এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৫ এপ্রিল : সম্প্রতি উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি কেউ আলিপুরদুয়ারায় ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে পাঁচ শতাধিক বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছিল । কিন্তু লোকসভার নির্বাচনের বিধি-নিষেধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার গুলিকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ও তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড অভিষেক ব্যানার্জি । মুখ্যমন্ত্রী ও তার ভাইপো, দু’জনারি অভিযোগ যে এই আপতকালীন পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দেওয়ার অনুমতি চেয়ে তারা নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন । কিন্তু নির্বাচন কমিশন তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার অনুমতি দেয়নি । মুখ্যমন্ত্রী ও তার ভাইপোর এই দাবিকে নস্যাৎ করে দিয়ে শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছেন যে তৃণমূল ৯ এপ্রিল নির্বাচন কমিশনের কাছে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছিল এবং ওই দিনই নির্বাচন কমিশন রাজ্য সরকারকে অনুমতি দিয়ে দেয় । এ নিয়ে অভিষেক ব্যানার্জি ও মমতা ব্যানার্জির নাম না করে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তাদের খোঁচা দিয়ে বলেছেন, “একজন অভ্যাসবশত মিথ্যাবাদী এবং অন্যজন জন্মগত মিথ্যাবাদী”।
শুভেন্দু অধিকারী অভিষেক ব্যানার্জি ও মমতা ব্যানার্জির চোখ দুই বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপিং নিজের সোশ্যাল মিডিয়ার পেজে শেয়ার করেছেন । পাশাপাশি তিনি গত ৯ এপ্রিল রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে লেখা তৃণমূল রাজ্য সরকারের আবেদনপত্র এবং একই দিনে নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে রাজ্যের মুখ্য সচিবকে লেখা অনুমতিপত্রও তিনি শেয়ার করেছেন ।
শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন,’পশ্চিমবঙ্গের বিখ্যাত মিথ্যাবাদী জুটি, যার একজন অভ্যাসবশত মিথ্যাবাদী এবং অন্যজন জন্মগত মিথ্যাবাদী, দু’জনেই ভাবেন যে তারা মিথ্যার বেসাতি করে যাবেন আর পশ্চিমবঙ্গের জনগণ তাদের সেই মিথ্যাচারকে ধ্রুব সত্য বলে মেনে নেবেন। কি ভাবেন আপনারা? পশ্চিমবঙ্গের মানুষ বোকা?’
এরপর তিনি লেখেন,’আপনারা হয়তো কিছু মানুষকে মিথ্যা বলে সব সময় বোকা বানাতে পারেন তারা আপনার মিথ্যাচারে বিশ্বাস করতে পারেন, আবার রাজ্যের সব মানুষকেও কিছু সময়ের জন্য মিথ্যাচার করে বোকা বানানোর চেষ্টা করতেই পারেন। সাধারণ মানুষ হয়তো সাময়িক ভাবে আপনাকে বিশ্বাস করে বোকা বনবেন। কিন্তু, মনে রাখবেন এই পন্থা সবসময় কার্যকর হবে না। মানুষ একসময় আসল সত্যিটা ধরে ফেলবেন।’
শুভেন্দু লিখে আরো লিখেছেন, ‘জলপাইগুড়ি এবং ময়নাগুড়ির বিধ্বংসী ঘুর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলো, যারা ঘর বাড়ি সহ তাদের শেষ সহায় সম্বলটুকুও প্রকৃতির রোষে হারিয়েছেন তারা যাতে দ্রুত বাড়ি নির্মাণের জন্য আর্থিক অনুদান পান, তার জন্য ভারতের নির্বাচন কমিশন গত ৯ ই এপ্রিল ২০২৪ এ ক্ষতিপূরণ এবং বাড়ি তৈরীর আর্থিক অনুদানের বিষয়টি আদর্শ আচরণ বিধির আওতার বাইরে রেখে অনুমোদনটি মঞ্জুর করেছেন। শুধু তাই নয় ঐ দিনই অর্থাৎ ৯ ই এপ্রিল ২০২৪ নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে বিষয়টি জানিয়েও দেওয়া হয়। তাই অনেক আগেই ঘুর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলোর বাড়ি নির্মাণের জন্য নির্দিষ্ট তহবিল থেকে আর্থিক অনুদান দিয়ে দেওয়াই যেতো, কিন্তু
পিসি এবং তার গুণধর ভাইপো কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন আর কেন্দ্র সরকারের নামে মিথ্যাচার করতেই ব্যস্ত। আসলে তাদের উদ্দেশ্য অন্য, তারা এই ঘটনায় রাজনৈতিক রং চড়িয়ে ভোটের বাজারে নিজেদের লাভের অঙ্ক বাড়িয়ে নিতে চান। সহায় সম্বলহীন, ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষের এই দুর্দশা এবং কষ্টদায়ক পরিস্থিতির তাদের কাছে কোনো মূল্য নেই।’।