এইদিন ওয়েবডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান,০৮ জুন : এরাজ্যে অব্যাহত ভোট পরবর্তী হিংসা ৷ শুক্রবার রাতে বর্ধমান শহরের মিঠাপুকুর এলাকায় ভোট পরবর্তী হিংসার শিকার হলেন এক বিজেপি কর্মী । বিশ্বনাথ মোদক নামে ওই বিজেপি কর্মীর পান,বিড়ির ছোট্ট দোকানে দেদার লুটপাট চালালো হেলমেট আর গামছায় মুখ ঢেকে আসা দুষ্কৃতীদের দল । নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে তার দোকানের যাবতীয় পণ্য সামগ্রী । শুধু তাইই নয়, প্রতিবাদ করলে বিশ্বনাথবাবু ও তার স্ত্রীকে ব্যাপক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ । আক্রান্ত বিজেপি কর্মীর অভিযোগ, তিনি এবারের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বুথ এজেন্ট হয়েছিলেন । সেই অপরাধেই তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী দল তার দোকানে হামলা চালিয়ে লুটপাট করে,পণ্যসামগ্রী নষ্ট করে এবং প্রতিবাদ করলে তাকে ও তার স্ত্রীকে মারধর করে । যদিও অভিযোগ যথারীতি অস্বীকার করেছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব । শুক্রবার রাতের এই ঘটনার পর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন আক্রান্ত পরিবারটি । যদিও আজ শনিবার বিকেল পর্যন্ত কোনো গ্রেফতারির খবর নেই ।
জানা গেছে,বাড়ি সংলগ্ন একটা ঘুমটিতে পান বিড়ির দোকান রয়েছে বর্ধমান শহরের মিঠাপুকুর এলাকার বাসিন্দা বিশ্বনাথ মোদকের ৷ তারা স্বামী-স্ত্রী মিলে দোকানটি চালান । অত্যন্ত হতদরিদ্র পরিবার । মূলত দোকানের উপার্জনেই তাদের সংসার চলে । বিশ্বনাথবাবু বলেন,’আগে আমি তৃণমূল করতাম । কিন্তু পরে বিজেপিতে যোগ দিই । এবারে মিঠাপুকুর এলাকার ১১২ নম্বর বুথে দলের এজেন্ট হয়েছিলাম আমি । সেই আক্রোশেই আমার দোকানে হামলা হল ।’
বিশ্বনাথ মোদকের দোকানে লুটপাট ও হামলার ঘটনাটি দোকানে থাকা সিসিটিভিতে রেকর্ড হয়ে যায় । ভিডিওতে দেখা যায় শুক্রবার রাত্রি ৯:৪৭ নাগাদ, একজন বাইক আরোহী খরিদ্দার বিশ্বনাথবাবুর দোকানে সিগারেট কিনতে এসেছেন । সেই সময় দোকান চালাচ্ছিলেন বিশ্বনাথবাবুর স্ত্রী । খরিদ্দার সিগারেট নিয়ে দাম মিটিয়ে চলে যেতেই ৪-৫ জন মুখ ঢাকা দুষ্কৃতী দোকানে ঢুকে পড়ে৷ দুষ্কৃতীদের কারোর মাথায় ছিল হেলমেট,কারোর মুখ গামছা দিয়ে ঢাকা । দুষ্কৃতীরা প্রথমে নিজেদের ইচ্ছামত সিগারেট ও বিস্কুটের প্যাকেট পকেটস্থ করে নেয় । তারপর তারা দোকানে ভাঙচুর চালায় । মারধরও করা হয় ওই দম্পতিকে ।
দেখুন ভিডিও 👇
যদিও মিঠাপুকুর এলাকার তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক বাগবুল ইসলামের দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে আমাদের দলের কোনো যোগ নেই । গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে বিজেপির লোকেরাই মুখ ঢেকে এসে দোকানে হামলা চালিয়েছে ।’ অবশ্য তিনি হামলার ঘটনার নিন্দা করেছে । তবে ওই তৃণমূল নেতা এই ঘটনাকে বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দল বলে উড়িয়ে দিলেও ভোট পরবর্তী হিংসার শিকার হতে হয়েছে বর্ধমান শহরের কালনাগেট এলাকায় একজন মহিলা বিজেপি কর্মীকে । এই ঘটনাতেও অভিযোগের আঙুল উঠেছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে । দোলনচাঁপা দাস নামে ওই বিজেপি কর্মীর অভিযোগ, ভোটের ফল ঘোষণার দিন রাতেই আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছিল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদল । তারা জোর করে বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর চালায় । এমনকি ঘরের বারান্দার লোহার গ্রিল কেটে ভিতরে ঢোকার চেষ্টাও করে । কিন্তু আমাদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এলে দুষ্কৃতীদল পালিয়ে যায় ।’ তিনি বলেন,’ফের হামার আশঙ্কায় এখন আমরা খুব আতঙ্কের মধ্যে আছি ।’
প্রসঙ্গত,পশ্চিমবঙ্গে যেকোনো ভোটের পর ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা কার্যত নিয়মমাফিক হয়ে গেছে । এক্ষেত্রে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও বিস্তর অভিযোগ তুলছে বিজেপিসহ বিরোধী দলগুলি । লোকসভা ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর রাজ্যের বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি রাজধানী কলকাতাতেও ঘটছে ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা ।।