এইদিন ওয়েবডেস্ক,রায়না(পূর্ব বর্ধমান),১১ মে : জামিন পাওয়ার পর মমতা ব্যানার্জির ভবিষ্যৎ নিয়ে একটা মন্তব্য করেছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল । আর কেজরিওয়ালের এই মন্তব্যকে সমর্থন করেছেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । তিনি বলেন,’আমি একটু আগেই একটা চ্যানেলের খবর দেখছিলাম অন্তর্বর্তী জামিনে মুক্তি পাওয়া মদ কেলেঙ্কারিতে যুক্ত অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে । তিনি একটু আগে বলছিলেন বিজেপি যদি ক্ষমতায় আসে তাহলে মমতা ব্যানার্জিও জেলে যাবে । ওনার মুখে ফুল চন্দন পড়ুক । গোটা বাংলা তাই চাইছে । অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মুখে ফুল চন্দন পড়ুক এবং ঠগী পিসি জেলে যাক এটা সবাই চাইছে ।’
এরপর তিনি বলেন,’কারণ এই পিসির লোকেরা কি খায়নি আপনারা বলুন? শৌচালয়, আবাস যোজনা, ঝড়ে ক্ষতিপূরণ, নলবাহিত বাড়িতে জল, প্রধানমন্ত্রী কৃষাণ সম্মান নিধি, ভাতা অধিকাংশ লোকই আপনারা বঞ্চিত হয়েছেন । ১০০ দিনের কাজে ১ কোটি ৩২ লক্ষ ভুয়া জব কার্ড বেরিয়েছে । তৃণমূল নেতারা ১৫ টা ১৭ টা করে পুকুর দেখিয়ে টাকা তুলে নিয়েছে। ফলের বাগান করার জন্য মাথাপিছু পনেরো হাজার টাকা করে দিয়েছিল ভারত সরকার । এরা কাগজপত্র দেখিয়ে এক একজন আড়াইশো তিনশো করে বাগানের টাকা তুলে নিয়েছে । আপনাদের দেয়নি । অন্যদিকে গোটা পশ্চিম বর্ধমান গোটা পূর্ব বর্ধমান এবং পশ্চিম বর্ধমানের গোলসি, বুদবুদ, বিষ্ণুপুর মহকুমা, আরামবাগের একাংশ, বীরভূমের একাংশ,নিম্ন দামোদর এলাকাতে প্রকৃতি মা আমাদের যে সম্পদ দিয়েছেন, যার রাজস্ব সরকারের ঘরে যাওয়ার কথা, সেই বালি কিভাবে লুট হচ্ছে ! একটা যদি বৈধ কারণ থাকে তাহলে ৫০ টা অবৈধ খাদান । নদীর গতিপথ সব জায়গায় কেটেকুটে তা যেন করে দিয়েছে । কোথাও নদীর অস্তিত্ব নেই ।’
ফের তিনি এলাকার স্থানীয় নেতাদের নিশানা করে বলেছেন,’পূর্বস্থলীর বাড়ি চোরের নাম সুব্রত পাল৷ ভাতারের বালিজুরওয়ে নাম অশোক হাজরা । কেতুগ্রাম ও মঙ্গলকোটের বালি মাফিয়া হলেন লালন । যে বামাকে জেলে ঢুকিয়েছিল পুলিশ, ২০২১ সালে তার সাথে চুক্তি করে এলাকায় বালি তোলার পূর্ণ দায়িত্ব তাকে দিয়েছে । উনি মাল তোলেন, পুলিশ ভাগ পায়, আর ৭৫ ভাগ ভাগের টাকা কলকাতায় ভাইপোর বাড়িতে যায় । এই চোর এদেরকে আপনাদের হারাতে হবে৷’
মমতা ব্যানার্জিকে আক্রমণ করে শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’ এর আগে ‘স’ শুনেছি, ‘ব’ শুনেছি, আজ ‘ল’ শুনলাম । এত কুৎসিত ভাষায় এই মুখ্যমন্ত্রী ভাষণ দেন এবং কুৎসিত ভাষায় আক্রমণ করেন দেশের প্রধানমন্ত্রীকে ভাবতে পারবেন না ।’
১০০ দিনের কাজে ১ কোটি ৩২ লক্ষ ভুয়া জব কার্ড বেরিয়েছে । তৃণমূল নেতারা ১৫টা ১৭ টা করে পুকুর দেখিয়ে টাকা তুলে নিয়েছে। ফলের বাগান করার জন্য মাথাপিছু পনেরো হাজার টাকা করে দিয়েছিল ভারত সরকার । এরা কাগজপত্র দেখিয়ে এক একজন আড়াইশো তিনশো করে বাগানের টাকা তুলে নিয়েছে । আপনাদের দেয়নি ।
অন্যদিকে ওটা পশ্চিম বর্ধমান গোটা পূর্ব বর্ধমান এবং পশ্চিম বর্ধমানের গোলসি, বুদবুদ, বিষ্ণুপুর মহকুমা, আরামবাগের একাংশ, বীরভূমের একাংশ নিম্ন দামোদর এলাকাতে প্রকৃতি মা আমাদের যে সম্পদ দিয়েছেন, যার রাজস্ব সরকারের ঘরে যাওয়ার কথা, সেই বালি কিভাবে লুট হচ্ছে ! একটা যদি বৈধ কারণ থাকে তাহলে ৫০ টা অবৈধ খাদান । নদীর গতিপথ সব জায়গায় কেটেকুটে তা যেন করে দিয়েছে । কোথাও নদীর অস্তিত্ব নেই । পূর্বস্থলীর বাড়ি চোরের নাম সুব্রত পাল৷ ভাতারের বালিজুরওয়ে নাম অশোক হাজরা । কেতুগ্রাম ও মঙ্গলকোটের বালি মাফিয়া হলেন লালন । যে বামাকে জেলে ঢুকিয়েছিল পুলিশ ২০২১ সালে তার সাথে চুক্তি করে এলাকায় বালি তোলার পূর্ণ দায়িত্ব তাকে দিয়েছে । উনি মাল তোলেন, পুলিশ ভাগ পায়, আর ৭৫ ভাগ ভাগের টাকা কলকাতায় ভাইপোর বাড়িতে যায় । এই চোর এদেরকে আপনাদের হারাতে হবে৷’
রাজ্যের ঋণের বোঝার কথা তুলে ধরে শুভেন্দু বলেন রাজস্বের ৮০ শতাংশ টাকা ভাইপোর পেটে ঢুকছে। আর ভাইপো ও পিসি পালা করে হেলিকপ্টারে চড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে । আমি বর্ধমানের মানুষদের ধন্যবাদ জানাবো । মেমারিতে পিসি এসেছিলেন ৩০০০ লোক আর চার হাজার পুলিশ । জামালপুরে ভাইপো এসেছিল, আড়াই হাজার লোক আর ৫০০০ পুলিশ । এদের সঙ্গে জনগণ নেই । সবাই থমকে আছেন । কারণ তারা কোথায় ভোট দেবেন জানেন ।’
শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’আমি এই সভায় আসার আগে জামালপুরে বসে ছিলাম । আমার পার্টির জেলার এক সম্পাদক তৃণমূলের তিন চারজন বড় বড় নেতাকে ফোন লাগালেন । আমি তাদের নাম বলবো না । আমি তাদের জিজ্ঞেস করলাম, কি হবে ভোটে ? বলছে, সাফ করব চোরামুলকে । আপনারা যেটা আগে বুঝেছেন আমরা সেটা এখন বুঝতে পারছি । ভাইপো আর চিটিংবাজ আই প্যাক মিলে বাংলাকে মিথ্যাচারে ভরিয়ে দিচ্ছে ।’
লক্ষ্মীর ভান্ডার নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগ তুলে শুভেন্দু বলেন,’গতকাল খবর কাগজের মাঝে একটা করে লিফলেট বাড়ি বাড়ি দিয়েছে । তাতে বলা হয়েছে বিজেপি ৩৫ টা সিট পেলে লক্ষ্মীর ভান্ডার ৩ মাসের পরে বন্ধ করে দেবে । লক্ষ্মীর ভান্ডারে টাকার তৃণমূলের পৈত্রিক সম্পত্তি বেচে দেওয়া হয় না,এটা সরকারি টাকা । এরা বলে সরকারি স্কিম হলো আমাদের স্কিম । আমরা বলি না । প্রধানমন্ত্রী ১২ কোটি লোককে পিএম কিষান সম্মাননিধি দেন । তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে ৫০ লক্ষ কৃষক রয়েছে । কিন্তু আমরা বলি না যে বিজেপিকে ভোট না দিলে পিএম কিষান বন্ধ করে দেবো । কারণ ওইটা দেশে রাজত্বের টাকা থেকে দেওয়া হয়।’ উপস্থিত মহিলা শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন,’৫০০ টাকার লক্ষ্মীর ভান্ডার দিয়ে আপনাদের মোবাইল রিচার্জ হয় । একদিকে লক্ষ্মীর ভান্ডারে ৫০০ টাকা থেকে হাজার অন্যদিকে ইলেকট্রিক বিল ৩০০ জায়গায় ৯০০ । জানুয়ারি মাসে ইলেকট্রিক বিল তিন গুণ বাড়িয়েছে । কলকাতায় আরও তার ভয়ানক অবস্থা ।’
আজ বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী অসীম কুমার সরকারের সমর্থনে রায়নায় জনসভা করেন শুভেন্দু অধিকারী । পরে তিনি কালনায় রোড শো করেন । দু’জায়গাতেই শুভেন্দু অধিকারীকে ঘিরে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যায় ।।