এইদিন ওয়েবডেস্ক, মুজাফফরাবাদ (পিওজেকে), ১২ মে : পাকিস্তান অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরে (POJK) গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে । পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে জনগণ ক্ষোভ ফেটে পড়ে । পিওজেকের রাজধানী মুজাফফরাবাদের বাসিন্দারা শনিবার বনধের ডাক দিয়েছিল । গোটা শহর জুড়ে তুমুল বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয় । প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করলেও জনগণের ক্ষোভ থামেনি। সেই সময় বিক্ষোভকারীরা ভারতের পতাকা ওড়ায় । পুলিশ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগ করলে ব্যাপক সংঘর্ষ বেধে যায় । পিছু ধাওয়া করে পুলিশকে ধরে ব্যাপক মারধর করা হয় । গনধোলাইয়ে মৃত্যু হয় পুলিশ পরিদর্শক আদনান কুরাইশির ৷ নিহতের বাড়ি মিরপুরে এবং তার তিন সন্তান রয়েছে । আহত হয়েছে আরও বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী । পালটা গুলি ছোড়ে পুলিশও । পাশাপাশি নাগরিকদের ধরে নিয়ে নির্দয়ভাবে মারধর করেছে পুলিশ । মুজাফফরাবাদের কোটলি থেকে আসা একটি কনভয় থেকে উপর রায়ান শরীফ দরবারের কাছে জনতাকে লক্ষ্য করে ব্যাপক গোলাগুলি চালায়, ফলে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। ক্ষিপ্ত জনতা সহকারী কমিশনারের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় । পুলিশের ছোড়া গুলি লেগে এবং মারধরে ৫০ জনেরও বেশি স্থানীয় লোক আহত হয়েছে বলে জানা গেছে । সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পুলিশকে মারধর ও জনতাকে লক্ষ্য করে পুলিশের গুলি চালানোর বেশ কিছু ভিডিও ভাইরাল হয়েছে । তার মধ্যে একটি ভিডিওতে এক পুলিশ আধিকারিকের হেলমেট ও ইউনিফর্ম খুলে নিতে দেখা যায় ।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে, শনিবার (১১ মে ২০২৪), পিওকে-র মুজাফফরাবাদের লোকেরা একটি বিক্ষোভের পাশাপাশি বনধের ডাক দিয়েছিল। এতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে । সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে রাস্তায় নেমে আসে স্থানীয় লোকজন। জম্মু ও কাশ্মীর জয়েন্ট আওয়ামী অ্যাকশন কমিটি (জেকেজেএএসি) দ্বারা পিওকেতে পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়েছিল বলে জানা গেছে । প্রকৃতপক্ষে, শুক্রবার (১০ মে, ২০২৪ ) পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের (পিওকে) মুজাফফরাবাদে শাটার-ডাউন এবং সড়ক-জ্যাম ধর্মঘটের সময়, পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়েছিল, যার কারণে ঘরবাড়িতে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এর পর বিক্ষোভকারীদের পাথর ছোড়ে নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে । আর এই কারনে শনিবারও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। শনিবারের ধর্মঘট সামহানি, সেহানসা, মিরপুর, রাওয়ালকোট, খুইরাট্টা, তাতাপানি এবং হাতিয়ান বালা সহ পিওকে-এর বিভিন্ন অংশে পালিত হয়েছিল।
মুজাফফরাবাদ ও মিরপুর বিভাগে রাতভর অভিযান চালিয়ে তার বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করার পর জেকেজেএএসি ধর্মঘট ঘোষণা করেছিল। কমিটি এর আগে শনিবার মুজাফফরাবাদ অভিমুখে লং মার্চের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিল।
যদিও ধর্মঘটের আগেই সমগ্র পিওকে জুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করেছিল প্রশাসন । শুক্র ও শনিবার সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করে দেওয়া হয় । তা সত্ত্বেও পিওকে-র সমস্ত জেলায় হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে ।।