এইদিন ওয়েবডেস্ক,মঙ্গলকোট(পূর্ব বর্ধমান), ১৪ মার্চ : উত্তর ২৪ জেলার সন্দেশখালি ইস্যুতে এমনিতে রাজ্য পুলিশের যথেষ্ট বদনাম হয়েছে । তারই মাঝে পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট থানার এক পুলিশকর্মীর ‘দাদাগিরি’ ঘিরে শোড়গোল পড়ে গেছে এলাকায় । ওই পুলিশ কর্মীকে “স্যার” না বলে “দাদা” বলার অপরাধে মঙ্গলকোটের কৃষ্ণবাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক নরোত্তম বিশ্বাসের জামার কলার ধরে চড় থাপ্পর মারার অভিযোগ উঠেছে । ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায় । এই দৃশ্য দেখার পর স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র ও স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশকে ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে । বিক্ষোভের জেরে ঘটনাস্থল নিগন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বর্ধমান- কাটোয়া রাজ্য সড়কপথে বেশ কিছুক্ষণ যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় । শেষে মঙ্গলকোট থানার আইসি মধূসুদন ঘোষ গিয়ে ঘটনাটি খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় । যদিও এনিয়ে থানায় নির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ দায়ের করা হয়নি বলে জানা গেছে ।
মঙ্গলকোটের নিগন বাসস্ট্যান্ডের কিছুটা পাশেই রয়েছে কৃষ্ণবাটি উচ্চ বিদ্যালয় । নরোত্তম বিশ্বাস সহ কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষিকা বর্ধমান থেকে যাতায়াত করেন । বর্ধমান থেকে ট্রেন ধরে ভাতারের বলগোনা স্টেশনে নামার পর তারা একটি ভাড়া করা মারুতিতে চড়ে স্কুলে যান । স্কুলে যাওয়ার আগে নিগন বাসস্ট্যান্ডে দোকান থেকে টিফিন কিনে নিয়ে যান তারা । এটাই তাঁদের রোজকার রুটিন ।
প্রহৃত শিক্ষক নরোত্তম বিশ্বাস বলেন, ‘প্রতিদিনের মত আজও আমরা বাসস্ট্যান্ডে রাস্তার একপাশে মারুতি দাঁড় করিয়ে দোকানে টিফিন কিনতে গিয়েছিলাম । সেই সময় কয়েকজন পুলিশ ও সিভিক ভলেন্টিয়ার বাসস্ট্যান্ডে ডিউটি করছিলেন । তখন এক পুলিশ আধিকারিক এসে মারুতিটি তৎক্ষণাৎ সেখান থেকে সরাতে বলেন ।চালক মারুতিটি সরিয়েও নিয়ে যান । দোকানে ভিড় থাকায় আমার টিফিন নিতে একটু দেরি হয়েছিল ।’
তিনি বলেন,’আমি দোকান থেকে পরোটা কিনে গাড়িতে চাপার আগে ওই পুলিশ আধিকারিককে শুধু বলেছিলাম,’দাদা , আমরা আসছি’ । একজন পুলিশ আধিকারিককে “স্যার” না বলে “দাদা” বলাটাই ছিল আমার অপরাধ । আর এই অপরাধের জন্য জন্য ওই পুলিশকর্মী এসে আমার জামার কলার ধরে এলোপাথাড়ি চড় থাপ্পর মারতে শুরু করেন ।’
জানা গেছে,মারধরের ঘটনাটি নরোত্তমবাবুর সহশিক্ষক ও এক সহশিক্ষিকাদের নজরে পড়লে তারা সেখানে ছুটে এসে তাঁকে বাঁচান । পাশাপাশি সেখানে প্রচুর লোকজন জড়ো হয়ে যায় । তারা পুলিশ কর্মীদের ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ শুরু করেন । ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায় । খবর পেয়ে মমঙ্গলকোট থানার আইসির পাশাপাশি ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন স্থানীয় বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরীও । শেষে তাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় ।
বিধায়ক ওই পুলিশকর্মীর এই প্রকার আচরণের নিন্দা করে বলেন,’শিক্ষকের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে তা অত্যন্ত অন্যায় । তবে বিষয়টি মিটে গেছে ।’।