এইদিন ওয়েবডেস্ক,ছত্তিশগড়,০৫ মে : চলতি লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের কতটা ভরাডুবি হবে তা জানতে আগামী ৪ জুন পর্যন্ত সকলকে অপেক্ষা করতে হবে । কিন্তু লোকসভা ভোটের ফলাফলের আগেই ভরাডুবি শুরু হয়ে গেছে শতাব্দী প্রাচীন এই রাজনৈতিক দলটির । বেশ কিছুদিন ধরেই কংগ্রেসে পদত্যাগের হাওয়া বইছে । শনিবার দিল্লিতে এক ঝাঁক বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা দলত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন । তার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ছত্রিশগড়ে ধাক্কা খেলো কংগ্রেস । অযোধ্যায় প্রভু শ্রী রাম দর্শনের কারনে দলের নেতাদের বিরোধিতার মুখে পড়ে দলত্যাগ করলেন ছত্তিশগড় কংগ্রেসের বর্ষীয়ান মহিলা নেত্রী রাধিকা খেরা ।
কংগ্রেসের ন্যাশনাল মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর রাধিকা খেরা সর্বভারতীয় কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খার্গের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন । পদত্যাগ পত্রে ভগবান শ্রীরামকে নিয়ে দলের নেতাদের মানসিকতার প্রতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাধিকা খেরা । চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘প্রাচীন কাল থেকেই এটা প্রমাণিত যে ধর্মের সঙ্গে থাকা ব্যক্তিদের বিরোধিতার মুখে পড়তে হয় । হিরণ্যকসিপু থেকে রাবণ এবং কংস পর্যন্ত তার দৃষ্টান্ত । বর্তমান সময়ে প্রভু শ্রী রামের নাম নেওয়া ব্যক্তিদের এই রকমই বিরোধিতার মুখে পড়তে হচ্ছে । প্রতিটি হিন্দুর কাছেই প্রভু শ্রী রামের জন্মস্থানের পবিত্রতা অনুষ্ঠান খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল, যেখানে হিন্দুরা রামলালার দর্শন মাত্রই নিজের জীবন ধন্য মনে করেন সেখানে কিছু লোকেরা এর বিরোধিতা করছে ।
তিনি লিখেছেন,’যে দলকে আমি আমার জীবনের ২২ বছরেরও বেশি সময় দিয়েছি। যেখানে এনএসইউআই থেকে শুরু করে এআইসিসির মিডিয়া বিভাগে আমি সম্পূর্ণ আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছি । আজ আমাকে সেখানে এত প্রবল বিরোধিতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে, কারণ আমি অযোধ্যায় রামলালাকে দর্শন করা থেকে নিজেকে আটকাতে পারি না। আমার এই পূণ্য কাজে বিরোধ এমন একটা স্তরে পৌঁছে যে ছত্রিশগড় প্রদেশ কংগ্রেস অফিসে ঘটে যাওয়া ঘঈনাক্রম থেকে আমাকে ন্যায় দিতে অস্বীকার করা হয়েছে । আমি প্রতিটা মঞ্চ থেকে অন্যের ন্যায়ের জন্য আমি লড়াই করেছি। কিন্তু যখন আমার ন্যায়ের প্রসঙ্গ আসে তখন আমি নিজের পার্টির কাছেই নিজে হেরে গেছি । শ্রী রামের ভক্ত এবং একজন মহিলা হিসাবে আমি খুবই আহত হয়েছি । বারবার পার্টির শীর্ষ নেতাদেরকে জানিয়েও আমি ন্যায় বিচার পাইনি, তাই আমাকে এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হতে হলো ।’
জানা গেছে,মঙ্গলবার জাঞ্জগির চম্পা জেলায় কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গের বৈঠকের পরে, আঞ্চলিক কংগ্রেস অফিস রাজীব ভবনে স্থানীয় আঞ্চলিক নেতাদের এবং রাধিকা খেরার মধ্যে প্রচণ্ড ঝগড়া শুরু হয় । এর পর রাধিকা কাঁদতে কাঁদতে বাইরে এসে নিজের দুঃখের কথা জানান ।
ছত্তিশগড় কংগ্রেস ইউনিটের অফিসে অপমানিত হয়ে এক্স-এ টুইট করে রাধিকা খেরা লিখেছেন যে ‘দুশীল’-এর প্রতি ‘আঙ্কেল’-এর আকর্ষণ একটি মেয়ের সম্মানের চেয়ে বেশি, কিন্তু আমি একটি মেয়ে, আমি লড়াই করছি, “মর্যাদা পুরুষোত্তম” ভগবান শ্রী রামজির মাতৃগৃহে স্বাগত জানাই। কন্যা কৌশল্যা মায়ের ঘরে নিরাপদ নয়। পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতায় ভুগে মানুষ এখনো মেয়েদের পায়ের তলায় মাড়াতে চাইছে। আমি ব্যাখ্যা করব।’।