এইদিন ওয়েবডেস্ক,হুগলী,০৮ জুন : সন্ধ্যা হলে বাড়িতে ঘটছে বিভিন্ন প্রকার ‘ভৌতিক ঘটনা” । তার জেরে আতঙ্কে বিগত ৫ মাস ধরে বাড়ি ছাড়া গোটা পরিবার । সম্প্রতি সাহস করে ফের নিজের বাড়িতে ফিরে আসেন হুগলী জেলার বলাগড় থানার কূলেপাড়ার বাসিন্দা নিমাই ধাড়ার পরিবারের লোকজন । কিন্তু ফের শুরু হয় “ভুতুড়ে উপদ্রব” । তাই বাধ্য হয়ে ফের সপরিবারে বাড়ি ছেড়ে আত্মীয় বাড়িরে আশ্রয় নেওয়ার জন্য মনস্থির করেছিলেন নিমাইবাবুরা । এই খবর কানে যেতেই ওই পরিবারের পাশে দাঁড়াতে মঙ্গলবার “ভুতুড়ে বাড়ি” পরিদর্শনে এলেন বলাগড়ের বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী । তিনি ওই পরিবারকে বাড়ি না ছেড়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন । পাশাপাশি এবিষয়ে পুলিশি তদন্তের দাবি জানান বিধায়ক ।
কূলেপাড়ার বাসিন্দা পেশায় চাষি নিমাই ধাড়ার বাড়িতে রয়েছেন বাবা,মা, ভাই জগবন্ধু ধাড়া,স্ত্রী রুবীদেবী,এক মেয়ে ও বছর দুয়েকের এক পুত্র সন্তান । নিমাইবাবুদের দুটি পাকা ঘর ও তার পাশে ইঁটের দেওয়াল টালির ছাউনি দেওয়া আরও দুটি ঘর রয়েছে ।
জগবন্ধু ধাড়া বলেন, ‘গত ৩ বছর ধরে আমাদের বাড়িতে বিভিন্ন রকম ভৌতিক ঘটনা ঘটছে । কখনও পোশাক পরিচ্ছদ বা বাড়ির আসবাবে হঠাৎ করে আগুন ধরে যাচ্ছে । কখনও জামাকাপড়,গয়না উধাও হয়ে যাচ্ছে । বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছি । পুলিশ তদন্তও করে গেছে । পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল বাড়িঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে রাখতে । পুলিশের অনুমান কোনও প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে আগুন ধরছে । কিন্তু পুলিশের কথামত বাড়িঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করেও কিছু লাভ হয়নি ।’
জগবন্ধুবাবুর কথায় ‘এইসব দেখে শুনে আমরা আতঙ্কে বাড়ি ছেড়ে ভিন জেলায় আত্মীয় বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলাম । টানা ৫ মাস বাড়ি ছাড়া ছিলাম । দিন কয়েক আগে বাড়ি ফিরে আসি । কিন্তু আমরা বাড়ি ফিরতেই ফের “উৎপাত” শুরু হয়ে গেছে ।’
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে,নিমাইবাবুদের বাড়ির ছাদে ওঠার জন্য পাকা সিড়ি রয়েছে । সিড়িতে কিছু মালপত্র রাখা ছিল । রবিবার সন্ধ্যায় আচমকা সেখানে আগুন ধরে দাউদাউ করে জ্বলতে শুরু করে । বাড়ির লোকজন জল ঢেলে আগুন নেভায় । কিন্তু এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিবারের লোকজনের মধ্যে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে । ফলে ফের তাঁরা বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার পরিকল্পনা শুরু করে দেন । এই খবর কানে যেতেই এদিন নিমাইবাবুদের আশ্বস্ত করতে তাঁদের বাড়ি পরিদর্শনে আসেন বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী । তিনি বাড়ির সব ঘর ঘুরে খুঁটিয়ে দেখেন । বাড়ির লোকজনদের সঙ্গে অনেকক্ষন ধরে কথাবার্তা বলেন । জানা গেছে, ভয় কাটাতে বাড়ির একটি ঘরে নিজে রাত্রিবাস করে দেখবেন বলে জানান বিধায়ক ।
বিধায়ক বলেন, ‘ওরা ৫ মাস ছিল না তখন কিছু হয়নি । আর ওরা আসতেই ঘরের জিনিসপত্রে আগুন ধরে গেল ! তার মানে কেউ এটা করছে । পরিকল্পিতভাবে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে কেউ । এনিয়ে পুলিশ যদি ঠিকঠাক তদন্ত করে তাহলে আসল সত্য সামনে আসবে । তখন বুঝে যাবে আতঙ্ক ছড়ানোর পরিনতি কি হয় ।’।