এইদিন ওয়েবডেস্ক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া,৩১ মার্চ : বোরখা বা হিজাব হল মুসলিম মেয়েদের ধর্মীয় পোশাক । পর পুরুষের নজর থেকে নিজেদের চেহারা লুকিয়ে রাখতে মুসলিম মেয়েরা সাধারণত বোরখা পরে থাকেন । কিন্তু এর কিছু কুফলও লক্ষ্য করা যায় । এই বোরখাকেই হাতিয়ার করে সন্ত্রাসবাদীরা কখনো কখনো নাশকতা চালায় । আবার পরীক্ষার হলেও কোনো কোনো পরীক্ষার্থীকে টুকলির জন্য বোরখার সুবিধাকে কাজে লাগাতে দেখা যায় । বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় বোরখার সদব্যবহার করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে গেল এক পরীক্ষার্থী । রিনা আক্তার নামে ওই পরীক্ষার্থী ও তার সহযোগী তার ভাই জলিল শেখকে গ্রেফতার করে ভ্রাম্যমাণ আদালত । ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর ডিগ্রি কলেজের পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে তাদের আটক করা হয়।
জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে সকাল ১০টায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ-২০২৩ পরীক্ষা শুরু হয়। পরীক্ষা শুরুর আধা ঘণ্টা পার হলেও ১০১ নম্বর ঘরে থাকা পরীক্ষার্থী রিনা আক্তার উত্তরপত্রে কিছু না লিখে বসে অপেক্ষা করছিলেন। এটি দেখেই সন্দেহ জাগে দায়িত্বরত কেন্দ্র পরিদর্শকের। তিনি বিষয়টি কলেজের অধ্যক্ষকে জানালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে খবর দেওয়া হয়। পরে তল্লাশি চালিয়ে ওই পরীক্ষার্থীর কানের ভেতর থেকে ছোট একটি ওয়্যারলেস অডিও ডিভাইস এবং তার সঙ্গে থাকা সিমের আকৃতির ও এটিএম কার্ড সদৃশ একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস উদ্ধার করা হয়। পরে পরীক্ষার্থীর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পরীক্ষার হলের বাইরে অপেক্ষারত তার ভাই জলিলকেও আটক করা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সেলিম শেখ বলেন, ‘আমরা পরীক্ষাকেন্দ্রের ঘরে ঢুকে বোরকা ও হিজাব পরিহিত ওই পরীক্ষার্থীর কান তল্লাশির কথা বললে সে আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে রূঢ় আচরণ করে। এরপর মহিলা পুলিশ সদস্যদের দিয়ে তল্লাশি চালিয়ে তার কান থেকে খুবই ছোট আকারের একটি ওয়্যারলেস অডিও ডিভাইস উদ্ধার করা হয়। একইসঙ্গে তার কাছ থেকে সিম সম্বলিত এটিএম কার্ড সদৃশ একটি ডিভাইস উদ্ধার করা হয়।’
আটক রিনা ও জলিল সম্পর্কে আপন ভাই-বোন। তারা বিজয়নগর উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের টুকচানপুর গ্রামের আব্দুল মালেকের সন্তান। আটকের পর তাদের বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় মামলা করা হয়েছে। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন ইউএনও। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) মোহাম্মদ সেলিম শেখ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ‘আটকের পর রিনা জানিয়েছে তার ভাইয়ের এক বন্ধুর কাছ থেকে তারা বিশেষ এই ডিভাইস সংগ্রহ করেছেন। এটি একটি চক্রের কাজ। মামলার মাধ্যমে এই চক্রটির সঙ্গে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করা হবে।’।