আরে চ্যাটার্জী বাবু কোথায় যাচ্ছেন সন্ধ্যে বেলায়? ওদিকটায় যাবেন না, ওই পোড়ো বাড়িটার সামনে একটা বেল গাছে ব্রহ্ম দৈত্য আছে।
-কে কে আপনি? আপনাকে তো দেখিনি এদিকে !
-দেখবেন কি করে, আমি ত এখানে বেশি দিন থাকি না, মাঝে মাঝে আসি আবার চলে যাই।
-আপনি কি করে জানলেন ব্রহ্ম দৈত্য আছে? আর ব্রহ্ম দৈত্য কি কেউ কোন দিন দেখেছেন? না শুনেছেন?
-জানি জানি আমার কথা শুনলে আপনিও বিশ্বাস করবেন। চলুন মশাই, ওই পুকুর পাড়টায় বসি। আপনাকে পুরো কাহিনীটা শোনাবো।
-আপনাকে চিনি না জানিনা কখন দেখিনি আমাকে কেন ডাকছেন কাহিনী শোনানোর জন্য? আমিই বা যাব কেন? বলুন তো?
-আসবেন আসবেন আসতেই হবে। ওই কাহিনীর টান এমন, কেউ না এসে পারে না !
-আপনি আমার নাম জানলেন কি করে বলুন ত?
-জানতে হয়, ওটাই আমাদের নিয়ম !
-তাই বুঝি?
- হ্যাঁ তাই.
ভদ্রলোক একটু বেশি কথা বলছেন না ! মনে মনে ভাবি।
-ও আপনি ভাবছেন আপনাকে কেন ডাকছি? চিন্তা করবেন না, আমি চোর ডাকাত নই, আপনার মতন এক সাধারণ মানুষ, আমারও স্ত্রী-পুত্র-পরিবার ছিল। এখন অবশ্য আমি একা। তাই লোক দেখলেই তাকে আপন করার ছুতো খুঁজি।
-ছুতো খোঁজেন মানে !
-এই দেখ সব কথা ওরকম টেরাবেঁকা করে দেখলে চলে।মানুষকে বিশ্বাস করতে হয়।
আমার সংসারে আমি আর আমার স্ত্রী, আমাদের এক পুত্র সন্তান। সে থাকে সুদুর আমেরিকায়। তাই আমি আর আমার ‘বেটার হাফ’ থাকি। দিনের মধ্যে দু’একটা কথা ছাড়া কথা বলার লোকের অভাব। ওই খেতে দেওয়ার সময় আর ওষুধ খাওয়ানোর সময় ছাড়া আমাদের মধ্যে বড় একটা কথা বার্তা হয়না।
এর মধ্যে আমার একটা স্ট্রোক হয়ে গেল। মরে যেতাম, তবে বেঁচে গেলাম। ডাক্তার বাবু এঞ্জিওগ্রাফি করে বাঁচালেন। এ যাত্রায় যম নিতে পারলনা। তবে চিত্রগুপ্তর খাতা দেখে যম বলেন তোর মৃত্যু অনিবার্য!
ঠিক তাই হল। পরের স্ট্রোকে খতম। এখন দিব্বি ঘুরে বেড়াচ্ছি। লোকের সঙ্গে কথা বলছি।
ও চ্যাটার্জী বাবু আপনার কি হল?
আর চ্যটার্জি বাবু !!!! ভূত ভূত বলে ওইখানেই জ্ঞান হারালেন.
কি মুস্কিল ! আমি কি ভূত নাকি?