এইদিন ওয়েবডেস্ক,উত্তর ২৪ পরগণা,১৪ মে : সন্দেশখালি নিয়ে শাসক-বিরোধী চাপানউতোর অব্যাহত । দু একজন মহিলা সংবাদ মাধ্যমের ক্যামেরার সামনে এসে দাবি করছেন যে তাদের সঙ্গে ধর্ষণ বা গণধর্ষণের ঘটনা কিছুই ঘটেনি । অন্যদিকে বৃহৎ সংখ্যক মহিলারা তৃণমূলের নেতা শেখ শাজাহান বাহিনীর বিরুদ্ধে পিঠে খাওয়ার নাম করে পার্টি অফিসে ডেকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ বা গণধর্ষণ করার অভিযোগ সত্যি বলে দাবি করছেন । তৃণমূল ও বিজেপির তরফে একের পর এক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে দাবি ও পাল্টা দাবি করছে । লোকসভা ভোটে পর্বের মাঝেই সন্দেশখালি নিয়ে তৃণমূল-বিজেপির এই চাপানউতোর নতুন মাত্রা পেয়েছে । এরই মাঝে একের পর এক ঘটনা ঘটে চলেছে সন্দেশখালিতে ।
রবিবার বিজেপির সন্দেশখালি থানা ঘেরাও কর্মসূচি ঘিরে তুলকালাম কাণ্ড বেধে যায় । বিজেপি দাবি তুলেছে যে তৃণমূল যে সমস্ত ভিডিওগুলোকে যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়াচ্ছে সেগুলি সম্পূর্ণ ভুয়ো । তৃণমূল সন্দেশখালিকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ তুলেছে বিজেপি । বিজেপির থানা ঘেরাও কর্মসূচি ছাড়াও আর একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে । সেই ভিডিওতে দুই তৃণমূল নেতাকে গণধোলাই দিতে দেখা গেছে সন্দেশখালি মহিলাদের । জানা গেছে ওই দুই তৃণমূল নেতা হলেন তৃণমূল বিধায়ক সুকুমার মাহাতো, পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ দিলীপ মল্লিক। তৃণমূল নেতাদের মারধোরের ঘটনার পর ব্যাপক ধরপাকড় অভিযান শুরু করেছে পুলিশ । পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে রাতের অন্ধকারে বাড়িতে ঢুকে মহিলা পুরুষ পুরুষদের তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে । সন্দেশখালী সাধন মানুষের গ্রেপ্তারি এড়াতে এবারে রাত জেগে হাতে লাঠি ও ঝাঁটা নিয়ে পাহারা দিতে শুরু করেছেন মহিলারা ।
রাত পাহাড় আর একটি ভিডিও নিজের এক্স হ্যান্ডেল এ শেয়ার করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় আইটি ইনচার্জ অমিত মালব্য । ওই ভিডিওতে জনৈক এক মহিলাকে বলতে শোনা গেছে,’তৃণমূলের সাথে পুলিশ আমাদের ওপর অত্যাচার করছে । পুলিশ রাতের বেলায় হানা দিয়ে ঘরে ঢুকে মহিলা পুরুষদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে । পুলিশ তৃণমূল নেতাদের সাথে নিয়ে বিজেপির ছেলেমেয়েদের রাতের অন্ধকারে তুলে নিয়ে যাচ্ছে । আমরা প্রতিবাদ করলে আমাদের মারধোর করছে এবং জামা কাপড় ছিড়ে দিয়ে চলে যাচ্ছে । তাই আমরা ঠিক করেছি আমরা মা বোনেরা রাত জেগে সন্দেশখালীর রাস্তায় পাহারা দেব । আজকের পর থেকে আর কোন মহিলা ও পুরুষকে আমরা গ্রেপ্তার হতে দেবো না । আমাদের সংগ্রাম চলছে চলবে ।’
প্রতিক্রিয়ায় অমিত মালব্য লিখেছেন, ‘সন্দেশখালীতে মহিলাদের বেআইনিভাবে আটক করার পরে, তারা রাতভর নজরদারিতে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ, স্থানীয় টিএমসি গুন্ডাদের সাথে, মিথ্যা অজুহাতে বিজেপি পরিবারের মহিলা সদস্যদের আর গ্রেপ্তার করতে না পারে।ভাবুন, প্রথমে শেখ শাহজাহান বাহিনীর দ্বারা এই নারীদেরকে ভয়ঙ্কর যৌন নির্যাতনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিলেন এবং এখন মুখ্যমন্ত্রী তাদের উপর এমন নির্যাতন করছেন। এই কর্মের ফল তিন শীঘ্রই হাতেনাতে পাবেন ।’
এরপর তিনি লিখেছেন,’এদিকে, শুনুন সন্দেশখালীর প্রতিবাদী নারীরা কি বলছেন…
স্থানীয় পুলিশ, টিএমস্যার নেতাদের তত্ত্বাবধানে সন্দেশখালীর মা-বোনদের উপর জঘন্য অত্যাচার করছে। তারা মধ্যরাতে বিজেপি কর্মীদের বাড়িতে ঢুকে পরিবারের সদস্যদের এমনকি মহিলা সদস্যদেরও মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করে জেলে ঢোকাচ্ছে। আমরা প্রতিবাদ করার চেষ্টা করলে, তারা আমাদের মারধর করে এমনকি আমাদের জামাকাপড় ছিঁড়ে দেয়… তাই, আমরা এই টিএমসি বাহিনীর বিরুদ্ধে সন্দেশখালীর রাস্তায় রাতে পাহারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই প্রক্রিয়ায় আমাদের মারধর হলেও আমরা আমাদের মা-বোনদের মিথ্যা অজুহাতে আর গ্রেপ্তার হতে দেব না। সন্দেশখালীর বোন-মায়েদের প্রতিবাদ চলছে এবং বাড়তেই থাকবে! অতএব, আমরা আজ থেকে এই লাঠি এবং ঝাড়ু নিয়ে পাহারা দেব, যাতে এই টিএমসি গুন্ডারা, পুলিশ সহ, আমাদের মা, বোন এবং ভাইদের আর গ্রেপ্তার করতে না পারে।’।