এইদিন ওয়েবডেস্ক,নোয়াখালী(বাংলাদেশ),০৭ জুন : অনেক আশা নিয়ে মেয়েকে উচ্চশিক্ষিত করে উকিল বানাতে পাঠিয়েছিলেন বাংলাদেশের নোয়াখালীর পৌরসভার-২ নম্বর ওয়ার্ডের মাইজদীর উকিল পাড়ার নরেশ চন্দ্র দে । কিন্তু কলেজে পড়াশোনা করতে গিয়ে লাভ-জিহাদে ফেঁসে যায় তার মেয়ে তিশা দে (১৯) । বাড়ির অমতে প্রেমিকের হাত ধরে বেড়িয়ে গিয়ে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়ে তাকে নিকাহ করে । এদিকে মেয়ের কৃতকর্মের জন্য হতাশায় ভুগতে শুরু করেন নরেশ চন্দ্রবাবু । শেষ পর্যন্ত তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান । এদিকে বাবার মৃত্যুর পর নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনায় বাবার মৃত্যুর প্রায় আধ ঘন্টার মধ্যে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয় ওই তরুনী । বৃহস্পতিবার নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর মৃতদেহ দুটি পরিবারের হাতে তুলে দেয় পুলিশ।
জানা গেছে,তিশা ফেনীর একটি কলেজে পড়াশোনা করত । কলেজের এক মুসলিম সহপাঠীর সঙ্গে সে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে । প্রেমিকের কথামত সে ধর্মান্তরিত হয়ে তাকে নিকাহ করে তিশা । বিষয়টি জানতে পেরে নরেশ চন্দ্র দে মেয়েকে গত মঙ্গলবার ফেনী থেকে নোয়াখালীর মাইজদীর নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন । তিনি মেয়েকে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেন । কিন্তু সে যেন তার স্বামীর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে অস্বীকার করে । এনিয়ে বাবার সঙ্গে তুমুল তর্কবিতর্কও করে ওই তরুনী ।
জানা গেছে, বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তিশার ভাই স্কুলে যাওয়ার সময় বাবার কাছে টিফিনের টাকার জন্য গেলে দেখে তার বাবার নিথর দেহ ঘরের মধ্যে পড়ে আছে ।নরেশ চন্দ্র দে কিডনির রোগে আক্রান্ত ছিলেন । তার ডায়ালাইসিস চলত । হৃৎরোগে আক্রান্ত হওয়ার সময় ছটফট করায় ডায়ালাইসিসের ফিস্টুলার স্থানে চাপ পড়ে প্রবল রক্তক্ষরণ হয় । ছেলে দেখে যে রক্তে ভেসে যাচ্ছে গোটা ঘর । এই দৃশ্য দেখে সে চিৎকার করে ওঠে । পরিবারের লোকজন নরেশ চন্দ্রবাবুকে উদ্ধার করে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যায় । কিন্তু চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন । এদিকে বাবার মৃত্যুর পর অনুশোচনায় বাড়ির একটা ঘরের দরজা লাগিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়নার ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয় ওই তরুনী ।
পরিবারের সদস্যরা দরজা ভেঙে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে। খবর পেয়ে দুপুর দেড়টার নাগাদ স্থানীয় সুধারাম থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় । সুধারাম থানার ওসি মীর জাহেদুল হক রনি বলেন, নরেশ চন্দ্র দাস কিডনির রোগী ছিলেন। তিনি বাড়িতে ডায়ালাইসিস করতেন। তার মেয়ে ফেনী মেডিকেলে পড়ত। সেখানে একজন মুসলিম ছেলেকে ধর্মান্তরিত করে বিয়ে করে। বিষয়টি তিনি ভালোভাবে নেননি। এজন্য মেয়েকে ফেনী থেকে নিয়ে আসেন। বাড়িতে এনে মেয়েকে সারা রাত বুঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তার মেয়ে স্বামীকে ছাড়তে রাজি হয়নি । এ নিয়ে বাবা ও মেয়ের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি হয় । সেই সময় অসুস্থ হয়ে পড়লে নিজের ঘরে বিশ্রাম নিতে চলে যান নরেশ চন্দ্র দে । কিন্তু তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় । সেই সময় ছটফট করলে ডায়ালাইসিসের ফিস্টুলার স্থান থেকে রক্তপাত হয় । এদিকে বাবার মৃত্যুর আধাঘণ্টা পর মেয়ে আত্মহত্যা করে।।