এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,২৭ মে : প্রতিবেশী বাংলাদেশে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। আজ সোমবার ভোর রাতে উপকূলে আছড়ে পরার পর বেশ কয়েকজনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে বলে খবর । তছনছ করে দিচ্ছে ঘর-বাড়ি, দোকান-পাট । বাংলাদেশের মোংলা, সাতক্ষীরার শ্যামনগর, পটুয়াখালীর কলাপাড়া, কুয়াকাটা ও খেপুপাড়ায় ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে রেমাল। শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নে রাতভর প্রবল বৃষ্টির সঙ্গে দমকা হাওয়ায় ভেঙে গেছে ঘর-বাড়ি, গাছ-পালা। জেলার অন্য এলাকাতেও দমকা হাওয়া বইছে। বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে জলে ঢুকে গেছে। রেমালের তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বাংলাদেশের কলাপাড়া, খেপুপাড়া ও কুয়াকাটায়। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বিষখালি-সন্ধ্যা, পায়রা, আন্ধারমানিক, গলাচিপা ও তেতুলিয়া নদীর উপচে পড়া জলে বরগুনা ও পটুয়াখালীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে গেছে।কলাপাড়ায় ঘূর্ণিঝড় রেমাল থেকে পিসি ও বোনকে রক্ষা করতে গিয়ে মোহম্মদ শরীফ (২৪) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। বরগুনায় তলিয়ে গেছে ২৭ টি গ্রাম, ভেঙে গেছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। বলেশ্বর নদীর জলে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে । বাগেরহাটের বলেশ্বর,পানগুছি -খাসিয়াখালি এবং দড়াটানা নদীর জল বিপদ সীমার উপরে বইছে । প্লাবিত হয়েছে শরণখোলা ও মোড়লগঞ্জের বেশ কিছু এলাকা । রেমালের প্রভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে চার ফুট জল বেড়ে প্লাবিত হয়েছে বাংলাদেশের গোটা সুন্দরবন। করমজলসহ বনের উঁচু এলাকাগুলোও জোয়ারের জলে তলিয়ে গেছে। সদর সুন্দরবন হাসপাতালের ভিতরে পর্যন্ত বন্যার জল ঢুকে পড়েছে। বাগেরহাটে পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে।
মোংলার শ্যালা নদী ও পশুর নদীর জল বিপদসীমার অনেক উপরে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে । বাঁধ ভেঙে জল ঢুকে পড়েছে জনবসতি এলাকায় । চট্টগ্রামে রেমালের প্রভাবে প্রবল বৃষ্টিপাত হচ্ছে। পাহাড় ধসের আশঙ্কা করা হচ্ছে। কক্সবাজারে বঙ্গোপসাগরে জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে ২১ টি গ্রাম। নোয়াখালীর হাতিয়ারের বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জলবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। খুলনার দুর্যোগপ্রবণ উপকূলীয় উপজেলা দাকোপ, কয়রা, পাইকগাছা ও বটিয়াঘাটায় ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ দেশের অনেক জেলায় মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে।
বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক জানিয়েছেন, টানা ছয় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে তাণ্ডব চালাবে ঘূর্ণিঝড়টি। এরপর দুর্বল হয়ে স্থলভাগে উঠবে। সকাল নাগাদ এটি দুর্বল হয়ে যাবে । তিনি আরও জানান যে সোমবার ও কাল মঙ্গলবারও সারাদেশেই থেমে থেমে বৃষ্টি হবে। সঙ্গে দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পারে ।।