জ্যোৎস্না দেখা ঘামমানবটা কাল রাতে মারা গেলো
তিপান্ন বছর ধরে চাঁদের আলো গায়ে মাখা গল্পটির নটেশাকটি মুড়ালো..
চায়ের দোকানটির বন্ধ ঝাঁপে আলপনা দেওয়া স্বপ্নের দাগ এখনো মিলায়নি,
মানুষটি চলে গেলো আলপথের এক অজানা সুড়ঙ্গ ধরে নি:সঙ্গ বেদনার বাস্তবিক অস্তরাগে।
বটগাছটার চারিদিকে কে একজন সান বাঁধিয়ে দিয়েছে,
নবীন বৈরাগী কোথা থেকে ফেলে দেওয়া বাড়ির কার্তিক এনে বসিয়ে সিন্নি চড়িয়ে দিলো,
গোপা ধোপা খড়ের চাল বানিয়ে দিলো,
জ্যোৎস্না মানব নির্জন নতুন থানে চা নিয়ে বসল।
চোখের সামনে দেখলাম একটা সাম্রাজ্য গড়ে ওঠা,
যে সাম্রাজ্যের সম্রাট জ্যোৎস্না মানব।
ক্লান্ত ঘোড়া, বৃদ্ধ মানুষ ও উদ্বেলিত যৌবনের অহেতুক হাসি চায়ের দোকানে ভিড় করে থাকে…
জীবন চলেছে গুটি গুটি পায়।
গভীর রাতে জ্যোৎস্না মানব সানে শুয়ে বাতাসের শব্দ শোনে,
ফিঙে পাখি শিস দেয় নাগচম্পা ফুলের ডগায়।
মানব টি শাবল নিয়ে গর্ত করে মন্দিরের চাতালে
রোজ রাতে-
ওখানে তার কান্না গুলো লুকিয়ে মাটি চাপা দেয়
চাঁদের জ্যোৎস্না হাসি নিয়ে।
জলে ডোবা মৃত ছেলে, ছায়া হয়ে যাওয়া লম্পট মায়ের ঘ্রাণ বুকে নিয়ে ছটফট করে,
বাবার চোখের জলে সিঁড়ি বেয়ে উঠে আসে রোজ রাতে,
জ্যোৎস্নার ঘ্রাণ নেব বলে।
আজ তিন দিন হল মানুষটিকে শ্মশানে জ্বালিয়ে এসেছে নক্ষত্রের আলো-
এখন গভীর রাত
তিন দিন ধরে চাতালের গর্তের পাশে বসে আছি লুকানো কান্নার শব্দ শুনব বলে!
প্রজা আসে, ঘোড়া হেঁটে যায়-
কাউকে একটাও শব্দ খরচ করতে শুনলাম না জ্যোৎস্না মানব কে নিয়ে-
মাত্র তিনদিনে তিপান্ন বছরের অজস্র কবিতার অবসান।
নাগচম্পার ডগায় বসা ফিঙে ভাসা ভাসা গল্প শোনায় বিস্মৃত হওয়ার।।