প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৫ এপ্রিল : ভোটের প্রচারে বেরিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাচে মেতে ওঠাকে এবার নিশানা করলেন বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ।সোমবার তিনি বলেন, লোক জড়ো করতে ওদের এখন নাচতে হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীও নাচছে,এখানকার কান্ডিটেটও নাচছে।রাস্তার ধারে নেচে ওরা লোক জড়ো করছেন।কিন্তু আমরা যেখানেই যাচ্ছি লোক এমনিতেই জড়ো হয়ে যাচ্ছে।উত্তরবঙ্গে আদিবাসীদের সঙ্গে নাচের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর যোগ দেওয়া নিয়ে দিলীপ ঘোষ দিন এভাবেই কটাক্ষ করেন।আর তা নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব।তাঁদের বক্তব্য কমিশনের শোকজের পরেও শোধরাননি দিলীপ ঘোষ । তাই তিনি আলগা কথা বলায় লাগাম টানছেন না।
অনান্য দিনের মত এদিনও প্রাতঃভ্রমণে বের হন বর্ধমান- দুর্গাপুর লোকসভা আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। এদিন তিনি বর্ধমানের সদরঘাটে প্রাতঃভ্রমণে যান।সেখানে দামোদরের ঘাটে তিনি ছট পুজোয় অংশ নেন। চৈত্র ছটে আসা ভক্তদের সঙ্গে তিনি আলাপচারিতা করেন। তারপর তিনি মাঠে দলীয় কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে হেঁটে জনসংযোগ করেন। পাশাপাশি তিনি ব্যাট হাতে মাঠে ছক্কাও হাঁকান।এরপর তিনি তেলিপুকুরে চা চক্রে অংশ নেন।সেখানে বসেই দিলীপ ঘোষ উত্তরবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী আদিবাসীদের সঙ্গে নাচের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ায় নিয়ে কটাক্ষ করে বলেন,“ওদের লোক জড়ো করতে গেলে এখন নাচতে হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীও নাচছে, এখানকার (বর্ধমান দুর্গাপুর)কান্ডিটেটও নাচছে। রাস্তার ধারে নেচে লোক জড়ো করছেন।আর আমরা যেখানেই যাচ্ছি এমনিতেই লোক জড়ো হয়ে যাচ্ছে।
শুধু এ টুকুতেই থামেননি দিলীপ ঘোষ । তিনি বলেন, রাজনীতি, ব্যাট, বল, ক্যারাটে সবই আমি করি। তাই আমার সামনে সবাই আসতে ভয় খায়। যত দিন যাচ্ছে তত ফিকে যাচ্ছে কীর্তি আজাদ। কারণ উনিতো রিটায়ার্ড এবং টায়ার্ড ম্যান। উনি এখন বুঝতে পারছেন এখানকার জনতা ওনাকে নিচ্ছে না। ওনার পার্টির লোকেরাই ওনার সঙ্গে বেরুচ্ছে না। আমরা মানুষের সঙ্গে আছি। আমাদের সঙ্গে মানুষ আছে।পঞ্চায়েতে এখানে পুলিশ ও গুণ্ডা দিয়ে লুঠ করা হয়েছে। সামনের পঞ্চায়েতে দেখবেন আমরা ওদের বাড়ি থেকে বেরুতে দেবনা।আমিতো প্রচারই করিনি। লোকের সঙ্গে দেখা করছি, ক্রিকেট খেলছি। ওরা ঘোড়া নিয়ে আসছে টাকা খরচ করে। দিলীপ ঘোষ একাই একশো, যতই ওরা এখানে প্রচারে আসুক। আমাদের সময় হলে সেন্ট্রাল লিডাররা আসবে। টিএমসি কংগ্রেস সবই বিজেপির হয়ে বেরুবে। এপ্রিল মাস শেষ হতে দিন।আমার কর্মীরা বুথে বসে বুথ সামলাবে। বাইরে থেকে যদি কেউ যায় সে কিভাবে ফিরবে আমরা ঠিক করে দেব গতবারে বুথে গণ্ডগোল হয়নি, বুথের বাইরে গণ্ডগোল হয়েছিল। এবার সেটা হতে দেবনা। ওদের বলে দেবেন দিলীপ ঘোষ এসে গেছে। আমি যেখানে যায় সেখানে মূল শুদ্ধ উপরে ফেলি ওদের বলে দেবেন।
কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন ! আমরা সেন্ট্রাল ফোর্সের উপর ভরসা করে ভোট করিনা। সাধারণ মানুষ যাতে ঠিক ভাবে ভোট দিতে পারে সেজন্য সেন্ট্রাল ফোর্স এসেছে।বিজেপি কর্মীরাই ভোট করবে, বিধানসভা লোকসভায় যেমন করেছে।পাশাপাশি তিনি বলেন, ট্রান্সপোর্টের লোকেরা আমাকে বলেছে, আমরা খুব সমস্যার মধ্যে আছি। পুলিশ এবং টিএমসির গুণ্ডারা যেখানে সেখানে রাস্তা আটকে টাকা তুলছে।
মমতাকে উদ্দেশ্য করে দিলীপ ঘোষ বলেন,’উনি কিছুই করেননি, মোদিজি হাইওয়ে করেছেন, চন্দ্রযান করেছেন। উনি করেছেন বলেই আজ উদ্বোধন করছেন। এয়ারপোর্ট, ট্রেন উদ্বোধন করছেন।মমতা খালি রাস্তায় হাঁটছে টাকা দাও টাকা দাও করে ।’
দিলীপ ঘোষের এহেন মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করে রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন,’জনপ্রতিনিধি হওয়ার আগে বাংলার শিক্ষা সংস্কৃতি শিখতেহবে।আসলে উনি এসব শেখেন নি । তাই দিলীপ ঘোষ এমন আলগা কথা বলছেন । আমরা আবারও কমিশনে যাবো ।’।