প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৭ মার্চ : নিজের দল সহ চতুর দিক থেকে সমালোচিত হয়ে শেষ পর্যন্ত মাথা নোয়ালেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ । বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে অসংসদীয় মন্তব্য করার জন্য তিনি ’দুঃখ প্রকাশ’ করলেন। বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ বুধবার বর্ধমানের টাউনহলে প্রাতভ্রমণে বের হন। তখনই তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন,’আমার বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক প্রথমবার নয়।আমি, যে ভনিতা করে, অন্যায় করে ,তা সামনে বলি। এবারে আমি যে বক্তব্য রেখেছি,মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী যার সাথে আমার ব্যক্তিগত ঝগড়া নেই।কোনো ক্লেশ নেই।ক্লেদ নেই।দুর্ভাবনাও নেই।উনি যে রাজনৈতিক বক্তব্য বারবার রেখেছেন তা মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে।আমি তার প্রতিবাদ করেছি।আমার ভাষা শব্দ প্রয়োগ নিয়ে বহুলোকের আপত্তি আছে। আমার পার্টিও বলেছে । অন্যরাও বলেছে অসংসদীয়।যদি তাই হয়, আমি দুঃখপ্রকাশ করছি।’
এ নিয়ে রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন,’দেরীতে হলেও বাংলার মেয়েদের সম্মান সম্পর্কে তিনি সচেতন হয়েছেন, তা ভালো ।’ তবে মুখপাত্র যাই বলুন না কেন, তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী কীর্তি আজাদ অবশ্য বেশ চড়া সুরেই এদিন দিলীপ ঘোষকে সমঝে যাওয়ার বার্তা দিয়ে রাখেন । তিনি বলেন,’মহিলাদের বিরুদ্ধে কুমন্তব্য করায় তাঁর বিরুদ্ধে এফ আই আর করা হবে। মা দুর্গা থেকে মমতা দিদির বিরুদ্ধে বাজে মন্তব্য করেছে। এ সব ঠিক নয় ।’ একই সাথে কীর্তি আজাদ এদিন বিজেপিকে উদ্দেশ্য করে
হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন,’বিজেপির গুন্ডামি চলবে না। দিলীপ ঘোষ উত্তেজিত করছে। এ রকম ভাবে গুন্ডামি করলে, আমরাও শান্ত থাকব না। শুয়ে থাকা বাঘকে বিরক্ত করা ঠিক নয়।আমরা চাইছি, সব কিছু শান্তিতে হোক, ভালভাবে ভোট হোক। বিজেপি ও দিলীপ ঘোষ উল্টোপাল্টা বক্তব্য রাখছে। আমাডের কর্মীকে মারছে, এ সব ঠিক নয়। এ সব সহ্য করব না।বিজেপি শ্রীরামের নাম বদনাম করছে ।’
এদিকে এতকিছুর মধ্যেও মচকালে ভাঙতে চাননি দিলীপ ঘোষ। দুঃখ প্রকাশ করেই পল্টা প্রশ্ন সামনে এনে তিনি বলেন,’ তারই (মুখ্যমন্ত্রীর) পার্টির এক নেতা, তার (মুখ্যমন্ত্রীর)পরিবারের লোক কাঁথিতে গিয়ে আমার বিধায়কদলের নেতার নামে, তার বাবার নামে খারাপ খারাপ শব্দ বলবে। কেন আমার দলের নেতার কী মানসম্মান নেই?তার বাবা একজন প্রবীণ নেতা। তার একটা সম্মান আছে। সে ব্যাপারে তৃণমূল থেকে কেউ তো কিছু বলে না !এই ধরণের কথা কারা শুরু করেছে? রোজ বাপ বাপান্ত করা হচ্ছে।শুভেন্দু অধিকারী পুরুষ বলে। তার সম্মান নেই?কথায় কথায় মহিলা কার্ড ব্যবহার করা হবে। আমি তার প্রতিবাদ করেছিলাম।দল বা যে কেউ অফিসিয়াল চিঠি করেছে,তার অফিসিয়াল উত্তর আমি দেব।
দিলীপ ঘোষ এদিন তাঁর প্রতিক্রিয়ায় আরো বলেন,তৃণমূল কংগ্রেসের সমস্যা কৃষ্ণনগরে প্রার্থী নিয়ে। আজ ওদের বাইরে থেকে প্রার্থী আনতে হচ্ছে। সংসদে উল্টোপাল্টা কথা বলা একজন দাগীকে ,বহিস্কৃতকে প্রার্থী করা হয়েছে। আমরা একজন রাজ পরিবারের সদস্যকে সামনে রেখেছি। এখন ওখানকার মানুষের দায়িত্ব বিচার করা’।তবে নিজের জয়ের ব্যাপারে দিলীপ ঘোষ যে বেশ আত্মপ্রত্যয়ী তা তিনি চেপে রাখেন নি । এদিন তিনি বলেন,’হাওয়া যে ভাবে ঘুরছে তাতেই বোঝা যাচ্ছে ভোটের ফলাফল কি হবে ।’
রদ্রনীল ঘোষ সম্পর্কে বলেন, অনেকেই দলে এসেছেন। অনেকে দাঁড়াতে চান। এ নিয়ে দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমার কিছু বলার নেই।বারাসত কেন্দ্রে বিক্ষোভ নিয়ে তিনি বলেন, এটা অনেক সময় হয়ে থাকে। বসিরহাটে কেন্দ্রেও প্লাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ হয়েছে৷এখন সবাই জিন্দাবাদ বলছে। আমি স্বপনকে চিনি। ও দলের লড়াকু নেতা।বাকিটা পার্টির ব্যাপার।চন্দ্রনাথ সিনহাকে ইডি সিবিআই ডেকেছে।ডাকাডাকি চলতেই থাকবে বলে দিলীপ ঘোষ জানিয়ে দেন।।