এইদিন ওয়েবডেস্ক,কোচবিহার,১২ এপ্রিল : আজ শুক্রবার কোচবিহারের দিনহাটায় নির্বাচনী জনসভা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি । বিধানসভা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কথায়, ‘একঝুড়ি লোক হয়েছিল’ । একই দিনে কোচবিহারের নাটাবাড়িতে বিজেপি প্রার্থী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের সমর্থনে সভা করেন শুভেন্দু । শুরুতেই মমতা ব্যানার্জিকে নিশানা করে বলেন,’আজকে একজন দিনহাটাতে একটু আগে এসেছিল না? এক এক ঝুড়ি লোক হয়েছে । আমি ওই দিনই শীতলকুচিতে মিটিংয়ে বলে ফেলেছিলাম, ১২ তারিখে দিনহাটা আসছি, শুনেই মেরে দিয়েছে পারমিশনে । আমাদের এই মিটিংটা দিনহাটায় হওয়ার কথা ছিল, যাই হোক নাটাবাড়িতে এলাম । মাত্র ৩ দিনের মধ্যে এই সভার আয়োজন করতে হয়েছে । এই সভা তোলামূলের সভাকে হারিয়ে দিয়েছে ।’ তিনি বলেন,’উনি কত বড় মাপের নেতা, আপনারা জানেন তো? আমার কাছে হেরেছে জানেন তো? হারাধন মমতা ব্যানার্জি দিনহাটাতে এসেছে । আমার কাছে ১৯৫৬ ভোটে হারা, কম্পার্টমেন্টাল চিপ মিনিস্টার, তার কথা গ্রহণ করবে না যে মমতা ব্যানার্জিকে হারিয়েছে তার কথা গ্রহণ করবে ?’
শুভেন্দু বলেন,’কোচবিহার জেলাকে টার্গেট করে পিসি আর ভাইপো হাট বারে সভা করতে আসছি । কোন লাভ হবে না । কারণ কোচবিহারের মানুষ মমতা ব্যানার্জিকে পরিত্যাগ করেছে । এবারের নির্বাচন মমতা পুলিশ ভার্সেস বিজেপি ।তৃণমূলের সঙ্গে কোচবিহারের এসপিসহ এক শ্রেণীর পুলিশ অফিসার আর উদয়ন গুহর মত গুন্ডারা আছে। এই গুন্ডাদের জব্দ করার কাজ আমরা করছি ।’
এদিন মুখ্যমন্ত্রী উদয়ন গুহকে মাথা ঠান্ডা রেখে ভোট করার পরামর্শ দিয়ে গেছেন । সেই উদয়ন গুয়কে এই দিন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী । তিনি বলেন, ‘উদয়ন গুহ, আপনারও বাড়াবাড়ি বেশিদিন চলবে না । ২০২১ সালের ভোট পরবর্তী হিংসায় নাটাগুড়ি সহ গোটা কোচবিহার জেলায় যত সন্ত্রাস হয়েছে এই সন্ত্রাসের এরা নেতৃত্ব দিয়েছে । কোচবিহারের সাড়ে চার হাজার বিজেপি কর্মী সমর্থককে ঘর ছাড়া হয়ে আসামে থাকতে হয়েছে ।’ উদয়ন গুহর থেকেও একটা বড় গুন্ডা ছিল বীরভূমের কেষ্ট মন্ডল । ১৩০ কেজি তার ওজন । ভোট এলেই এই চ্যানেলগুলো তার কাছে যেত । তাদের কাছে বলতো চরম চরম ঢাক বাজবে, নকুলদানা বিতরণ হবে, গুড় বাতাসা বিতরণ হবে, আর বিরোধীরা উন্নয়ন দাঁড়িয়ে আছে দেখতে পাবে । ওই কেষ্ট ব্যাটা এখন কোথায়? স্বকন্যা তিহারে গড়াগড়ি খায়’ বলে মন্তব্য করেছেন শুভেন্দু ।
ফের মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘বিধানসভায় ৭৭ টা এম এল এ নিয়ে কি করে কি দেখেছেন তো? যেদিন বিধানসভায় সেশন থাকে আমাকে সাসপেন্ড করে । সঙ্গে মিহিরদাকেও সাসপেন্ড করে । আমাদেরকে বাইরে রাখতে হয় । বিরোধী দলনেতার ভয়ে চোর মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় আসে না । বিধানসভায় ঢুকতে ভয় পায় । পিসিমণি শুনে রাখুন, আপনার সরকারটাই থাকবে না। আপনি তো সবে তাপস রায়ের ট্রেলার দেখেছেন । কত লম্বা তাপস রায় আছে আমরা বের করব । শুধু চার তারিখে ভোটের ফলাফলটা বেরুতে দিন । সিপিএম হেরে যাওয়ার পরে চেষ্টাচরিত্র করে পাঁচ বছর তারা টিকে ছিল । তারপরে ভ্যানিশ হয়ে গেছে । কিন্তু তৃণমূল যেদিন যাবে এক রাতের মধ্যে ভ্যানিশ হয়ে যাবে ।’
শুভেন্দু আরও বলেন,’জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ১৯ জন গুন্ডার নাম দিয়েছিল হাইকোর্টে । এই ১৯ জন গুন্ডার মধ্যে কেষ্ট মন্ডল ছিল,আছে জেলে । জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ছিল । আপনাদের রেশনের চাল গম চুরি করার দায়ে বালু মল্লিকও জেলে আছে । সন্দেশখালীর শাহজাহান শেখও জেলে গেছে । এবার পালা উদয়ন গুহর । লোকসভা ভোট পড়বে মিটে যাওয়ার ৪৮ ঘণ্টা পর উদয়ন গুহকে গ্রেফতারের আবেদন জানালেন শুভেন্দু অধিকারী । মাঝ রাতে পিঠা খাওয়া তৃণমূলীদের শিক্ষা যদি দিতে হয় ১৯ তারিখে বিজেপিকে ভোট দিতে হবে ।’।