এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৮ মার্চ : লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে তৃণমূলের প্রার্থী তথা আইনজীবী কল্যাণ ব্যানার্জির একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় । ভিডিওতে এক মহিলা সাংবাদিকের উদ্দেশ্যে তাকে অন্তত অত্যন্ত চড়া গলায় ধমক দিতে শোনা গেছে । ভিডিওটি এক্স হ্যান্ডেল এ শেয়ার করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় আইটি ইনচার্জ অমিত মালব্য । তিনি লিখেছেন,’টিএমসি সাংসদ মহুয়া মৈত্র বাংলায় সাংবাদিকদের গালাগালি করার পরে, এখন কল্যাণ ব্যানার্জীর পালা, নোংরা মুখের সাংসদ, যিনি ভিপিকে উপহাস করেছিলেন, সাংবাদিকদের উপর অশ্লীলতা ছুড়ে দেওয়ার জন্য, যারা নিছক তাদের কাজ করছিলেন । গণমাধ্যমের স্বাধীনতা পশ্চিমবঙ্গে মরীচিকা। তৃণমূলের কারও প্রতি শ্রদ্ধা নেই!’
কোন এক সাংবাদিক গোপনভাবে ভিডিওটি রেকর্ড করেন । ভিডিওতে এক মহিলা সাংবাদিক কল্যাণ ব্যানার্জির উদ্দেশ্যে বলেন,’আমি তো শুধু জিজ্ঞাসা করতে চেয়েছিলাম লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে কি ভাবছেন । এই সংক্রান্ত বিষয়ে আমি প্রশ্ন করতে চেয়েছিলাম ।’ তখন কল্যাণ ব্যানার্জিকে বলতে শোনা গেছে, ‘আমি তাহলে আর দলীয় মিটিং করব না,কেবল প্রেসের সঙ্গে মিটিং করব । এই বলে দাও, এবার থেকে আমি প্রেসের লোকদেরই খালি মিট করব।’
এরপর সাংবাদিক কিছু বলার চেষ্টা করেন । কিন্তু কল্যাণ ম্যানেজই তাকে থামিয়ে দিয়ে বলতে শুরু করেন,’আমি এতক্ষণ বসে রইলাম আপনারা কেউ এলেন না ।’ মহিলা সাংবাদিক বলেন, ‘স্যার,আমি অনেকক্ষণ এসেছি ।’
এরপর কল্যাণ ব্যানার্জি আঙুল তুলে চড়া গলায় বুম হাতে ধরে থাকা ওই মহিলার সাংবাদিককে বলেন,’ডাজ নট ম্যাটার । ডন্ট শো(বুম) । ডোন্ট টেল মি দিস ওয়ে । আপনি অনেকক্ষণ এসেছেন বলছেন অথচ আমি বসে আছি । আমি মিটিং করতে ঢুকছি আর আপনি ঘরে ঢুকে যাচ্ছেন । আপনি কি ভাবেন আমাকে বলুন তো ? কি ভাবেন? কি স্ট্যান্ডার্ড-এর ভাবেন ? ‘ সেই সময় হলুদ জামা পড়া কল্যাণ ব্যানার্জীর এক সঙ্গী সাংবাদিকের ক্যামেরাটি জোর করে বন্ধ করান ।
বিষয়টি নিয়ে শুধু অমিত মালব্যই নয়, বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন । তিনি নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পেজে লিখেছেন, ‘একজন মহিলা সাংবাদিকের প্রতি সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জির আচরণ দেখুন! অভব্য, অশোভন আচরণের সীমা তিনি পার করে ফেললেন। এই রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রীই কি একমাত্র মহিলা? এই সাংবাদিক কি মহিলা নন? নাকি তাঁর অপমানটা অপমান নয় কোনটা? অথচ এটা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কোনও বক্তব্য নেই, কোথাও কোনও হইচই নেই। সাংবাদিকের অপমানের পর মিডিয়াতেও বিষয়টি সেভাবে উঠে এল না। শাসক দলের প্রতিনিধি বলে সব অপরাধ মাফ? নাকি তখন অপরাধগুলো লঘু হয়ে যায়। কোনটা?’ তবে ঘটনাটি কবে ঘটেছে জানা যায়নি এবং ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেন এইদিন ।
প্রসঙ্গত, গত বছর রাজ্যসভা থেকে শতাধিক সাংসদকে সাসপেন্ড করে দিয়েছিলেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড় । তারই প্রতিবাদে সংসদ ভবনের মকর দ্বারের বাইরে বিক্ষোভ দেখায় বহিষ্কৃত সাংসদরা । আর তখনই জগদীপ ধনখড়কে অবিকল নকল ভাঁড়ামো করতে শুরু করেন কল্যাণ ব্যানার্জি । তখন কল্যাণ ব্যানার্জীর ওই ভাঁড়ামোর ভিডিও রেকর্ড করতে দেখা যায় কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধিকে । যা ঘিরে নিন্দার ঝড় উঠে দেশজুড়ে । কল্যাণ ব্যানার্জীর এই প্রকার কদর্য আচরণের তীব্র নিন্দা করে জগদীপ ধনখড় বলেছিলেন, ‘এই ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। বিরক্তিকর এবং লজ্জাজনক। সব কিছুর একটা লিমিট থাকা উচিত। একজন সিনিয়র সাংসদ মিমিক্রি করছেন এবং অপর একজন সেটির ভিডিয়ো করছেন, এটি দুর্ভাগ্যজনক।’।
ছবি : কল্যাণ ব্যানার্জীর ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া ।