এইদিন ওয়েবডেস্ক,আউশগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),২১ জুন : ঋণ করে ট্রাক্টর কিনেছিলেন । মাসে মাসে তার কিস্তি মেটাতে হত । কিন্তু ট্রাক্টর কেনার কিছুদিনের মধ্যেই দ্বিতীয় দফার আংশিক লকডাউন শুরু হয়ে যায় । ফলে ভাড়া হচ্ছিল না । এদিকে পরপর দু’মাসের কিস্তি বাকি পড়ে যায় । আসছিল কিস্তি মেটানোর তাগাদা । এই পরিস্থিতিতে ট্রাক্টরের ঋণ শোধ করার কোনও কুলকিনারা না পেয়ে হতাশায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার গুসকরা শহরের এক যুবক । পুলিশ জানিয়েছে মৃতের নাম মিঠুন মুর্মু(৩২) । বাড়ির কিছুটা দুরে একটি গাছ থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহটি উদ্ধার করে গুসকরা ফাঁড়ির পুলিশ । সোমবার দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় ।
জানা গেছে,গুসকরা পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের ফকিরবাগান এলাকায় বাড়ি মিঠুন মুর্মুর । তাঁর বাড়িতে আছেন বাবা,মা,স্ত্রী, দুই সন্তান ও দুই অবিবাহিত বোন । বিঘে দু’আড়াই পৈতৃক জমি রয়েছে । ওই জমিজমার আয় ও অনান্য কাজকর্ম করে সংসার চালানো দুষ্কর হয়ে পড়েছিল । এদিকে দু’বোনের বিয়ের চিন্তা । তাই ঋণ করে একটি ট্রাক্টর কিনেছিলেন মিঠুন । তিনি নিজেই সেই ট্রাক্টর চালাতেই ।
সব ঠিকঠাকই চলছিল । কিন্তু ইতিমধ্যে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারনে আংশিক লকডাউন শুরু হয়ে যায় । ফলে ট্রাক্টরের ভাড়া বন্ধ হয়ে যায় । এরই মাঝে হৃদরোগী মিঠুনের বাবা সোমাই মুর্মু হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন । তাঁর চিকিৎসায় বেশ কিছু টাকা খরচ হয়ে যায় । ফলে ঋণদানকারী সংস্থাকে পরপর দু’মাসের কিস্তি মেটাতে পারেননি মিঠুন । এদিকে মাসিক কিস্তি মেটানোর জন্য তাগাদা আসছিল । ফলে বিগত কয়েকদিন ধরে তিনি চরম হতাশায় ভুগছিলেন বলে পরিবার সুত্রে জানা যায় ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রবিবার সন্ধ্যায় পারিবারিক বিষয় নিয়ে মিঠুনের সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর মধ্যে একপ্রস্থ অশান্তি হয় । তার মাঝেই রাগ করে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যান মিঠুন । তারপর বাড়ির অদূরে একটি শিশুগাছে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হন ওই যুবক । তাঁর স্ত্রী সুন্দরীদেবী লোকজন ডাকাডাকি করেন । পরে স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে দেহটি উদ্ধার করে আনে গুসকরা ফাঁড়ির পুলিশ ।।