এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),১৬ মার্চ : মঙ্গলকোটে তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল নেতা ডালিম শেখ ওরফে সানাউল্লা শেখকে খুনের মামলায় জেলবন্দি ২৫ জনকে বেকসুর খালাস করে দিল কাটোয়া অতিরিক্ত দ্বিতীয় দায়রা আদালত । মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন জেলাপরিষদ সদস্য বিকাশনারায়ণ চৌধুরীও । আজ এই রায় ঘোষণা করেন বিচারক মধূছন্দা বোস ।
ডালিম শেখকে খুনের ঘটনা ঘটে ২০১৭ সালের ১৯ জুন সন্ধ্যায় । সেই সময় মঙ্গলকোটের নিগন বাসস্ট্যান্ডে একটি দোকানে বসে গল্পগুজব করছিলেন ডালিম শেখ । সেই সময় বাইক আরোহী দুষ্কৃতীরা এসে পয়েন্ট ব্লাঙ্ক রেঞ্জ থেকে তার মাথায় গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায় । ডালিম শেখকে তড়িঘড়ি বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় । কিন্তু চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন । খুনের ঘটনার পরের দিন মৃতের দাদা আসানুল্লা শেখ মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে মঙ্গলকোট থানায় এফআইআর দায়ের করেন । অভিযুক্তদের তালিকায় ছিলেন মূলত রাজ্যের পাঠাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী চৌধুরীর ভাই রহমতুল্লা চৌধুরী, বিকাশনারায়ণ চৌধুরী সহ সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী গোষ্ঠীর লোকজন । প্রথমে পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও পরে মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লার ইচ্ছাতে ২০১৭ সালের ৩ জুলাই সিআইডি তদন্তভার হাতে নেয় । অভিযুক্তের তালিকায় সিআইডি আরও কিছু নাম যুক্ত করে । বিকাশনারায়ণ চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে সিআইডি । ওই বছর ১৪ সেপ্টেম্বর আদালতে চার্জশীট দাখিল করে সিআইডি । এই খুনের মামলায় মোট ৩৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয় । কিন্তু আজ জেলবন্দি ২৫ জনকে বেকসুর খালাস করে দিল আদালত ।
দলীয় নেতাকে খুনের মামলায় জেলের সাজা কাটানো বিকাশনারায়ণ চৌধুরীর কথায়,’দলেরই একাংশের চক্রান্তের শিকার হয়েছিলাম। অবশেষে সত্যের জয় হল।’
প্রসঙ্গত,ডালিম শেখ খুনের সময়ে মঙ্গলকোটে তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে ব্যাপক গোষ্ঠী কোন্দল মাথাচাড়া দিয়েছিল । সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী গোষ্ঠীর সঙ্গে অনুব্রত মণ্ডল ঘনিষ্ঠ অপূর্ব চৌধুরী গোষ্ঠীর মধ্যে তীব্র সংঘাত চলছিল তখন । নিহতের দাদা শিমুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা আসানুল্লা শেখ পুলিশের কাছে দাবি করেন যে তার ভাইকে খুনের আগের দিন শিমুলিয়া গ্রামে একটি গোপন সভা করেছিলেন রহমতুল্লা এবং বিকাশনারায়ণ চৌধুরীরা । সেই সভাতেই তার ভাই ডালিম শেখকে খুনের পরিকল্পনা করা হয় । যদিও এদিন রায় ঘোষণার পর অভিযোগকারীর তরফ থেকে কোনো মতামত পাওয়া যায়নি ।।