প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১২ জুন : বজ্রপাতে মৃত্যু ঠেকাতে এবার পূর্ব বর্ধমান জেলার সর্বত্র বহুতল বাড়িতে বাধ্যতামূলক ভাবে বজ্র নিরোধক ব্যবস্থা রাখার ব্যাপারে জোর দেওয়া হল। বজ্রপাতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে চলাতেই এই বিষয়ে সুস্পষ্ট পরিকল্পনা নিতে চলেছে জেলা প্রশাসন।একই সঙ্গে বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনা রুখতে প্রশাসনের তরফে জন সচেতনতা বাড়ানোরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেই মত জেলার পৌরসভা ও পঞ্চায়েত এলাকায় মাইকিং করে যেমন প্রচার চালানো হচ্ছে তেমনই সচেতনতা বৃদ্ধিতে বিলি করা হচ্ছে লিফলেট।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে ,প্রতি বছরই পূর্ব বর্ধমান জেলায় লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চলেছে বজ্রপাতে মৃতের সংখ্যা । ২০১৭ সাল থেকে ২০২১ সালের মে মাস পর্যন্ত বজ্রপাতে জেলায় ১৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে । চলতি জুন মাসের বর্তমান সময়কালের মধ্যে পূর্ব বর্ধমান জেলার জামালপুর ,কালনা ও কাটোয়া মিলিয়ে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।জামালপুর
ব্লকে ২০১২ সাল থেকে ২০২১ সালের বর্তমান সময়কাল পর্যন্ত ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে । জেলা প্রশাসনের তরফে বজ্রপাতে মৃতদের
পরিবারের হাতে সরকারী আর্থিক ক্ষতিপূরণ তুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারপরেও মৃত্যু নিয়ে উদ্বিগ্ন রয়েছে জেলা প্রশাসন।
কেন এত বজ্রপাতের ঘটনা ঘটছে তা জানতে রাজ্যের কাছে বিশেষজ্ঞ কমিটি পাঠানোর জন্যেও আবেদন জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেল প্রশাসন।পাশাপাশি জেলার সমস্ত পুরসভা এবং পঞ্চায়েত গুলির কাছেও সেখানকার বহুতল গুলির বিষয়ে জানতে চাওয়া হচ্ছে ।কারণ জেলা প্রশাসনের কর্তারা মনে করছেন, কোনো বহুতল নির্মিত হওয়ার সময়ে পঞ্চায়েত কিংবা পৌরসভার তরফে অগ্নি নিরোধক ব্যবস্থা রাখার পাশাপাশি বজ্র নিরোধক ব্যবস্থা রাখার কথাও বলা হয়। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা মানা হয় না। তাই সেখানকার বহুতল বাড়ি ও আবাসন গুলিতে বজ্রনিরোধক বাবস্থা রাখা রয়েছে কিনা ?এমনকি বজ্রনিরোধক ব্যবস্থা থাকলেও তা কার্যকরী রয়েছে কিনা তা জানতে চাইছে জেলা প্রশাসন ।
বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ)
অনির্বাণ কোলে জানিয়েছেন, “বর্ধমান শহর সহ পঞ্চায়েত এলাকা গুলিতেও বর্তমানে বহুতল বাড়ি নির্মাণ হচ্ছে। যখনই কোনো বহুতল নির্মিত হয় তখনই সেই বহুতলের অগ্নি নিরোধক ব্যবস্থার পাশাপাশি বজ্র নিরোধক ব্যবস্থাও গ্রহণ করার জন্য বলা হয়। তা সঠিক ভাবে মানা হয়েছে কিনা সেই বিষয়টি এবার যাচাই করে দেখে নেওয়া হবে ।’।