এইদিন ওয়েবডেস্ক,২৫ এপ্রিল : আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভুটান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও তিব্বত ছিল অখন্ড ভারতের অংশ । নতুন পার্লামেন্টে স্থাপিত একটি ম্যুরালে দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে বিস্তৃত অখন্ড ভারতের মানচিত্র চিত্রিত করা হয়েছে । অখন্ড ভারতের মানচিত্র দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে আফগানিস্তান থেকে মায়ানমার, দক্ষিণে শ্রীলঙ্কা এবং উত্তরে সুউচ্চ হিমালয় পর্যন্ত বিস্তৃত একটি একীভূত অঞ্চলকে চিত্রিত করে । এটি চীন ও ইরানের কিছু অংশেও বিস্তৃত । আর এই মানচিত্র প্রকাশের পর নেপাল ও পাকিস্থানকে উসিকানি দিতে শুরু করেছে চীন । বাকি দেশগুলিকেও উত্তেজিত করার কাজ চালিয়ে গেছে বিবিসির মত ভারত বিরোধী কিছু ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম । ভারত সর্বদা ভ্রাতৃত্ববোধে বিশ্বাসী । যেদেশের আদর্শ “বসুধৈব কুটুম্বকম”,সেই দেশ অপর রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ করতে চাইবে এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। তাই অখণ্ড ভারতের মানচিত্র নিয়ে সমালোচনা না করে এর সত্যতা সম্পর্কে জানা প্রয়োজন সবার। এই মানচিত্র ভারতের অতীত সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের পরিচায়ক, কোন সার্বভৌমত্ব হরণের প্রতীক নয়।
পাশাপাশি ভারতকে ভেঙে টুকরো টুকরো করার পিছনে সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ ছাড়াও কাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ ছিল, সেই ইতিহাসও দেশবাসীর জানা উচিত । ব্রিটিশ ছাড়াও ভারত বিভাজনে মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী ও জহরলাল নেহেরুর একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বলে দাবি করা হয় । আসুন জেনে নেওয়া যাক কখন কোন অংশক্স অখন্ড ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল ।
১৮৫৭ সালে ভারতে ব্রিটিশ রানির শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।
ঠিক তার ১৯ বছরের মাথায়,১৮৭৬ সালে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় আফগানিস্তানকে । পাঠানদের সাথে একটি চুক্তি করে আফগানিস্তানকে একটি পৃথক দেশ ঘোষণা করে ব্রিটিশরা ।
★ নেপালকে পৃথক রাষ্ট্র ঘোষণা করা হয় ১৯০৪ সালে । ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি গোর্খা উপজাতির সাথে একটি চুক্তি করে এবং নেপালকে একটি পৃথক দেশে পরিণত করে।
★ ভুটান পৃথক রাষ্ট্র হয় ১৯০৬ সালে । ব্রিটিশরা ১৯০৬ সালে সেখানকার উপজাতির সাথে একটি চুক্তি করেছিল যার কারণে ভুটান একটি পৃথক দেশে পরিণত হয়েছিল।
★ ব্রিটিশরা ১৯১৪ সালে চুক্তির মাধ্যমে তিব্বতকে একটি বাফার রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল, যা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহেরুর অদূরদর্শীতার কারনে ১৯৬৫ সালে চীন দ্বারা দখল করা হয়েছিল।
★ শ্রীলঙ্কা পৃথক রাষ্ট্র হয় ১৯৩৫ সালে । মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর সভাপতিত্বে, ব্রিটিশরা১৯৩৫ সালে চুক্তির পর শ্রীলঙ্কাকে একটি পৃথক দেশ ঘোষণা করে।
★ মায়ানমার বা ব্রহ্মদেশকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল ১৯৩৭ সালে । এক্ষেত্রেও মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর সভাপতিত্বে মায়ানমারকেও ১৯৩৭ সালে একটি পৃথক দেশ করা হয়েছিল।
★ পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট গান্ধীর সভাপতিত্বে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় । পরে ১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তান বাংলাদেশ হিসাবে অস্তিত্ব লাভ করে।
★ পাকিস্তানি অধীকৃত কাশ্মীর(P.O.K) ভারত থেকে আলাদা হয় ১৯৪৭ সালের ২২ অক্টোবর । পাকিস্তান জম্মু ও কাশ্মীর আক্রমণ করে এবং ৭৯,০০০ বর্গ কিমি জায়গা ছিনিয়ে নেয় যা আজকে পাক অধিকৃত কাশ্মীর বলে পরিচিত । এক্ষেত্রেও মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী ছাড়াও জহরলাল নেহেরুর ভূমিকা ছিল ।
★ জহরলাল নেহেরুর অপদার্থতার আরও একটা নজির হল লাদাখের একাংশ হাতছাড়া হয়ে যাওয়া । ১৯৬২ সালের ২০ অক্টোবর চীন নীরবে ভারত আক্রমণ করে লাদাখের ৩৫,৫০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা ছিনিয়ে নেয়।
★ নেহেরুর অপদার্থতার আরও একটি প্রমান হল সিয়াচেন । ১৯৬২ সালে দখলকৃত সিয়াচেন এলাকার ৫,৫০০ বর্গকিলোমিটার চীনকে উপহার দেয় পাকিস্তান।
★ মালদ্বীপ ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হয় ১৯৭১ সালে । মালদ্বীপকেও আলাদা দেশ ঘোষণা করা হয় !
ভারতকে টুকরো টুকরো করা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন সম্পর্কে মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী কি মতামত পোষণ করতেন তা ১৯০৯ সালে লেখা তার বই ‘হিন্দ স্বরাজ’ থেকে জানতে পারা যায় । গান্ধী ওই বইতে উল্লেখ করেছিলেন যে ভারতীয় জনগণের সহযোগিতায় ভারতে ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং একই কারণে এতদিন টিকে আছে ।।