এইদিন ওয়েবডেস্ক,জলপাইগুড়ি,০১ এপ্রিল : জলপাইগুড়িতে কালবৈশাখীর ঝড়ের তান্ডবে অন্তত ৪ জনের মৃত্যু এবং শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে বলে জানা গেছে ।নিহতরা হলেন দিজেন্দ্র নারায়ণ সরকার (৫২), অনিমা বর্মন (৪৫), জগেন রায় (৭২)এবং সমর রায় (৬৪) । আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে । বিধ্বস্ত হয়েছে বেশ কয়েকটি ঝুপড়ি ও ঘরবাড়ি । উপড়ে পড়েছে প্রচুর গাছ এবং বিদ্যুতের খুঁটি । রবিবার বিকেলে শিলাবৃষ্টি সহ প্রবল ঝড় জলপাইগুড়ি জেলা সদর শহরের বেশিরভাগ অংশ এবং পার্শ্ববর্তী ময়নাগুড়ির অনেক এলাকায় আঘাত হানে । সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো হল রাজারহাট, বার্নিশ, বাকালি, জোড়পাকদি, মাধবডাঙ্গা এবং সাপ্তিবাড়ি । ওই সমস্ত এলাকা, কয়েক একর কৃষি জমি এবং ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।শিলাবৃষ্টিতে আহত হয়েছেন বহু পথচারী।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঝড়ে প্রাণহানির জন্য শোক প্রকাশ করেছেন এবং বলেছেন যে তিনি কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছেন এবং তাদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথ সহায়তা নিশ্চিত করতে বলেছেন। তিনি বলেছেন,আমার ভাবনা পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি- ময়নাগুড়ি এলাকায় ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে। যারা তাদের প্রিয়জনকে হারিয়েছে তাদের প্রতি সমবেদনা ।আমি পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত কার্যকর্তাকে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করার জন্য অনুরোধ করব ।
রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনের জন্য আজ সোমবার জলপাইগুড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হবেন বলে রাজভবন সূত্রের খবর । রাজ্যপাল দিল্লির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করছেন এবং জলপাইগুড়িতে দ্রুত ত্রাণ শুরু করার জন্য অনুরোধ করেছেন ।
এদিকে নির্ধারিত কর্মসূচি বাতিল করে রবিবার রাত দেড়টায় ময়নাগুড়িতে পুঁটিমারির ত্রাণ শিবিরে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী। ঝড়ে মৃতদের পরিবার ও ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বললেন তিনি। এরপর তিনি চালসার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যান। মুখ্যমন্ত্রী বলেন,’ঝড়ের যা তাণ্ডব দেখলাম, তা দেখে নিজেই শিউরে উঠছি ।’ প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আছে বলে জানিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী নিজের সোশ্যাল মিডিয়া পেজে আহতদের হাসপাতালে খবর নিতে যাওয়ার কিছু ছবি পোস্ট করে লিখেছেন,’শুরুতেই আমি জলপাইগুড়িতে বিধ্বংসী কালবৈশাখী ঝড়ে প্রাণ হারানো প্রত্যেক মানুষের বিদেহী আত্মার চিরশান্তি কামনা করে, তাঁদের পরিবার-পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। সঠিক সময়ে প্রশাসন পদক্ষেপ করায় আজ বহু মানুষের প্রাণ বেঁচে যায়। তাঁদের এই নিরলস কর্মকে কোনো বিশেষণ দিয়ে বিশেষায়িত করা যাবে না। বহু সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে কিন্তু আমি আশাবাদী ধীরে ধীরে সকলের জীবন স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।’
তিনি আরও লিখেছেন,’আজ জলপাইগুড়ির কালবৈশাখী ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সঙ্গে দেখা করলাম এবং আহত ব্যক্তিদের দেখতে উপস্থিত ছিলাম জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। পাশাপাশি ত্রাণ শিবিরে গিয়েও দেখা করেছি সকলের সঙ্গে। ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবার ও আহতদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বললাম এবং তাঁদের আশ্বস্ত করলাম। হাসপাতালে ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে সকলের শারীরিক অবস্থার পূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করলাম। এই হৃদয়বিদারক, মর্মন্তুদ ঘটনায় যেভাবে প্রশাসন-সহ ডাক্তার, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা কাজ করেছেন, তাতে আমি তাঁদের সকলকে কুর্ণিশ এবং স্যালুট জানাই।প্রশাসন আক্রান্ত প্রত্যেকটি মানুষের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছে, তাঁদের পরিবারের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে।’ তিনি সকলের সুস্থতা কামনা করেছেন ।।