এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৪ জুন : ভোট পরবর্তী হিংসার শিকার ২৫০ জন ঘরছাড়াকে নিয়ে বৃহস্পতিবার রাজ্যপালের কাছে ডেপুটেশন দিতে গিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । কিন্তু কলকাতা পুলিশ ১৪৪ ধারা জারির ‘অজুহাতে’ তাঁদের রাজভবনে ঢুকতে দেয়নি বলে অভিযোগ । শুভেন্দুর অভিযোগ, ‘ডিজিপি বিনীত গোয়েল এবং মমতা ব্যানার্জির নির্দেশে মিরাদ খালিদের নেতৃত্বে কলকাতা পুলিশ আমাদের আটকে দিয়েছে ।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের রাজভবনে ঢুকতে না দিয়ে গোটা পশ্চিমবঙ্গের জনগন,যারা তৃণমূলকেও ভোট দিয়েছেন,তারাও মমতা ব্যানার্জির ফ্যাসিবাদী চরিত্র এবং তার প্রতিহিংসা পরায়ণত নিষ্ঠুর ভাবমূর্তি আজ দেখতে পেল ।’ তিনি বলেন, ‘আমি ব্যারিকেড ভেঙে ঢুকতে পারতাম । কিন্তু আমার শিক্ষাদিক্ষা আছে । আমি মমতা ব্যানার্জির মত নিম্ন মেধার অশিক্ষিত অর্ধশিক্ষিত নই । আমি আইন মেনে চলি ।’ সেই সাথা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের নাম নিয়ে তাঁকে মমতার ‘ভৃত্য’ বলে তোপ দেগে শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’রাজভবনে যেতে না দিয়ে যেভাবে এলওপিকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে,আমরা সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করলাম, বিনীত গোয়েল প্রস্তুত থাকুন । আমি হুঁশিয়ারি দিয়ে যাচ্ছি ।’
গত ৪ জুন লোকসভা ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর থেকে শহর কলকাতাসহ রাজ্যের জেলাগুলিতে হিংসার শিকার হচ্ছে বিজেপি কর্মীরা । শুভেন্দু অধিকারী জানান যে ১২০০ আহত,৭০০০ দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, ১৫,০০০ ঘরছাড়া, ২৫,০০০ এর অধিক লোকের রেশন বন্ধ করে দিয়েছে । কোচবিহার, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা সবচেয়ে বেশি হিংসার ঘটনা ঘটেছে বলে তাঁর অভিযোগ । জানা গেছে, ঘরছাড়াদের জন্য কলকাতার ‘মাহেশ্বরী ভবন’ নামে একটি ধর্মশালা ভাড়া করেছিল বিজেপি । কিন্তু সেই মাহেশ্বরী ভবন থেকেও তাঁদের বের করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ । এর পরই শুভেন্দু অধিকারী ঘরছাড়াদের নিয়ে রাজ্যপালকে ডেপুটেশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন । শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘বিরোধী দলনেতাসহ ২৫০ জন আক্রান্তকে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন রাজ্যপাল । কিন্তু কলকাতা পুলিশ আমাদের রাজভবনে যেতে দেয়নি ।’
জানা গেছে,রাজভবন যাওয়ার মাঝপথে পুলিশ তাঁদের আটকে দেয়। রাজভবনের চারপাশে ব্যারিকেড করে দেওয়া হয়। প্রায় একঘণ্টা গাড়িতে বসে থাকার পর নেমে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ক্ষুব্ধ শুভেন্দু অধিকারী মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে বলেন,’মমতা ব্যানার্জিকে বলে রাখি,একটা ডেপুটেশন দিতে না দিয়ে আমাদের প্রতিবাদের আওয়াজ যত না সোচ্চার হত, আপনার নির্দেশে আপনার পুলিশ আজ যা করল তা স্বাধীনতার পরে হয়নি, সেটাই আপনি প্রথমবার করে দেখালেন । আপনি শুনে রাখুন, আমরাও ২.৩৫ লোকের ভোট পেয়েছি । আমাদের সঙ্গে ৩৯ শতাংশ ভোটারের প্রত্যক্ষ সমর্থন রয়েছে । তাই আপনি পারেন না এইভাবে আপনার পুলিশকে ব্যবহার করতে । এই লড়াই আরও তীব্র হবে ।’।