এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়াদিল্লি,০৯ জুন : ২০২৪ লোকসভা ভোটে এককভাবে ম্যাজিক ফিগার ২৭২ অতিক্রম করতে পারেনি বিজেপি । সরকার গঠনের জন্য তাদের নির্ভর করতে হয়েছে এনডিএ-এর শরিক দলগুলির উপর । নরেন্দ্র মোদীর তৃতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হওয়া আটকাতে পুরোদমে চেষ্টা চালিয়ে গেছে এবং যাচ্ছে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইন্ডি জোট । তাদের আশা ছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার গঠন করতে ব্যর্থ হলে ইন্ডি জোট সরকার গঠন করবে । ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে রাহুল গাঁধি ও গৃহমন্ত্রী হিসাবে অখিলেশ যাদবের নাম হাওয়ায় ভাসিয়ে দিয়েছিল । সে লক্ষ্যে এনডিএ-৩ সরকারের দুই কিংমেকার চন্দ্রবাবু নাইডু ও নিতীশ কুমারকে দলে টানতে তারা ভরপুর চেষ্টা চালিয়ে গেছে । কিন্তু আপাতত তারা ব্যর্থ হয়েছে । শোনা যায় যে মমতা ব্যানার্জিও ইন্ডি জোটের সরকার গঠন করতে চেষ্টা চালিয়েছিলেন । কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয়নি । এদিকে আজ রবিবার নরেন্দ্র মোদী-৩ সরকারের শপথগ্রহণ অনুষ্টান । দেশ-বিদেশে বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিসের আমন্ত্রিণ জানানো হয়েছে । কিন্তু কংগ্রেস ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন যে তারা শপথগ্রহণ অনুষ্টানে উপস্থিত থাকবে না ।
কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন যে আমরা অনুষ্ঠানে অংশ নেব না। তিনি দাবি করেছেন ইন্ডি জোটকে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি । জয়রাম রমেশ বলেছেন, ‘আমরা কোনো আমন্ত্রণ পাইনি। তাই, ইন্ডি জোট অনুষ্ঠানে যোগ দেবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ভারতের জোট নেতাদের আমন্ত্রণ এলে আমরা বিষয়টি নিয়ে ভাবব।’
একই দাবি করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি । শনিবার তিনি কলকাতায়বসাংবাদিক সম্মেলনে দাবি করেছেন,’আমরা আমন্ত্রণ পাইনি। পেলেও আমরা যেতাম না।’ অবশ্য তিনি ইন্ডি জোটের সরকার গঠনের আশা ছেড়ে দেননি । তিনি জানান যে ইন্ডি জোট সরকার গঠনের দাবি জানায়নি, এর মানে এটা নয় যে ভবিষ্যতে সরকার গঠনের দাবি করবে না। তিনি বলেন,’আমরা অপেক্ষা করছি এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। এই জনাদেশ নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে গেছে । তাই এবার তার প্রধানমন্ত্রী হওয়া উচিত নয় । অন্য কারোর হওয়া উচিত ছিল । তবুও তাকে দায়িত্ব নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে ।’ তিনি ইঙ্গিতপূর্ণ ভাষায় বলেছেন,’অপেক্ষা করুন এবং দেখতে থাকুন । বিজেপির নেতৃত্বাধীন দুর্বল এবং অস্থিতিশীল এনডিএ সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিলে খুশি হব ।’
এদিকে তৃতীয়বারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আজ রবিবার (৯ জুন) সন্ধ্যায় শপথ নিতে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী । ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে এই শপথ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে দেশ-বিদেশের প্রায় ৮,০০০ অতিথিকে। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে আগের দিনই নয়াদিল্লি গেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।নয়াদিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে ভারতীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করবেন নরেন্দ্র মোদী । একই অনুষ্ঠানে তার নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরাও অনেকে শপথ নেবেন।
রাষ্ট্রপতি ভবন সূত্র জানিয়েছে, শপথ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে যোগ দিতে দেশ-বিদেশের আট হাজার বিশিষ্টজনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। শপথ অনুষ্ঠানের পর রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর আমন্ত্রণে নৈশভোজে যোগ দেবেন বিদেশি অতিথিরা । বিদেশ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, যেসব বিদেশি নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, তাদের মধ্যে অনেকেই সাদরে আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন এবং তারা রবিবার দুপুরের মধ্যে দিল্লিতে এসে পৌঁছবেন। দক্ষিণ এশিয়ার নেতাদের মধ্যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিংহে, নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে এবং মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী প্রবিন্দ জগন্নাথকে ।এছাড়াও মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে নরেন্দ্র মোদীর শপথগ্রহণ অনুষ্টানে । ভারত-বিরোধী হিসেবে পরিচিত হলেও আমন্ত্রণ পেয়ে তা সাদরে গ্রহণ করেছেন এবং জানিয়েছেন, ঐতিহাসিক এই অনুষ্ঠানের সাক্ষী হওয়ার সুযোগ পেয়ে তিনি কৃতজ্ঞ। এদিকে বিদেশি নেতাদের আগমন উপলক্ষে রাজধানী জুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বৃদ্ধি করা হয়েছে। নয়াদিল্লির তাজ, লীলা, আইটিসি মৌরাসহ পাঁচ তারকা হোটেলগুলোতেও জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। তবে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি দুই প্রতিবেশী দেশ চীন ও পাকিস্তানকে ।।