এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,৩১ মে : ৬-দফার লোকসভার ভোট সম্পূর্ণ । সপ্তম তথা শেষ দফার ভোট হবে আগামীকাল শনিবার । ডায়মন্ড হারবার, বসিরহাট, কল্পকাতা উত্তর ও দক্ষিণ, দমদম, যাদবপুরসহ বিভিন্ন আসনে ভোট হতে চলেছে কাল । তার আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপির প্রতিনিধিদল রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে বেশ কিছু অভিযোগ জানিয়ে আসেন । কমিশনের অফিস থেকে বের হয়ে শুভেন্দু তৃণমূলের নির্বাচনী কর্মকাণ্ড পরিচালনাকারী সংস্থা আইপ্যাককে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘গননা কেন্দ্রে যদি আইপ্যাকের একটা চোরও ঢোকে তাহলে গনধোলাই দেওয়া হবে ।’
শুভেন্দু বলেন,’ষষ্ঠ দফার ভোটে আমাদের দুটো তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরছি , একটা হচ্ছে, কোন কেস না থাকা সত্ত্বেও, এফআইআর এ নাম না থাকা সত্ত্বেও, মমতা ব্যানার্জির দলদাস হয়ে ওনার পাপোশ কিছু পুলিশ, যেমন ধৃতিমান সরকারকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরে সৌম্যদীপ বলে আর একটা এঁচোড়ে পাকা এসপি আছে, বিষ্ণুপুরে একটা এসডিপিও আছে, এরা ওভার অ্যাক্ট করেছে, ৫০ জনের মত বিজেপির পোলিং এজেন্ট ও কার্যকর্তা, তাদের মধ্যে জেলার জিএসও আছে, তাদেরকে আটকানো হয়েছে এবং শতাধিক বাড়িতে পুলিশ পুলিশ রেড করে পরিবারের লোকজনদের রাতে ঘুমোতে পর্যন্ত দেয়নি ।’
তাঁর অভিযোগ,’ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রে আমাদের পার্টির জিএস তন্ময় ঘোষকে ২০১৪ সালের কেসে ফরওয়ার্ড করা হয়েছে, যেএফআইআরে তার নাম নেই । নন্দীগ্রামে মন্ডল সভাপতি ধনঞ্জয়কে এমন একটা কেসে ফরওয়ার্ড করা হয়েছে যার এফআইআরে তার নাম নেই । আদালতে পুলিশের কাছে ছবি চাওয়া হয়েছিল যে ছবিতেও তাকে দেখতে পাওয়া যায়নি। পশ্চিম মেদিনীপুরের যুব মোর্চার সভাপতিকে আটকে রাখা হয়েছে, এরকম অসংখ্য উদাহরণ আছে । কেশিয়াড়ির আইসি বিশ্বজিৎ হালদার আমাদের ১২ জন পোলিং এজেন্টকে থানায় এনে বসিয়ে রেখেছেন এবং পরের দিন সন্ধ্যা ছটার পরে ছেড়েছে ।’
তিনি বলেন,:আমরা মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে বলেছি, ১০৭ কাটলে আদালতে গিয়ে আত্মসমর্পণ করতে এবং সিআরপিসি আইপিসি অনুযায়ী কোর্ট থেকে জামিন নেবে । মমতার পুলিশের জন্য আলাদা নিয়ম নেই । দ্বিতীয়ত,ধারা ৪১ এর নোটিশ ছাড়া কাউকে ডাকার কোন অধিকার তদন্তকারীর আধিকারিক বা আইওর নেই । আমরা সিওকে এটা বলেছি এবং সিও বলেছেন সপ্তম দফার ভোটে আপনাদের পোলিং এজেন্ট এবং নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা কর্মী যাদের আজ পর্যন্ত ধারা ৪১-এ নোটিশ করা হয়নি, যারা সম্ভাব্য কাউন্টিং এজেন্ট, কাদের তালিকা আপনি আমাদের কাছে পাঠাবেন । আমি স্পষ্ট নির্দেশ দেব আদালতের ওয়ারেন্ট ছাড়া তাদের গ্রেপ্তার করা যাবে না ।’
শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যের সমস্ত বিরোধী দলের কর্মীদেরকে আবেদন জানান,’পুলিশ ডাকলেই থানায় যাবেন না । বাড়িতে গেলে দরজা খুলবেন না । সেকসন ৪১-এর নোটিশ ছাড়া একজনও থানায় যাবেন না ।
উত্তর কলকাতাতে চোরর মমতা কালকে বিনীত গোয়েলের মাধ্যমে ওসিকে লাগিয়েছে । সপ্তম দফায় ডায়মন্ড হারবার, সন্দেশখালি প্রভৃতি জায়গায় ওরা এটা করবে, পুলিশবাবা পার করেগা ।’ তিনি বলেন,আপনারা দেখেছেন যে সন্দেশখালিতে অবৈধভাবে গ্রেপ্তার করা প্রত্যেককে কলকাতা হাইকোর্ট অবিলম্বে জামিন দিতে বলেছে । বিচার ব্যবস্থা এগিয়ে এসেছে পশ্চিমবঙ্গের গণতন্ত্র বাঁচানোর জন্য ।’
শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ,’এই সমস্ত নোংরামি গুলো করছে মমতার পুলিশ আর আইপ্যাকের চোর -চিটিংবাজ গুলো৷ আমি আইপ্যাকের লোকেদেরকে হুঁশিয়ারি দিচ্ছি, থানা খুলে যেমন ধোলাই হয়েছে, আপনারা যদি গণনা কেন্দ্রে ঢোকেন তাহলে আমাদের কে একই রকম ভাবে ধোলাই দেওয়া হবে । অন দা রেকর্ড বলছে, যা পারেন করে নেন ।’ তিনি ফের বলেন,’থানা খুলে যেভাবে জনগণ সাইজ করেছে, এবারে গণনা কেন্দ্রে যদি আইপ্যাক-এর একটা চোর ঢোকে তাহলে আমরা যা করার করব ।’
শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ,’ষষ্ঠ দফায় ৪৭৪ টা ওয়েব কাস্টিং ক্যামেরা অফ ছিল সন্ধ্যা সাড়ে ৮ টা পর্যন্ত । বিজেপির অভিযোগের পরে ক্যামেরা গুলো অন করার ব্যবস্থা হয় । কোথাও লোডশেডিং করে কোথাও তার খুলে ক্যামেরা অফ করে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ তার । তিনি বলেন,’তারপরেও দিনের শেষে ১৫০ এর কাছাকাছি ক্যামেরা চলেনি । তার মধ্যে ৭০ টা ছিল শুধু কেশপুরে । সুন্দরবনের যেখানে ওয়েব কাস্টিং ক্যামেরা নাই সেখনে ভোটের সময় যাত অন্তত সাংবাদিকেরা থাকতে পারে সেজন্য তিনি ওই সমস্ত বুথের তালিকা নির্বাচন কমিশনের কাছে চেয়েছেন বলে জানান । শুভেন্দু বলেন,’মমতা ব্যানার্জিকে ছাড়বো না । গণতন্ত্রের মহোৎসবে ডু অর ডাই । আমরা শেষ দেখে ছাড়বো ।’।