এইদিন ওয়েবডেস্ক,২১ মার্চ : মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর স্নেহধন্য জহরলাল নেহেরু প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এমন কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন,আজও যার পরিনাম ভুগতে হয় দেশকে । জহরলালের এমনই কিছু অদূরদর্শীতা কর্মকাণ্ড তুলে ধরা জল ।
কোকো দ্বীপপুঞ্জ : ১৯৫০ সালে, নেহেরু বার্মাকে ভারতের ‘কোকো দ্বীপপুঞ্জ’ (গুগল ম্যাপের অবস্থান 14.100000, 93.365000) উপহার দেন। এই দ্বীপপুঞ্জটি কলকাতা থেকে ৯০০ কিলোমিটার দূরে সমুদ্রে অবস্থিত। পরে বার্মা এই দ্বীপপুঞ্জ চীনকে দিয়েছিল, যেখান থেকে আজ চীন ভারতের উপর নজর রাখে।
কাবু ভ্যালি, মণিপুর : ১৯৫৪ সালের ১৩ জানুয়ারী, নেহেরু ভারতের মণিপুর প্রদেশের কাবু উপত্যকা বার্মাকে বন্ধুত্বের উপহার হিসাবে দিয়েছিলেন। কাবু উপত্যকার আয়তন প্রায় ১১,০০০ বর্গ কিমি এবং বলা হয় যে এটি কাশ্মীরের চেয়েও সুন্দর।আজ বার্মা কাবু উপত্যকার কিছু অংশ চীনকে দিয়েছে। চীনও এখান থেকে ভারতবিরোধী তৎপরতা চালায়।
ভারত-নেপাল একীভূতকরণ : ১৯৫২ সালে, নেপালের তৎকালীন রাজা ত্রিভুবন বিক্রম শাহ নেহরুর কাছে ভারতের সাথে নেপালের একীকরণের প্রস্তাব করেন। কিন্তু নেহেরু এই বলে তাকে বাতিল করে দেন যে এই একীভূতকরণ উভয় দেশের উপকারের চেয়ে ক্ষতির কারণ হবে। শুধু তাই নয়, এর ফলে নেপালের পর্যটনও শেষ হয়ে যাবে। যদিও আসল কারণ ছিল জম্মু ও কাশ্মীরের মতো বিশেষ অধিকারের অধীনে হিন্দু জাতি হিসেবে নিজেদের পরিচয় বজায় রাখতে চেয়েছিল নেপাল, যা নেহরুর কাছে গ্রহণযোগ্য ছিল না।
নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী আসন : ১৯৫৩ সালে আমেরিকা ভারতকে স্থায়ী সদস্য হিসাবে নিরাপত্তা পরিষদে (জাতিসংঘ) যোগ দিতে প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু নেহেরু প্রত্যাখ্যান করেছিলেন । এর পরিবর্তে নেহেরু চীনকে নিরাপত্তা পরিষদে অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেন। চীন আজ পাকিস্তানি সন্ত্রাসীদের বাঁচাতে ভেটো প্রয়োগ করে ভারতকে বারবার বিড়ম্বনায় ফেলছে । সম্প্রতি, সন্ত্রাসী মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী ঘোষণার ভারতীয় প্রস্তাবে কয়েকবার ভেটো দিয়েছে চীন । এছাড়া আজ নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের অন্তর্ভুক্তির সবচেয়ে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে চীন ।
জওহরলাল নেহেরু এবং লেডি মাউন্টব্যাটেন সম্পর্ক : লেডি মাউন্টব্যাটেনের মেয়ে পামেলা তার বইয়ে লিখেছেন যে নেহেরু এবং লেডি মাউন্টব্যাটেনের মধ্যে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিল। লর্ড মাউন্টব্যাটেনও তাদের দুজনকে একা রেখে যান। লোকেরা বিশ্বাস করে যে, লর্ড মাউন্টব্যাটেন তার স্ত্রীকে ব্যবহার করে জওহরলাল নেহেরুকে অনেক রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছিলেন, যার মধ্যে কাশ্মীরে যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত এবং জাতিসংঘের হস্তক্ষেপও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
পঞ্চশীল চুক্তি : নেহেরু চীনের সঙ্গে বন্ধুত্বে অত্যন্ত আগ্রহী ছিলেন। ১৯৫৪ সালে তিনি চীনের সাথে পঞ্চশীল চুক্তি স্বাক্ষর করেন এবং তিব্বতকে চীনের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেন। ১৯৬২ সালে এই একই চীন ভারত আক্রমণ করে এবং এই তিব্বত থেকে চীনা সেনাবাহিনী ভারতীয় সীমান্তে প্রবেশ করে।
১৯৬২ ভারত-চীন যুদ্ধ : ১৯৬২ সালে চীনা সেনাবাহিনী ভারতকে পরাজিত করে। পরাজয়ের কারণ খুঁজে বের করার জন্য ভারত সরকার পদক্ষেপ নেয়। জেনারেল হেন্ডারসন এবং কমান্ড্যান্ট ব্রিগেডিয়ার ভগতের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়। তাদের প্রতিবেদনে, উভয় কর্মকর্তাই পরাজয়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুকে দায়ী করেছিলেন।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অরুণাচল প্রদেশ, আসাম ও সিকিমে যখন চীনা সেনাবাহিনী প্রবেশ করেছিল, তখনও হিন্দি চিনি ভাই ভাই স্লোগান তুলে নেহেরু ভারতীয় সেনাবাহিনীকে চীনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া থেকে বিরত রাখেন। ফলস্বরূপ, চীন আমাদের কাশ্মীরের প্রায় ১৪,০০০ বর্গ কিলোমিটার দখল করে নেয়। এর মধ্যে রয়েছে কৈলাস পর্বত, মানস সরোবর এবং অন্যান্য তীর্থস্থান ।।