টা হয়েছিল । মমতাদি আপনার সরকারে কি চলছে ? আমরা জবাব চাই । নির্বাচনে হারজিত আছে । তাই বলে একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর রাজ্যে এক মহিলা প্রধানের সঙ্গে আপনার পার্টির গুন্ডারা এমন ন্যাক্কারজনক কাজ করবে ? কোন গনতন্ত্রের কথা বলেন আপনি ? আপনি বলেন যে সংবিধানকে বাঁচাতে হবে । কিন্তু সংবিধান তো আপনার প্রদেশেই সমাপ্ত হচ্ছে মমতা দিদি ।’
রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার শিকার বহু বিজেপি কর্মী ও তাদের পরিবার এখনো ঘরছাড়া রয়েছেন । তাদের সঙ্গে কথা বলতে এবং রাজ্যের হিংসার ঘটনা খতিয়ে দেখতে রবিবার রাতে কলকাতা এসেছেন বিজেপির ৪ সদস্যের কেন্দ্রীয় দল । সেই দলে রয়েছেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সাংসদ বিপ্লব দেব, বিজেপি নেতা রবি শংকর প্রসাদ, উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন ডিজিপি বিজেপি নেতা ব্রিজ লাল এবং সাংসদ কবিতা পাতিদার । বিমানবন্দর থেকে তাঁরা সোজা যান কলকাতার মাহেশ্বরী ভবনে। সেখানেই বর্তমানে রয়েছেন ভোট পরবর্তী হিংসায় ঘরছাড়ারা। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। শোনেন অভাব-অভিযোগ। আশ্বাস দেন পাশে থাকার। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব বলেন,’বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর ত্রিপুরায় রাজনৈতিক খুন হয়নি। ভোট পরবর্তী হিংসা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এবং তার পার্টির জন্মগত স্বভাব। এই স্বভাব যত তাড়াতাড়ি মুখ্যমন্ত্রী পরিবর্তন করবেন ততই তার জন্য ভাল এবং তাঁর পার্টির জন্য ভাল হবে । এর থেকে কোনও লাভ পাবেন না,বরঞ্চ লোকসান হবে। জনতা ওনাদের রাজ্যেরই বাসিন্দা অথচ সেটা ওনারা ভুলে যান ।’।