সঞ্জয় মণ্ডল,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),১৮ মার্চ : পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতারে যেকটি প্রাচীন স্কুল আছে তার মধ্যে বলগোনা অঞ্চলের কসিগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয় অন্যতম । স্কুলটি ১৯৪০ সালে স্থাপিত হয় । তারপর থেকে এযাবৎ স্কুলে সীমানা প্রাচীর নির্মান হয়নি । নিয়মিত সংস্কার হয়না স্কুল ভবনেরও । স্কুলের ঠিক পাশ দিয়েই চলে গেছে ক্যানেল । পাশেই রয়েছে সড়ক পথ । সীমানা প্রাচীর না থাকায় ক্যানেলের পাড়ে বা রাস্তায় খেলা করতে চলে যায় কচিকাঁচারা । ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় সর্বদা আতঙ্কিত থাকেন অবিভাবকরা । এদিকে সীমানা প্রাচীর না থাকায় পড়ুয়াদের মিডডে মিল খাওয়ার সময় দাপিয়ে বেড়ায় পথ কুকুরের দল । ফলে কুকুরের আক্রমণে পড়ুয়ারা যাতে জখম না হয় সেদিকে সর্বদা সতর্ক নজর রাখতে হয় স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের । বিষয়টি বিভিন্ন মহলে তদ্বির করেও কোনো সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ । এনিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এলাকায় । স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি যে অবিলম্বে স্কুলের সীমানা প্রাচীর নির্মান করে দেওয়া হোক এবং স্কুল ভবনের সংস্কারের ব্যবস্থা করে দেওয়া হোক ।
বলগোনা অঞ্চলের প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত কসিগ্রাম । প্রত্যন্ত এলাকায়একমাত্র স্কুল হওয়ায় এলাকার শিশুদের পড়াশোনার জন্য কসিগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উপরেই নির্ভর করতে হয় অবিভাবকদের । এলাকার শতাধিক শিশু এই স্কুলে পড়াশোনা করে ।
স্থানীয় গৃহবধূ রিয়া রায় ,মধুমিতা ঘোষরা বলেন, ‘যেদিন থেকে এই স্কুলে আমাদের সন্তানকে ভর্তি করেছি সেদিন থেকেই বিদ্যালয়ের বেহাল দশা দেখে আসছি । বিশেষ করে স্কুলে সীমানা প্রাচীর না থাকায় এবং পথ কুকুরদের অবাধ বিচরণ ক্ষেত্র হওয়ায় আমরা সর্বদা চরম আতঙ্কের মধ্যে থাকি । এই বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অনেকবার জানানো হয়েছে কিন্তু স্কুলের সীমানা প্রাচীর আর নির্মান হয়নি ।’
স্কুলের মিডডে মিলের রান্নার কাজ করা তপতী ঘোষ, আশালতা রায়রা বলেন,’ বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর না থাকায় রান্না করা এবং পড়ুয়াদের খাওয়ার পথ কুকুরদের উৎপাত শুরু হয় । খাওয়ার সময় কুকুরের দলকে তাড়িয়ে দিয়ে তবেই শিশুদের খাবার পরিবেশন করতে হয় । এছাড়া দীর্ঘ দিন স্কুল ভবনের সংস্কার না হওয়ায় ভবনের একাংশ ভগ্নপ্রায় হয়ে পড়েছে । যেকারণে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও সর্বদা থেকে যায় ৷’
জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে শ্রেণীকক্ষের একাংশের সংস্কারের কাজ করা হয়েছিল । কিন্তু স্কুল ভবনের বয়স অর্ধ শতাব্দী হয়ে যাওয়ায় কোথাও কোথাও নোনা ধরে বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে । বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা সোনালী হালদার বলেন,’দীর্ঘদিন ধরেই আমরা এই সমস্যায় ভুগছি । এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত আবেদন জানানো হয়েছে। আমাদের আশা যে দ্রুত আমাদের দাবিপূরণ হবে ।’
বিদ্যালয়ের পরিচালন কমিটির সদস্য সৌমেন ঘোষ বিষয়টি স্বীকার করে বলেন,’স্কুলের পাশেই রাস্তা রয়েছে, সেখানে শিশুরা খেলতে চলে যায় । কাছেই ক্যানেল থাকায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা তো থেকেই যাচ্ছে । স্কুলের সীমানা প্রাচীর নির্মানের জন্য ব্লক প্রশাসনের পাশাপাশি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে ।’।