এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভোপাল,৩০ মে : মুখে পলিথিনের প্যাকেট মোড়া । পাশে পড়ে নাইট্রোজেন গ্যাসের একটা সিলিন্ডার । সিলিন্ডারের থেকে বের হওয়া পাইপ চলে গেছে পলিথিনের প্যাকেটের ভিতর । মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপালের জাটখেদি এলাকার নিরুপম রয়্যাল ক্যাম্পাসের একটা ঘরে এভাবে এক যুবকের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে কার্যত চমকে যান তাবড় পুলিশ আধিকারিকরা । যুবকের মৃতদেহের পাশেই পড়েছিল চার পৃষ্ঠার সুইসাইড নোট। তাতেই তিনি লিখে যান আত্মহত্যার কারন ও অদ্ভুত পদ্ধতির কথা ।
জানা গেছে,মৃত যুবকের নাম সিদ্ধার্থ খুরানা । তার বাড়ি উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ে। তিনি একজন আইটি প্রফেশনাল হিসেবে কাজ করতেন । কর্মসূত্রে থাকতেন ভোপালের জাটখেদি এলাকার নিরুপম রয়্যাল ক্যাম্পাসের একটি ঘরে । পাশের ঘরে থাকত তার এক বন্ধু । দিন কয়েক আগেই বন্ধু বাড়ি চলে গিয়েছিল । একাই ছিলেন সিদ্ধার্থ । দুই দিন সিদ্ধার্থকে না দেখতে পেয়ে সে তার ঘরে গিয়ে দরজা ধাক্কা দেয় এবং দরজা না খুললে পুলিশকে খবর দেয় । এরপর পুলিশ গিয়ে দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকলে সিদ্ধার্থকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ।
মৃত যুবক সুইসাইড নোটে লিখে গেছেন যে তিনি জীবন নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছিলেন । চারদিক থেকে ব্যর্থতার মুখোমুখি হয়ে তিনি অবসাদগ্রস্ত হয়ে জীবন শেষ করার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন । আত্মহত্যার পদ্ধতিও বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে গেছেন ওই যুবক । সুইসাইড নোটে তিনি লিখেছেন, তিনি আত্মহত্যার সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি ইউটিউবে অনুসন্ধান করেন । তার মধ্যে তিনটি পদ্ধতি তার দৃষ্টি আকর্ষণ করে । শেষে তিনি নাইট্রোজেনকে তিনি বেছে নেন । সিদ্ধার্থের বাবা পুলিশকে জানান, তার ছেলে একটি রোগে ভুগছিল যার কারণে তার মেরুদণ্ড ও পিঠে ব্যথা হত । এ কারণে সে দীর্ঘ দিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিল এবং চিকিৎসাও চলছিল তার । জীবন নিয়ে হতাশা থেকে ছেলে এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানান তিনি ।
প্রাথমিকভাবে পুলিশও মনে করছে যে ওই যুবক আত্মঘাতী হয়েছেন । বিষয়টি নিশ্চিত হতে ময়নাতদন্তের জন্য অপেক্ষা করছে পুলিশ । তবে যুবকের আত্মহত্যার অদ্ভুত পদ্ধতিতে বিস্মিত খোদ পুলিশও ।
বিঃ দ্রঃ – মানসিক অবসাদের শেষ পরিণতি আত্মহত্যা কখনোই হতে পারে না । অবসাদ কাটাতে বিশেষজ্ঞরা বেশ কিছু পদ্ধতি মেনে চলার পরমর্শ দিয়েছেন ।বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে নিজেকে কখনো কারও সঙ্গে তুলনা করবেন না। আপনি আপনার মতো করে পারফেক্ট। কারও জন্য নিজেকে বদলানোর দরকার নেই। বরং নিজের প্রয়োজনে যতটুকু দরকার ঠিক ততটুকু বদলান। নিজের সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করুন।
এমন মানুষদের সঙ্গে সময় কাটান কিংবা সম্পর্ক রাখুন যাদের সঙ্গ আপনার ক্ষতি হবে না। অর্থাৎ আপনি নিশ্চিন্তে এগিয়ে যেতে পারবেন। যারা আপনাকে মোটিভেট করে সামনের দিকে এগিয়ে দেবে। সব সময় আপনার পাশে থাকার চেষ্টা করবে।
যখনই এমন কোন ক্ষতিকর চিন্তা আসবে, যা আপনার জীবনে খারাপ প্রভাব পড়তে পারে, তখন সেই চিন্তার পজেটিভ কিছু খুঁজে বের করুন। প্রয়োজনে সেই সমস্যার সঙ্গে লড়তে শিখুন। নিজেকে রিলাক্স রাখা এ সময় খুব দরকার। নিজেকে ভুল বোঝানো, নেতিবাচক মনোভাব রাখা এবং সবসময় ভুলভাল কথা ভাবতে থাকা বন্ধ করুন। পজিটিভ চিন্তা করা দরকার, নয়তো উঠে দাঁড়ানো খুব মুশকিল। নিজের ওপর ভরসা রাখুন। নিজের মূল্যটুকু বুঝুন। সবরকম প্ল্যানে আগে থেকে নিজেকে প্রস্তুত রাখুন। চারপাশে থাকা হতাশাগ্রস্ত মানুষদের সঙ্গে সম্পর্ক কিছুদিনের জন্য বন্ধ করুন। দেখবেন ধীরে ধীরে জয় আপনারই হবে। আর কখনো জীবন পথে থেমে যাবেন না, দৃঢ় মনোবল নিয়ে এগিয়ে যান। সাফল্য আসবেই।।