এইদিন ওয়েবডেস্ক,কেতুগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),২২ মে : উত্তরপ্রদেশের মহারাজগঞ্জ জেলায় কাজে গিয়ে ২২ বছরের মুসলিম তরুনী সাহিদা খাতুনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম থানার নৈহাটি গ্রামের বাসিন্দা সুমন বারুই নামে এক যুবক । সেখানকার একটি মন্দিরে তারা বিয়ে করে । আইনগতভাবে ধর্ম পরিবর্তন করে তরুনী সাহিদা খাতুন থেকে হন লক্ষী বারুই । কিন্তু ধর্ম পরিচয় আলাদা হওয়ায় সুমনের পরিবার নববধূকে মেনে নিতে অস্বীকার করে । এদিকে ভিন রাজ্যে এসে এই প্রকার পরিস্থিতে পড়ে অতান্তরে পড়ে যান তরুনী । শ্বশুরবাড়ির সামনে কান্নাকাটি করতে দেখে বধূর পাশে এসে দাঁড়াল নৈহাটি গ্রামের বাসিন্দারা । তাদের দাবি তরুনীকে বধূর মর্যাদা দিয়ে অবিলম্বে শ্বশুরবাড়িতে সসম্মানে থাকতে দিতে দিতে হবে । যদিও বর্তমানে কেতুগ্রাম থানার আশ্রয়েই রয়েছেন বধূ ।
জানা গেছে,নৈহাটি গ্রামের মাসিসাঁকো পাড়ার বাসিন্দা বাসুদেব বারুই ও অঞ্জনা বারুইয়ের তিন ছেলের মধ্যে মধ্যে বড় সুমন । তিনি উত্তরপ্রদেশের মহারাজগঞ্জ জেলার একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন । ওই এলাকারই মেয়ে সাহিদা খাতুন ওরফে লক্ষী বারুই । সেখানেই সাহিদার সঙ্গে পরিচয় ও প্রেম সুমনের । সাহিদার কথায়, ‘আমরা প্রথমে মন্দিরে গিয়ে বিয়ে করি । পরে আইনি প্রক্রিয়া মেনে আমি নিজের ধর্ম পরিবর্তনও করি এবং রেজিস্ট্রি ম্যারেজ করি । কিন্তু আমি মুসলিম বলে আমার শ্বশুরবাড়ি আমাকে স্বীকৃতি দিতে চাইছে না । শ্বশুরবাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না আমাকে ।’
স্থানীয় সূত্রে খবর,সাহিদা খাতুনকে সুমনের বাবা-মা বাড়িতে ঢুকতে দিতে অস্বীকার করলে তিনি ভিন রাজ্যের একটা প্রত্যন্ত গ্রামে এসে অতান্তরে পড়ে যান । বাধ্য দিয়ে তিনি শ্বশুরবাড়ির সামনে বসে কান্নাকাটি করতে থাকেন । শ্বশুর-শাশুড়িকে বাড়িতে ঢুকতে দেওয়ার জন্য তিনি বারবার অনুনয় বিনয় করেন । কিন্তু তাতেও মন গলেনি শ্বশুর-শাশুড়ির । এদিকে সোমবার থেকে বধূকে অসহায় অবস্থায় দেখে গ্রামবাসীরা এগিয়ে আসেন । স্থানীয় বাসিন্দা দীনবন্ধু বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা বধূকে বাড়িতে সসম্মানে থাকতে দেওয়ার জন্য সুমনের বাবা-মাকে বারবার অনুরোধ করেছি । কিন্তু তারা কিছুতেই মানতে চাইছেন না । তাই আমরা বিষয়টি কেতুগ্রাম থানায় জানাতে বাধ্য হই ।’
জানা গেছে,গ্রামবাসীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে নৈহাটি গ্রামে আসে পুলিশ । পুলিশ বধূকে থানায় নিয়ে থানায় নিয়ে যায় । তারপর থেকে কেতুগ্রাম থানাই হয়ে উঠেছে বধূর অস্থায়ী ঠিকানা । এদিকে সুমনকে বারবার ফোন করা হলে তিনি কল রিসিভ করছেন না । স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন,বিয়ের পর সুমন তার স্ত্রীকে নিজের বাড়িতে নিয়ে এসেছিল। বেশ কয়েকদিন নৈহাটি গ্রামে থাকার পর ফের সে স্ত্রীকে নিয়ে মাস দুয়েক আগে উত্তরপ্রদেশে কর্মস্থলে চলে যায় । গত সোমবার বধূ একাই নৈহাটি গ্রামে শ্বশুরবাড়ি চলে আসেন। কিন্তু তাকে শ্বশুরবাড়িতে ঢুকতে দিতে অস্বীকার করেন সুমনের বাবা-মা । গ্রামবাসীদের অনুমান,বাবা-মায়ের মতিগতি টের পেয়ে সুমনও তার স্ত্রীকে আর নিতে চাইছে না । এনিয়ে তীব্র প্রতিবাদ করেছে গ্রামবাসী । আজ বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী কেতুগ্রাম থানায় এসে লক্ষ্মীকে তার শ্বশুরবাড়িতে পূর্ণ মর্যাদার সঙ্গে বসবাস করতে দেওয়ার দাবি জানান ।।