এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১১ মে : শিক্ষিকার চাকরি পাইয়ে দেওয়ার টোপ দিয়ে রাজ্যপাল একাধিকবার শ্লীলতাহানি করেছেন বলে পুলিশের কাছে বয়ান দিতে গিয়ে রাজভবনের অস্থায়ী মহিলা কর্মী দাবি করেছেন বলে খবর । এদিকে রাজভবনে রাজ্যপালের চেম্বারের সেই ১৫ মিনিটের ভিডিও ফুটেজও নাকি পুলিশের হাতে এসেছে বলে দাবি করা হচ্ছে । এদিকে রাজভবনের তিন আধিকারিককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে কলকাতা পুলিশ। সবে মিলে রাজভবনে শ্লীলতাহানি কাণ্ড এখন নতুন দিকে মোড় নিতে শুরু করেছে ।
সম্প্রতি রাজভবনের এক অস্থায়ী মহিলাকর্মী অভিযোগ তোলেন যে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস তাকে নিজের চেম্বারে ডেকে নিয়ে গিয়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছেন । রাজভবনের দোতলায় ইপিএবিক্স অফিসে কর্মরত ওই মহিলা গত ২ মে থানায় শ্লীলতাহানির অভিযোগ জানান । পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের কাছে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোর আগে সেই মহিলা রাজভবনের এক সচিব এবং এক চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেছিলেন।
লোকসভা ভোট প্রক্রিয়ায় মাঝে এই ঘটনায় তোলপাড় চলে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে । বিষয়টিকে সামনে রেখে বিজেপির বিরুদ্ধে রীতিমতো প্রচার শুরু করে দেয় রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস । তৃণমূলের তরফে দাবি তোলা হয় যে ঘটনার দিনের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে আনুন রাজ্যপাল । সম্প্রতি রাজ্যপাল ঘটনার দিনে রাজভবনের সিসিটিভি ফুটেজ দেখিয়েছিলেন। তবে রাজভবনের বাইরের ভিডিও প্রকাশ করলেও নিজের চেম্বারের ১৫ মিনিটের ফুটেজ তিনি প্রকাশ করেননি। ওই ১৫ মিনিটের ভিডিও প্রকাশের জন্য ফের দাবি তোলদ তৃণমূল কংগ্রেস ।
লালবাজারের দাবি, রাজভবনের কাছ থেকে সিসিটিভির ফুটেজ চেয়ে আবেদন জানানো সত্ত্বেও কোনও সাড়া মেলেনি । তাই বাধ্য হয়ে রাজভবন রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা পিডব্লুডির কাছ থেকে একতলা ও রাজভবন চত্বরের চারটি ফুটেজ নেয় পুলিশ । তবে দোতলায় কোনও সিসিটিভির ক্যামেরা না থাকায় সেখানকার ফুটেজ পাওয়া যায়নি ।
পুলিশের দাবি,প্রায় ১২ ঘণ্টার ওই ফুটেজে দেখা গেছে যে রাজ্যপাল মহিলার সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছেন । মহিলা রাজভবন থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করলে রাজ্যপাল তাত অফিসের ৩ আধিকারিককে ইন্টারকমে ফোন করে মহিলাকে শান্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন । রাজ্যপালের নির্দেশ অনুযায়ী ওই ৩ আধিকারিক জোর করে ইপিএবিএক্স রুমে নিয়ে আটকে রাখেন এবং বাইরে গিয়ে কিছু না বলার জন্য চাপ দেন । মহিলার স্মার্টফোনও তখন কেড়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ । এরপর মহিলা করিডরে চিৎকার করে কেঁদে ওঠেন বলে ফুটেজে দেখা গিয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ ।
এদিকে এই ঘটনার পরপরই রাজভবনে পুলিশ এবং রাজ্যের শিশু ও নারী কল্যান মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন রাজ্যপাল। পাশাপাশি রাজভবনের কোনও কর্মীকে পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে নিষেধও করে দেন তিনি। এই নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও পুলিশের তলবে রাজভবনের তিন আধিকারিক থানায় যান কিনা এখন সেটাই এখন দেখার বিষয় ।।