এইদিন ওয়েবডেস্ক,নন্দীগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),২৩ মে :আজ ভোর রাতে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দীগ্রামে খুন হয়েছেন বিজেপি কর্মী সঞ্জয় আড়ির মা রতিবালা আড়ি(৫৬) । বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ যে রতিবালাদেবীর খুনিদের সঙ্গে আইসি ‘গোপন মিটিং’ করেছেন । শুভেন্দু অধিকারী দুই অভিযুক্তের নামও ক্যামেরার সামনে প্রকাশ করেন । দলীয় কর্মীর মাকে খুনের ঘটনার পর আজ সকালে নন্দীগ্রাম থানায় যান শুভেন্দু অধিকারী । সেই সময় থানার সামনে বেশ কয়েকজন বিএসএফ জওয়ানকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় । শুভেন্দু তাদের উদ্দেশ্যে বলেন,’নন্দীগ্রাম জ্বলছে । আর আপনাদের থানায় দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে । আপনারা যেভাবে জম্মু-কাশ্মীরকে ঠান্ডা করেছেন সেই ভাবে নন্দীগ্রামকেও ঠান্ডা করে দিন । ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলুন ।’
এরপর এফ আই আর নম্বর নিতে থানায় ঢোকেন শুভেন্দু অধিকারী । দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ আধিকারিকের কাছে তিনি এফ আই আর নম্বর চেয়ে তিনি বলেন,’রতিবালা আড়ি শুধু সঞ্জয়ের মা ছিলেন না, আমারও মা । আমার মাকে খুন করা হয়েছে । আর খুনিদের সাথে মিটিং করেছে আপনাদের আইসি ।’ এরপর ওই পুলিশ আধিকারিক এফআইআর নম্বর দিলে তিনি থানা থেকে বেরিয়ে আসেন । তবে থানার ভিতরে থাকার সময়েই শুভেন্দু অধিকারী হুঁশিয়ারি দেন, ‘আইসিকে সাসপেন্ড করিয়ে ছাড়ব ।’ বাইরে এসে তিনি হুঁশিয়ারি দেন, ‘তৃণমূলের ১১ টা গুন্ডাকে ঘরছাড়া করেছি। বাকিগুলিকেও ঘরছাড়া করব, আমাকে চেনে না ।’ ‘তৃণমূলের গুন্ডাদের পিটিয়ে সোজা করব’ বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি ।
পরে নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে গিয়ে আহত দলীয় কর্মীদের স্বাস্থের খবর নিতে যান শুভেন্দু অধিকারী । একজন আহতের সঙ্গে নিচু গলায় কথা বলতেও শোনা যায় তাঁকে । পরে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পেজে লেখেন,’গতকাল কয়লা ভাইপোর উস্কানিতে তোলামুলের গুন্ডারা সোনাচুড়ার সাউদখালিতে রাত্রি ২টোর সময় তফসিলি সম্প্রদায়ের একটি পাড়ায় আক্রমণ করে। তৃণমূলের আক্রমনে বিজেপির সমর্থক ৫৬ বছর বয়সী শ্রীমতি রথী বালা আড়ি গুরুতর আহত হন এবং রক্তাক্ত অবস্থায় মারা যান। মৃত রথী বালা আড়ির ছেলে সক্রিয় কার্যকর্তা সঞ্জয় আড়ি সহ আমাদের সাত জন আহত হন। সঞ্জয় আড়ি কে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং বাকিদের ভোরে নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিন জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয় এবং বাকি তিন জনের আঘাত গুরুতর হওয়ায় তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আজ আহতদের দেখতে হাসপাতালে গেছিলাম। একজনের একটি চোখে আঘাত আছে তার উন্নত চিকিৎসা পরিষেবার প্রয়োজন। ওনাকে কলকাতায় হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি।আমরা প্রশাসনের কাছে দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। আহতরা সুস্থ্য হয়ে বাড়ি না ফেরা পর্যন্ত আমরা বিজেপি পরিবার তাদের প্রত্যেকের পাশে আছি।’
প্রসঙ্গত,শনিবার ভোট মেদিনীপুরে । তার আগে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে নন্দীগ্রাম । নন্দীগ্রামে দলীয় কর্মীদের উপর হামলায় মমতা ব্যানার্জি ও অভিষেক ব্যানার্জির বিরুদ্ধে ‘উসকানি দেওয়ার’ অভিযোগ তুলে প্রচারের ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়েছে গেরুয়া শিবির ।।